সেই আবাসন। শনিবার। —নিজস্ব চিত্র
আবাসনের সুইমিং পুলে সাঁতার শিখতে গিয়ে হঠাৎই টিউব-সহ জলে উল্টে যায় বছর পাঁচেকের শিশুটি। মেয়েকে জলে পড়ে যেতে দেখে সামনেই দাঁড়িয়ে থাকা মা তৎক্ষণাৎ জলে ঝাঁপ দেন। দিন তিনেক আগের এই ঘটনায় সুইমিং পুলের শিক্ষক ও লাইফ গার্ডের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগে দায়ের করেছেন ওই শিশুর মা।
পুলিশ জানিয়েছে, ট্যাংরার ডি সি দে রোডে একটি বহুতল আবাসনের মধ্যেই রয়েছে সুইমিং পুলটি। গত ২৯ মে বিকেল চারটে নাগাদ ওই সুইমিং পুলে মেয়ে স্নেহা চৌধুরীকে নিয়ে সাঁতার শিখতে গিয়েছিলেন অনন্যা চৌধুরী। ট্যাংরা থানায় ডায়েরিতে অনন্যা লিখেছেন, সাঁতারের শিক্ষক ও লাইফ গার্ডের অসতর্কতার জন্য তাঁর মেয়ের মৃত্যুও হতে পারত। মেয়েকে বাঁচাতে তাই তিনি নিজেই জলে ঝাঁপ দিয়েছিলেন। অভিযোগ পেয়ে জয়ন্ত অধিকারী ও বিনোদ তিওয়ারির বিরুদ্ধে মামলা রুজু করেছে পুলিশ। শনিবার ট্যাংরার ওই আবাসনে গেলে নিরাপত্তা আধিকারিক সুভাষ জানা বলেন, ‘‘ঘটনাটি ঘটেছে জানি। এর বেশি কিছু বলতে পারব না।’’ এই ঘটনায় শনিবার রাত পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হননি।
কলেজ স্কোয়ার সুইমিং ক্লাবের সেক্রেটারি গৌতম মল্লিক বলেন, ‘‘কোমরে টিউব বা হাতে ব্যান্ড লাগিয়ে এখন আর সাঁতার শেখানো হয় না। টিউব উল্টে যাওয়ার প্রবণতা থাকে। এ ক্ষেত্রেও হয়তো তা-ই ঘটেছিল।’’ গৌতমের বক্তব্য, এটা সিস্টেমের গন্ডগোল। তবে টিউব উল্টে যাওয়ার পরে ট্রেনারের সঙ্গে সঙ্গে ধরা উচিত ছিল।
অ্যান্ডারসন ক্লাবের কর্মকর্তা শ্যামাপদ ঘরা বলেন, ‘‘দিকে দিকে ব্যাঙের ছাতার মতো পুল হয়েছে। সব জায়গায় পরিকাঠামো ভাল নয়। অবজার্ভার আর লাইফ সেভার থাকলে এমনটা ঘটার কথা নয়।’’ তবে একই সঙ্গে তাঁর বক্তব্য, ‘‘ইদানীং অভিভাবকেরাও অল্পেই উত্তেজিত হয়ে পড়েন। ট্রেনার অনেক সময়ে বাচ্চাদের সহ্যশক্তি পরীক্ষার করেন। অভিভাবকেরা ভাবেন, ট্রেনার হয়তো দেখছেন না।’’
দমদমের একটি ক্লাবের সঙ্গে যুক্ত ট্রেনার এবং বিশিষ্ট সাঁতারু রাজু পণ্ডিতের বক্তব্য, প্রতিটি পুলে লাইফ সেভার থাকা বাধ্যতামূলক। তার পরেও এমন ঘটনা কী ভাবে ঘটল, সেটাই আশ্চর্যের। অভিভাবকদের অতিসক্রিয়তার বিষয়টিও তিনি উড়িয়ে দিচ্ছেন না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy