Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

শিক্ষক নিগ্রহের অভিযোগ মধ্যশিক্ষা পর্ষদের অফিসেই

শিক্ষকের উপরে আক্রমণের ঘটনা চলছেই। সিউড়ির পরে এ বার খোদ সল্টলেকে মধ্যশিক্ষা পর্ষদে। মঙ্গলবার দুপুরে সেখানেই এক শিক্ষক ও তাঁর স্ত্রীকে মারধরের অভিযোগ উঠল। এ দিন মধ্যশিক্ষা পর্ষদের অফিসে মগরাহাটের কলস উচ্চ বিদ্যালয়ের ইংরেজির শিক্ষক সুদীপ্ত কর ও তাঁর স্ত্রীকে প্রায় ১৫-১৬ জন মিলে মারধর করে বলে অভিযোগ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৪ জুন ২০১৫ ০৩:২৬
Share: Save:

শিক্ষকের উপরে আক্রমণের ঘটনা চলছেই। সিউড়ির পরে এ বার খোদ সল্টলেকে মধ্যশিক্ষা পর্ষদে। মঙ্গলবার দুপুরে সেখানেই এক শিক্ষক ও তাঁর স্ত্রীকে মারধরের অভিযোগ উঠল।

এ দিন মধ্যশিক্ষা পর্ষদের অফিসে মগরাহাটের কলস উচ্চ বিদ্যালয়ের ইংরেজির শিক্ষক সুদীপ্ত কর ও তাঁর স্ত্রীকে প্রায় ১৫-১৬ জন মিলে মারধর করে বলে অভিযোগ। বিধাননগর পূর্ব থানায় অভিযোগও দায়ের করেন আক্রান্ত শিক্ষক ও তাঁর স্ত্রী। রাতেই বিধাননগর মহকুমা হাসপাতালে যান সুদীপ্তবাবু। প্রাথমিক চিকিৎসার পরে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

সোমবার সিউড়িতে এক স্কুলশিক্ষককে মারধরের অভিযোগ উঠেছিল স্কুল পরিচালন কমিটির সভাপতি তথা স্থানীয় এক তৃণমূল নেতা ও তাঁর অনুগামীদের বিরুদ্ধে। আক্রান্তের পরিবারের তরফে দাবি, এ দিন মধ্যশিক্ষা পর্ষদের ঘটনার পিছনেও কারণ আক্রান্ত শিক্ষক ও স্কুল কর্তৃপক্ষের মধ্যে গোলমাল।

সূত্রের খবর, সুদীপ্তবাবুকে সাসপেন্ড করেছিলেন তাঁর স্কুল কর্তৃপক্ষ। সেই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তিনি মধ্যশিক্ষা পর্ষদে অভিযোগ জানিয়েছিলেন। মঙ্গলবার তারই শুনানি ছিল মধ্যশিক্ষা পর্ষদের প্রশাসক কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়ের ঘরে। সেখানে সুদীপ্তবাবু ছাড়াও স্কুল কর্তৃপক্ষের তরফে ছিলেন প্রধান শিক্ষক আবু তাহের, স্কুলের পরিচালন কমিটির সভাপতি তথা স্থানীয় তৃণমূল নেতা হায়দর মল্লিক-সহ ওই স্কুলের কয়েক জন শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী।

অভিযোগ, আলোচনা শেষে দু’পক্ষ যখন প্রশাসকের ঘরের বাইরে যান সেখানে হায়দর মল্লিকের সঙ্গে সুদীপ্তবাবুর বচসা শুরু হয়। অভিযোগ, দু’পক্ষকে শান্ত করার বদলে কল্যাণময়বাবু সুদীপ্তবাবুকে অফিস থেকে বেরিয়ে যেতে বলেন। এর পরেই হায়দর মল্লিক প্রায় ১৫-১৬ জনকে নিয়ে সুদীপ্তবাবুকে মারধর করতে থাকেন বলে অভিযোগ। আরও অভিযোগ, বাধা দিতে গেলে তাঁর স্ত্রীকেও ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়া হয়।

সুদীপ্তবাবুর স্ত্রী সুনীতাদেবীর অভিযোগ, বিদ্যালয়ে মিড ডে মিল থেকে শুরু করে বিভিন্ন বিষয়ে দূর্নীতির প্রতিবাদ করায় সুদীপ্তবাবুর সঙ্গে স্কুল কর্তৃপক্ষের গোলমাল শুরু হয়। এর জেরে তাঁকে সাসপেন্ড করা হয়। তাই শিক্ষা দফতরের বিভিন্ন পর্যায়ে অভিযোগ জানিয়েছিলেন তিনি।

এ দিন ঘটনার পরে পুলিশের সামনে হামলাকারীদের চিহ্নিত করে দেন সুদীপ্তবাবুর স্ত্রী। কিন্তু পুলিশ কোনও পদক্ষেপ করেনি বলে তাঁদের অভিযোগ। যদিও পুলিশ অভিযোগ অস্বীকার করেছে। মারধরের ঘটনা অস্বীকার করেছেন কল্যাণময়বাবুও। তিনি জানান, হইচই শুনে তিনি নিজের ঘরের বাইরে গিয়ে দেখেন, ওই স্কুলের সভাপতির সঙ্গে সুদীপ্তবাবুর গোলমাল চলছে। তখন তিনি সকলকে অফিস থেকে বেরিয়ে যেতে বলেন। তাঁর অভিযোগ, সুদীপ্তবাবু রাজি হননি। এর পরে কল্যাণময়বাবু পুলিশে জানান। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। যদিও তাঁর দাবি, মারধরের ঘটনা তাঁর সামনে ঘটেনি।

স্কুল পরিচালন কমিটির সভাপতি হায়দরের পাল্টা দাবি, তাঁরা কোনও মারধর করেনি বরং সুদীপ্তবাবুই তাঁকে মারধর করেছেন। তাঁর আরও দাবি, তিনি সভাপতি হওয়ার আগেই সুদীপ্তবাবুকে সাসপেন্ড করা হয়েছিল। অথচ তাঁকে কেন আক্রমণ করা হল তা তিনি বুঝতে পারছেন না।

এই দাবি উড়িয়ে আক্রান্ত শিক্ষক ও তাঁর স্ত্রীর দাবি, তাঁদের মারধরের ঘটনা ঘটার পরে প্রথমে মিডিয়া আসে, তারও পরে পুলিশ। সুনীতাদেবী বলেন, ‘‘শিক্ষা দফতরে গিয়েই যদি এমন গুণ্ডামির মুখোমুখি হতে হয়, তবে নিরাপত্তা কোথায় পাব?’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE