সেক্স রিঅ্যাসাইনমেন্ট সার্জারি (এসআরএস) করার পরে এসএসকেএম হাসপাতালের পরিষেবায় খামতি নিয়ে অভিযোগ তুললেন এক রূপান্তরিত মহিলা। তাঁর অভিযোগ, ভ্যাজাইনোপ্লাস্টি করানোর পরে যে ধরনের যত্ন বা পরিষেবা পাওয়া প্রয়োজন, তা ওই হাসপাতালে মেলেনি। পরে হাসপাতালের সুপারকে লিখিত অভিযোগ জানালে বৃহস্পতিবার থেকে তিনি পরিষেবা পেতে শুরু করেছেন বলে জানা গিয়েছে। কিন্তু কেন প্রথম থেকেই এই পরিষেবা দেওয়া হল না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। তাঁর পাশে এসে দাঁড়িয়েছে রূপান্তরকামীদের একটি সংগঠন।
রূপান্তরকামীদের সেই সংগঠনের তরফে অপর্ণা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, বছর চব্বিশ-পঁচিশের নীলাঞ্জনা শারীরিক গঠনের দিক থেকে পুরুষ ছিলেন। পুরুষের অঙ্গ অস্ত্রোপচার করে তিনি নারীর অঙ্গ তৈরির জন্য গত ২ অক্টোবর এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি হন। পরদিন, ৩ অক্টোবর তাঁর ভ্যাজাইনোপ্লাস্টি হয়। অভিযোগ, অস্ত্রোপচারের পর থেকে যে ধরনের পোস্ট অপারেটিভ পরিষেবা পাওয়া দরকার, তা তিনি পাননি। উল্টে স্যালাইনের সূচের মাধ্যমে তাঁর শরীরে হাওয়া ঢুকে যায় বলে অভিযোগ। এর জেরে তাঁর শরীরে প্রচণ্ড যন্ত্রণা হতে থাকে। কিন্তু তখন নার্সকে ডেকেও কোনও সাড়া মেলেনি বলে অভিযোগ তুলেছেন তিনি।
ফলে বিভিন্ন ধরনের শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়। অভিযোগ, চিকিৎসকেরা তাঁকে দেখে গেলেও এ ধরনের অস্ত্রোপচারের জন্য যতটা যত্ন নিতে হয়, নার্স কিংবা আয়ারা তা নেননি। পরে পুরো ঘটনাটি লিখিত ভাবে এসএসকেএম হাসপাতালের সুপারকে জানানো হলে রোগী সেবা পেতে শুরু করেন। রূপান্তরকামীদের ওই সংগঠনের আরও অভিযোগ, এসএসকেএম হাসপাতালে রূপান্তরকামীদের জন্য এসআরএস-এর ব্যবস্থা থাকলেও তাঁদের জন্য কোনও আলাদা ওয়ার্ড নেই। অভিযোগ, আলাদা কোনও ওয়ার্ড না থাকার ফলে ওই রূপান্তরকামীকে অস্ত্রোপচারের আগে পুরুষ বিভাগে ভর্তি রাখা হয়।
অস্ত্রোপচারের পরে তাঁকে রাখা হয় মহিলা ওয়ার্ডে। আর এই জায়গাতেও আপত্তি জানিয়েছেন অপর্ণা। তাঁর অভিযোগ, পাঁচ বছর আগে ট্রান্সজেন্ডার ওয়েলফেয়ার বোর্ড তৈরি হয়েছিল এ রাজ্যে। কিন্তু সেই বোর্ড রাজ্যের, এমনকি কলকাতার কোনও সরকারি হাসপাতালে এখনও পর্যন্ত তৃতীয় লিঙ্গের মানুষের জন্য কোনও আলাদা ওয়ার্ডের জন্য আবেদনটুকু করতে পারেনি। ফলে তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ অস্ত্রোপচারের জন্য এলে তাঁকে হয় পুরুষ, না হলে মহিলা ওয়ার্ডে রাখা হয়। এতে দু’তরফেই অসুবিধা হয়। কিন্তু এসএসকেএম-এ তো শুধু এক জনের অস্ত্রোপচার হয়নি। এর আগে আট জনের এসআরএস হয়েছে এখানে। আগে কোনও সমস্যা বা গাফিলতির অভিযোগ হয়নি। তা হলে এই ব্যক্তির এ রকম সমস্যা হল কেন? এসএসকেএম হাসপাতালের সুপার রঘুনাথ মিশ্রের বক্তব্য, ‘‘অভিযোগ পাওয়ার পরে আমি গিয়ে চিকিৎসক ও চিকিৎসাকর্মীদের সকলের সঙ্গে কথা বলেছি। পরিষেবায় খামতির অভিযোগ কিন্তু ঠিক নয়।’’ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, সব রকম যত্নই নেওয়া হয়েছে এই ক্ষেত্রেও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy