Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

এসি বাসস্টপ বেহাল সর্বত্রই

ঠা ঠা রোদে বাসের অপেক্ষায় একটু স্বস্তির ছোঁয়া। সেই লক্ষ্যেই শহরের বিভিন্ন এলাকায় তৈরি হয়েছিল এসি বাসস্ট্যান্ড। কিন্তু বছর দেড়েকের মধ্যেই কার্যত মুখ থুবড়ে পড়েছে রাজ্য সরকারের সেই উদ্যোগ।

অবহেলিত: সিআইটি এলাকার এই পথে বাসই চলে না। তবু সেখানে গড়ে তোলা হয়েছে বাতানুকূল বাসস্টপ।

অবহেলিত: সিআইটি এলাকার এই পথে বাসই চলে না। তবু সেখানে গড়ে তোলা হয়েছে বাতানুকূল বাসস্টপ।

তিয়াষ মুখোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ১১ মে ২০১৭ ০২:৪৩
Share: Save:

ঠা ঠা রোদে বাসের অপেক্ষায় একটু স্বস্তির ছোঁয়া। সেই লক্ষ্যেই শহরের বিভিন্ন এলাকায় তৈরি হয়েছিল এসি বাসস্ট্যান্ড। কিন্তু বছর দেড়েকের মধ্যেই কার্যত মুখ থুবড়ে পড়েছে রাজ্য সরকারের সেই উদ্যোগ। কোথাও যন্ত্র বিকল, কোথাও কাচ নেই, কোথাও যাত্রীর আনাগোনাই চোখে পড়ে না।

উল্টোডাঙার বাসস্ট্যান্ডে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণের যন্ত্রটাই অকেজো। শুধু তা-ই নয়, কাচের দেওয়ালের একটা বড় অংশ উধাও। যাত্রীরা সকলেই রাস্তায় দাঁড়িয়ে বাসের অপেক্ষায়। পরিত্যক্ত একচিলতে ঘরের মতো দাঁড়িয়ে রয়েছে ওই এসি বাসস্ট্যান্ড। স্থানীয় বাসিন্দারা জানালেন, তৈরি হওয়ার কিছু দিন পর থেকেই এই অবস্থা।

পার্ক সার্কাসের একটি শপিং মলের উল্টো দিকের বাসস্ট্যান্ডে আবার ইচ্ছা করেই এসি দুপুরে বন্ধ রাখা হয়। কারণ, সেখানে যাত্রীর চেয়ে আড্ডাপ্রিয় তরুণ-তরুণীদের ভিড়ই বেশি। প্রায়ই ছেলেমেয়েদের দেখা যায় ওই বাসস্ট্যান্ডে বসে থাকতে। এক তরুণীর কথায়, ‘‘ফ্রি-তে ঠান্ডা তো আছেই। সেই সঙ্গে ওয়াইফাই পরিষেবা থাকায় ইন্টারনেটও ব্যবহার করা যায় যত খুশি।’’

বাইপাসের ধারে একটি বেসরকারি হাসপাতালের সামনের বাসস্ট্যান্ডটি বহু দিন ধরেই অকেজো। ভিতরটা ফাঁকাই থাকে। রাতে আশ্রয় নেয় গুটিকয় সারমেয়। বেলেঘাটার সিআইটি বিল্ডিং এলাকায় নির্মিত বাসস্ট্যান্ডটি আবার শুরু থেকেই অন্য কাজে ব্যবহৃত হয়। কারণ ওই রাস্তা দিয়ে বাসই চলে না। ফলে যাত্রীদের অপেক্ষার প্রশ্ন নেই। সেখানে প্রথম থেকেই স্থানীয়দের আড্ডার আসর বসত। যন্ত্র বিগড়ে যাওয়ায় এখনও এসি-র হাওয়াও নেই, মানুষও নেই।


প্রবেশ নিষেধ। তাই সারা দিন ফাঁকাই পড়ে থাকে শ্রীভূমির এই বাসস্টপ।

এ সবের মধ্যে একমাত্র চালু অবস্থায় রয়েছে লেক টাউনের বাসস্ট্যান্ডটি। সেটিই শহরের প্রথম এসি বাসস্ট্যান্ড। পরিচর্যার অভাবে কিছু দিন খারাপ ছিল। সম্প্রতি সারানো হয়েছে সেটি। কিন্তু গিয়ে দেখা গেল, গুটিকয়েক যাত্রীর অপেক্ষার পাশেই ঠান্ডা হাওয়ায় আরামে দিবানিদ্রা দিচ্ছেন এক ভবঘুরে।

কিন্তু কেন এমন দশা? মন্ত্রী সাধন পাণ্ডের তত্ত্বাবধানে উল্টোডাঙার বাসস্ট্যান্ডটি তৈরি করেছিল বিধাননগরের একটি প্রোমোটিং সংস্থা। সাধনবাবু বলেন, ‘‘খুব তাড়াতাড়ি ওই সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করছি।’’ কিন্তু পুরসভা সূত্রের খবর, বাসস্ট্যান্ডটি নির্মাণের পরে ওই সংস্থা তাদের একটি বিজ্ঞাপন লাগিয়েছিল সেখানে। পরে পুরসভার নির্দেশে তা সরিয়ে দেওয়া হয়। তার পর থেকেই বাসস্ট্যান্ড দেখভাল করেনি ওই সংস্থা।

বেলেঘাটার বাসস্ট্যান্ডটি বিধায়ক পরেশ পালের উদ্যোগে নির্মিত। তাঁকে ফোন করা হলেও ধরেননি। জবাব দেননি এসএমএসের। বাকি বাসস্ট্যান্ডগুলির ব্যাপারে সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, খোঁজ নিয়ে দেখা হবে।

ছবি: বিশ্বনাথ বণিক, সুদীপ্ত ভৌমিক এবং শৌভিক দে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bus stop Air condition
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE