Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

বিজ্ঞাপন ঘিরে দ্বন্দ্বে কেএমডিএ ও মেট্রো

জানতে চাওয়া হয়েছিল। কোনও জবাব মেলেনি। বৈঠকও ডাকা হয়েছিল, কিন্তু কেউ হাজির হননি। এ দিন মন্ত্রী বলেন, ‘‘গত ৪ এপ্রিল ফের মেট্রোকে চিঠি দিয়ে বলা হয়েছে, স্তম্ভের গা থেকে ওই সব বিজ্ঞাপন সরিয়ে দিতে হবে।’’

কলকাতা মেট্রো রেল।

কলকাতা মেট্রো রেল।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ এপ্রিল ২০১৯ ০০:১২
Share: Save:

ই এম বাইপাসের জমি কেএমডিএ-র। তাদের অনুমতি না নিয়ে বাইপাসের উপর দিয়ে গড়িয়া-বিমানবন্দর মেট্রোর কাঠামোর স্তম্ভে বিজ্ঞাপন লাগাতে দিয়ে মুনাফা করছে মেট্রো রেল। শনিবার পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম এই অভিযোগ তুলে জানান, কেএমডিএ-কে না জানিয়ে কেন মেট্রো ওই অনুমতি দিয়েছে, গত ফেব্রুয়ারি মাসে চিঠি দিয়ে

জানতে চাওয়া হয়েছিল। কোনও জবাব মেলেনি। বৈঠকও ডাকা হয়েছিল, কিন্তু কেউ হাজির হননি। এ দিন মন্ত্রী বলেন, ‘‘গত ৪ এপ্রিল ফের মেট্রোকে চিঠি দিয়ে বলা হয়েছে, স্তম্ভের গা থেকে ওই সব বিজ্ঞাপন সরিয়ে দিতে হবে।’’ এ বারও জবাব না মিললে কেএমডিএ জোর করে স্তম্ভের গা থেকে ওই সব বিজ্ঞাপন সরিয়ে দেবে বলে এ দিন হুঁশিয়ারি দেন মন্ত্রী। এ দিকে মেট্রো রেলের চিফ অপারেশনস ম্যানেজার সাত্যকি নাথের বক্তব্য, ‘‘সারা দেশে রেলপথের নির্মাণ কাঠামোয় এ ভাবেই বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়।’’ গত শুক্রবার চিঠি দিয়ে কেএমডিএ-র চিফ এগজিকিউটিভ অফিসারকে এ কথা জানানো হয়েছে মেট্রোর তরফে। সাত্যকিবাবুর বক্তব্য, ‘‘আজ শনিবার বলে হয়তো ওই চিঠি এখনও তাঁর কাছে পৌঁছয়নি।’’

কেএমডিএ-র অনুমতি জরুরি কেন? নগরোন্নয়ন দফতর সূত্রের খবর, ২০১৪ সালে বাইপাসের ওই জমির উপর দিয়ে মেট্রোর লাইন বসানোর জন্য কেএমডিএ-র অনুমতি চান মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষ। মন্ত্রী জানান, বাইপাসের উপরে ওই জমি অধিগ্রহণ এবং ব্যবহারযোগ্য করে তুলতে রাজ্য সরকারের কোটি কোটি টাকা খরচ হয়েছে। মেট্রো রেল যখন ওই প্রকল্প করে, তখন বলা হয়েছিল এর জন্য কেএমডিএ-কে ২৫৭ কোটি টাকা দিতে হবে। তৎকালীন রেলমন্ত্রী সুরেশ প্রভু পরে ওই টাকা ছাড়ের জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে আবেদন জানান। মুখ্যমন্ত্রী তা মঞ্জুর করায় টাকা নেওয়া হয়নি। অভিযোগ, এখন বাইপাসের উপরে বিনামূল্যে পাওয়া জায়গায় গড়ে ওঠা স্তম্ভ থেকে মেট্রো কর্তৃপক্ষ বাণিজ্য করছেন, কেএমডিএ-কে না জানিয়ে। আপত্তি সেখানেই। মন্ত্রীর বক্তব্য, ওই জায়গা থেকে কেএমডিএ-ও বাণিজ্য করতে চায় না। কিন্তু বাইপাস এলাকায় দূষণ বাড়ছে। তাই ওই সব স্তম্ভে ভার্টিক্যাল উদ্যান করতে চায় নগরোন্নয়ন দফতর। নিউ টাউনে মেট্রোর একটি স্তম্ভে তা করাও হয়েছে। কলকাতা পুরসভাও নগর সবুজায়ন প্রকল্প হাতে নিয়েছে। সেই কাজের জন্যই স্তম্ভগুলি কাজে লাগাতে চায় কেএমডিএ। দফতরের এক আধিকারিক জানান, সে সব নিয়ে বৈঠকের জন্যই মেট্রোর প্রতিনিধিকে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি হাজির থাকতে অনুরোধ করা হয়েছিল। কিন্তু কেউ আসেননি। এ বিষয়ে সাত্যকিবাবুর বক্তব্য, ‘‘ফেব্রুয়ারিতে পাঠানো চিঠি আমরা পেয়েছি মার্চ মাসে। তাই কেউ হাজির হতে পারেননি।’’ তিনি জানান, ৫ এপ্রিল যে চিঠি পাঠানো হয়েছে কেএমডিএ-কে, তাতে সে কথা জানানো হয়েছে। কিন্তু বিজ্ঞাপন লাগানোর ক্ষেত্রে মেট্রো কর্তৃপক্ষের কি কেএমডিএ-র অনুমতি নিতে হত না? সাত্যকিবাবুর কথায়, ‘‘আমরা তো মনে করেছি অনুমতির দরকার নেই।’’ সবই ওই চিঠিতে বলা হয়েছে বলে দাবি তাঁর। তবে কেএমডিএ-র সঙ্গে সংঘাতের পথেই কি এগোনোর পালা শুরু হচ্ছে মেট্রোর? তা ঘিরে কি পরোক্ষে হবে রাজ্য বনাম কেন্দ্রের সংঘাত? ভোটের আগে সেই জল কতটা গড়ায়, এখন তা-ই দেখার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Advertisement KMDA Kolkata Metro KMRCL
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE