সরকার-নির্ধারিত শর্ত মেনেও কী ভাবে পরিষেবাকে লাভজনক রাখা যায়, তার উপায় খুঁজছেন অ্যাপ-ক্যাব সংস্থার কর্তারা।
বর্তমান ভাড়ার কাঠামোয় ‘সার্জ প্রাইস’-এর হার এবং তা আদায় করার সময়সীমা নির্দিষ্ট করে দেওয়া হলে লাভের অঙ্ক অনেকটাই কমে যাবে বলে আশঙ্কা করছে অ্যাপ-ক্যাব সংস্থাগুলি। ফলে সরকার-নির্ধারিত শর্ত কতটা শিথিল করা যায়, তা নিয়ে বুধবার পরিবহণমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পরে বৃহস্পতিবারও আলাপ-আলোচনা চালিয়ে গিয়েছেন অ্যাপ-ক্যাব সংস্থার কর্তারা।
পরিবহণ দফতর সূত্রের খবর, সার্জ প্রাইস নিয়ে সরকার যে সমস্ত প্রশ্ন তুলেছিল, তার উত্তর দিতে এ দিন বিকেলে একটি অ্যাপ-ক্যাব সংস্থার কর্তারা পরিবহণ দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে দেখা করেন। অন্য একটি অ্যাপ-ক্যাব সংস্থার কর্তারাও সরকারের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন বলে খবর।
এ দিন যে অ্যাপ-ক্যাব সংস্থার প্রতিনিধিরা পরিবহণ ভবনে যান, তাঁদের তরফে সরকারকে নির্দিষ্ট কিছু প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে বলে খবর। ওই সংস্থা যাত্রী-পিছু ৪৫ শতাংশের বেশি সার্জ প্রাইস না নেওয়ার পাশাপাশি সারা মাসে মোট ২৫ শতাংশের বেশি রাইডে সার্জ প্রাইস না নিতে সম্মত হয়েছে। প্রত্যেক মাসে কোন কোন যাত্রীর কাছ থেকে কী ভাবে কতটা সার্জ প্রাইস আদায় করা হয়েছে, সে সংক্রান্ত তথ্যও তারা সরকারকে জানাবে বলে জানিয়েছে।
ওই সংস্থার আর্জি, সরকার-নির্ধারিত এসি ট্যাক্সির ভাড়ার সঙ্গে প্রিপেড বুকিং চার্জ, ওয়েটিং চার্জ, নাইট চার্জ ও লাগেজ চার্জ যোগ করে মূল ভাড়ার কাঠামো ঠিক হোক। এসি ট্যাক্সির ক্ষেত্রে সরকার-নির্ধারিত ভাড়া কিলোমিটার প্রতি ১৮ টাকার কিছু বেশি। এর সঙ্গে অন্য খরচ যোগ হলে প্রতি কিলোমিটারে অ্যাপ-ক্যাবের ভাড়া ২০-২২ টাকার আশপাশে দাঁড়াতে পারে। ফলে সার্জ প্রাইসের চাপ থেকে যাত্রীরা খানিকটা রেহাই পেলেও মূল ভাড়া কিলোমিটার পিছু হার আগের থেকে কিছুটা বাড়তে পারে।
পরিবহণ দফতর সূত্রের খবর, দু’টি সংস্থার বেস প্রাইসও (ক্যাবে উঠলেই যে টাকা দিতে হয়) আগের থেকে কমে ৪০ টাকার আশপাশে দাঁড়াতে পারে। নতুন ভাড়ার উপরে সর্বোচ্চ ৪৫ শতাংশ হারে সার্জ-প্রাইস নেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে সংস্থাটি। পুরনো ভাড়ার হার অনুযায়ী অ্যাপ-ক্যাবে সারচার্জের বহর চড়া হলেও মূল ভাড়ার হার হলুদ ট্যাক্সির নতুন ভাড়ার (কিলোমিটার পিছু ১৫ টাকা) চেয়ে কম ছিল। ফলে নতুন ব্যবস্থা কার্যকর হলে ঘুরপথে চ়ড়া ভাড়া আদায়ের সমস্যা থেকে কিছুটা রেহাই পেতে পারেন যাত্রীরা। তবে ছাড় আদৌ মিলবে কি না, সেই সংশয়ও থাকছে।
ওই ক্যাব সংস্থার পক্ষ থেকে বাইক ট্যাক্সি চালু করার আর্জিও জানানো হয়েছে। সেই সঙ্গে সাদার পাশাপাশি অন্য রঙের গাড়িকেও যাতে অ্যাপ-ক্যাব হিসেবে ব্যবহার করা যায়, তারও আর্জি জানানো হয়েছে। সংস্থার মুখপাত্র বলেন, “যাত্রীদের স্বার্থে সরকারের সঙ্গে সহযোগিতা করে পরিবহণ পরিষেবা অব্যাহত রাখতে চাই আমরা।” অপর অ্যাপ-ক্যাব সংস্থার মুখপাত্র বলেন, “সরকারি নির্দেশ মেনেই যাত্রী এবং চালকদের স্বার্থ সুরক্ষিত রেখে পরিষেবা চালিয়ে যাওয়া হবে।”
পরিবহণ দফতর সূত্রের খবর, সরকার প্রথম বার অ্যাপ-ক্যাব সংস্থাগুলিকে নিয়ন্ত্রিত ভাড়ার আওতায় আনার চেষ্টা করছে। তাই একবারে সব বিধিনিষেধ আরোপ না করে ভাড়া নির্ধারণের প্রক্রিয়াটিকে সরল করা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy