ছবি: সংগৃহীত।
হাওড়া শহরের অস্বাভাবিক ভাবে বেড়ে গিয়েছে কুকুরের সংখ্যা। শহরের অলিগলি তো বটেই, অফিস-আদালত এমনকী হাসপাতালেও এদের সংখ্যা বৃদ্ধি হচ্ছিল চোখে পড়ার মতো। উদ্বিগ্ন হাওড়া পুরসভা জেলা প্রাণিসম্পদ বিকাশ দফতরের সহায়তায় কুকুরের নির্বীজকরণ ও জলাতঙ্কের টিকাকরণের ব্যবস্থা হয়েছিল হাওড়া জেলা হাসপাতালে। এ বার তা নিয়েই শুরু হয়েছে বিতর্ক। যে হাসপাতালে মানুষের চিকিৎসা হয় সেখানে পশুদের চিকিৎসা করা হচ্ছে কী করে, প্রশ্ন উঠেছে তা নিয়ে। শুধু তা-ই নয়, হাসপাতালের যে বিল্ডিংয়ে নির্বীজকরণ করা হয়েছে, তারই তিনতলায় রয়েছে প্রসূতি ওয়ার্ড। ফলে এর থেকে সদ্যোজাতদের মধ্যে কোনও সংক্রমণ ছড়াতে পারে কি না, আতঙ্ক ছড়িয়েছে তা নিয়েও।
হাওড়া পুরসভার বক্তব্য, কুকুরের নির্বীজকরণের প্রচুর খরচ। তাই পুরসভার পক্ষ থেকে সম্প্রতি রাজ্য প্রাণিসম্পদ বিকাশ দফতরের কাছে সাহায্য চাওয়া হয়। প্রাণী বিকাশ দফতরও প্রথম দফায় ৫০০ সারমেয়র নির্বীজকরণ ও জলাতঙ্ক প্রতিষেধক টিকাকরণ করবে বলে জানিয়ে দেয়। পুরসভার পক্ষ থেকে জানানো হয়, শহরের মোট ২০টি গুরুত্বপূর্ণ জায়গা যেমন বেলুড়, সালকিয়া, পিলখানা, বেলগাছিয়া ভাগাড়ের মতো জায়গায় এই শিবির হবে। প্রত্যেকটি শিবিরে ২৫-৩০টি করে কুকুরের নির্বীজকরণ ও টিকাকরণ হবে।
পুরসভা সূত্রের খবর, হাওড়া হাসপাতাল চত্বরে প্রচুর কুকুর থাকায় ঠিক হয় প্রথম শিবির হবে হাসপাতালেই। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও অনুমতি দেন। শুক্রবার বেলা সাড়ে ১০টার সময়ে হাসপাতালে একটি অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করা হয়। তাতে উপস্থিত ছিলেন মেয়র রথীন চক্রবর্তী, হাওড়ার জেলাশাসক চৈতালী চক্রবর্তী, পুলিশ কমিশনার দেবেন্দ্রপ্রকাশ সিংহ, মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) ভাস্কর ভট্টাচার্য প্রমুখ। শিবিরের উদ্বোধন করেন মেয়র।
যে জায়গায় এ দিন অনুষ্ঠানটি হয় সেই ভবনের একতলার একটি অংশে রয়েছে হাসপাতাল সুপারের অফিস। আর এক প্রান্তে রয়েছে রোগীদের জন্ম-মৃত্যুর শংসাপত্র দেওয়ার অফিস। ওই ভবনেরই দোতলায় মহিলা ওয়ার্ড আর তিনতলায় প্রসূতি বিভাগ। অভিযোগ উঠেছে, এই ভবনেরই একতলায় এ দিন পুরুষ কুকুরদের অস্ত্রোপচার হয় এবং অতিথিদের সামনেই নির্বীজকরণ ও জলাতঙ্ক প্রতিষেধক টিকাকরণ করেন রাজ্য প্রাণিসম্পদ বিকাশ দফতরের পশু চিকিৎসকেরা।
কিন্তু হাসপাতাল চত্বরে কেন এই ব্যবস্থা করা হল?
হাওড়া পুরসভার মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) ভাস্কর ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘রাজ্য প্রাণিসম্পদ বিকাশ দফতর ও হাওড়া জেলা হাসপাতালের অনুমতি নিয়েই শিবিরের আয়োজন হয়েছিল। তা ছাড়া এত দিন তো হাসপাতালের ভিতরেই অবাধে এত কুকুর ঘুরে বেড়াত। তখন তো কোনও সংক্রমণের ঘটনা ঘটেনি।’’
এ ব্যাপারে চিকিৎসক মেয়রেরও রথীন চক্রবর্তীর মতামত একই।
তিনি বলেন, ‘‘হাওড়া জেলা হাসপাতালে আগে থেকেই প্রচুর কুকুর ছিল। তাদেরই নির্বীজকরণ হয়েছে। আর যে জায়গায় এই অস্ত্রোপচার করা হয়েছে, তার থেকে মনে হয় না কোনও সমস্যা হবে।’’
হাওড়া জেলা হাসপাতালের সুপার নারায়ণ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘যে জায়গায় এই অস্ত্রোপচার হয়েছে, তার ধার-কাছে কোনও রোগী থাকেন না। তাই যে প্রশ্ন তোলা হয়েছে, তা ঠিক নয়। তা ছাড়া এ নিয়ে উপস্থিত জেলা প্রশাসনের কেউ কোনও আপত্তি তোলেননি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy