Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus

বন্ধ বন্দে ভারতের উড়ান, বিপদে কলকাতার যাত্রীরা

জুনের শেষে রাজ্য জানায়, বিদেশ থেকে ফিরতে চাওয়া যাত্রীদের কোয়রান্টিনে থাকার নিয়ম আরও কড়া করতে হবে। তখনই বন্ধ হয়ে যায় কলকাতার উড়ান।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

সুনন্দ ঘোষ
কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ অগস্ট ২০২০ ০৩:৪৯
Share: Save:

কলকাতা থেকে ছ’টি শহরের সরাসরি উড়ান বন্ধ ১৫ অগস্ট পর্যন্ত এবং লকডাউনের দিনগুলিতে উড়ান বাতিল— বৃহস্পতিবার দুপুরে এমনই একটি টুইট করেছিলেন কলকাতা বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। সেই টুইট দেখেই নেট দুনিয়ায় ঝাঁপিয়ে পড়লেন বহু মানুষ। জানতে চাইলেন, বিদেশ থেকে যাঁরা কলকাতায় ফিরতে চাইছেন, তাঁদের কী হবে?

উল্লেখ্য, লকডাউনের পরে গত ৭ মে থেকে বিদেশে আটকে পড়া ভারতীয়দের দেশে ফেরাতে ‘বন্দে ভারত’ উড়ান চালু করে কেন্দ্র। ঠিক হয়, দেশে ফিরে ওই যাত্রীদের ১৪ দিন কোয়রান্টিনে থাকতে হবে। পরে সেই মেয়াদ কমে সাত দিন হয়। বলা হয়, যাত্রীদের নিজেদের টাকায় হোটেলে কোয়রান্টিনে থাকতে হবে। মে মাসের শেষে ঢাকা থেকে যাত্রীদের নিয়ে কলকাতায় নামে বন্দে ভারতের প্রথম উড়ান। তার পরে বেশ কয়েকটি এমন উড়ান নামে কলকাতায়। আমেরিকা এবং ইংল্যান্ড থেকেও দিল্লি ঘুরে যাত্রীরা শহরে নামেন।

কিন্তু জুনের শেষে কিরঘিজিস্তান এবং মালয়েশিয়া থেকে ফেরা একদল ডাক্তারি ছাত্র ও শ্রমিক কোয়রান্টিনের নিয়ম না-মেনে সরাসরি বাড়ি চলে যান। তার পরেই রাজ্য জানায়, বিদেশ থেকে ফিরতে চাওয়া যাত্রীদের কোয়রান্টিনে থাকার নিয়ম আরও কড়া করতে হবে। তাঁদের বাধ্য না-করলে পশ্চিমবঙ্গে বন্দে ভারতের উড়ান নামতে দেওয়া হবে না। তখনই বন্ধ হয়ে যায় কলকাতার উড়ান।

শহরে বন্দে ভারতের সরাসরি উড়ান তখন থেকে বন্ধ থাকায় ফিরতে পারছেন না সল্টলেকের বাসিন্দা লাবণ্য রায়চৌধুরী। তিনি লন্ডনে আটকে। ভাড়া বাড়ি ছেড়ে রয়েছেন বন্ধুর কাছে। এ দিকে, কলকাতার বাড়িতে বসে চিন্তায় ঘুম উড়ে গিয়েছে লাবণ্যের মা সোনালি চক্রবর্তীর। লাবণ্যের মতো আরও অনেকে আছেন। বিদেশ মন্ত্রক এবং উড়ান সংস্থাগুলির কাছে তাঁদের একটাই প্রশ্ন— কবে কলকাতার উড়ান চালু হবে। উত্তর নেই কোনও তরফেই।

রাজ্যের পক্ষে জানানো হয়েছিল, বিদেশ মন্ত্রকের সঙ্গে আলোচনা করে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সমস্যা মেটানো হবে। কিন্তু এক মাস পরেও পরিস্থিতি বদলায়নি। যদিও কলকাতা বাদে দিল্লি, মুম্বই-সহ অন্যত্র লোকজন ফিরছেন।

যাঁদের কলকাতায় না ফিরলেই নয়, এমন যাত্রীরা বাধ্য হয়ে দিল্লি পর্যন্ত এসে সাত দিন কোয়রান্টিনে থাকার পরে শহরে ফেরার চেষ্টা করছেন। কিন্তু সমস্যা সেখানেও। দিল্লি-কলকাতার মধ্যে সরাসরি উড়ান বন্ধ রেখেছে রাজ্য সরকার। বিদেশ থেকে যাঁরা ফিরছেন, তাঁদের সঙ্গে মালপত্র বেশি থাকছে। পটনা, ভুবনেশ্বর বা অন্য শহর ঘুরে প্রায় ১০ ঘণ্টায় কলকাতায় অত মালপত্র নিয়ে ফেরা মুশকিল হয়ে যাচ্ছে।

এই অবস্থায় কলকাতায় যে বিদেশি উড়ান সংস্থাগুলি যাত্রীদের নিয়ে আসতে চাইছে, তারা সরাসরি রাজ্য সরকারের কাছে আর্জি জানানোর কথা ভাবছে। কলকাতা বিমানবন্দর সূত্রের খবর, বিদেশ মন্ত্রকের সঙ্গে রাজ্যের আলোচনায় কবে সমাধানসূত্র বেরোবে, তার অপেক্ষা না-করে উড়ান সংস্থাগুলি নিজেরাই পথ খুঁজছে। ইতিমধ্যেই ১৯ থেকে ২৬ জুলাইয়ের মধ্যে পাঁচটি বিমান দুবাই থেকে কলকাতায় নিয়ে এসেছিল এমিরেটস। ওই বিমানগুলি এসেছে শুধু পণ্য নিয়ে। ফেরার পথে কলকাতা থেকে যাত্রী নিয়ে গিয়েছে। শেষের দিকে দু’দিন যথাক্রমে ৭৮ এবং ৮৮ জন যাত্রী দুবাই গিয়েছেন। কিন্তু এক দিকে যাত্রী হওয়ায় লোকসান হচ্ছে উড়ান সংস্থার। তারা দু’দিকেরই যাত্রী চাইছে। কিন্তু রাজ্য রাজি না-হওয়ায় সেটা সম্ভব হচ্ছে না।

(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।

• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Bande Bharat Coronavirus in India
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE