Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus

স্কুল ছুটির মজা আটকে করোনার লক্ষ্মণরেখায়

কী ভাবে কাটবে আগামী দিনগুলি? পড়ুয়াদের অভিভাবকেরা জানাচ্ছেন, ছেলেমেয়েরা বাড়িতে আটকে বলে ঘরের নিয়ম খানিকটা শিথিল করা হয়েছে। 

ঘরবন্দি শৈশব। ছবি: স্নেহাশিস ভট্টাচার্য

ঘরবন্দি শৈশব। ছবি: স্নেহাশিস ভট্টাচার্য

আর্যভট্ট খান
শেষ আপডেট: ২৬ মার্চ ২০২০ ০২:৪৪
Share: Save:

পড়ে পাওয়া চোদ্দো আনার এক আনাও কাজে লাগছে না।

করোনার সংক্রমণের আতঙ্কে দেশ জুড়ে চলছে লকডাউন। ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত স্কুলের ছুটি। বাড়ির বাইরে অদৃশ্য লক্ষ্মণরেখা টেনে দেওয়া হয়েছে বলে মঙ্গলবারই ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ফলে হঠাৎ পাওয়া লম্বা ছুটিতেও আনন্দ নেই ওদের মনে।

কী ভাবে কাটবে আগামী দিনগুলি? পড়ুয়াদের অভিভাবকেরা জানাচ্ছেন, ছেলেমেয়েরা বাড়িতে আটকে বলে ঘরের নিয়ম খানিকটা শিথিল করা হয়েছে।

লোরেটো ডে স্কুলের (শিয়ালদহ) সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী অভীপ্সা ভট্টাচার্যের মা মিতালিদেবী জানালেন, তাঁর মেয়ে প্রথমে সাইকেল চালানো শিখছিল। তিনি বলেন, ‘‘লকডাউন পরিস্থিতিতে তা-ও বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এখন অবশ্য ঘরেই থাকছে। বাংলা গল্পের বই কিনে দিয়েছি পড়ার জন্য।’’

পরীক্ষার পরে মা-বাবার সঙ্গে আন্দামান বেড়াতে যাওয়ার কথা ছিল বালিগঞ্জ শিক্ষা সদনের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী অংশিকার। কিন্তু যাত্রা বাতিল করতে হয়েছ। তার মা ইন্দ্রাণীদেবী বলেন, ‘‘মেয়ের মন খারাপ। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে আন্দামান বেড়ানোর ঝুঁকি কী করে নেব?’’

দীর্ঘ ছুটিতে বাড়িবন্দি থাকার কারণে বাবার মোবাইল আধ ঘণ্টার বদলে এক ঘণ্টা ব্যবহারের সুযোগ পেয়েছে সেন্ট জেমসের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র অভিরাজ সরকার। তার বাবা অনির্বাণবাবুর কথায়, ‘‘ছেলে টেবিল-টেনিস খেলে। কিন্তু এখন বাড়িতেই থাকতে হচ্ছে। তাই বাধ্য হয়েই ওকে একটু বেশি সময় মোবাইল হাতে দিচ্ছি ভিডিয়ো গেম খেলার জন্য। তবে ফেলুদার বইও পড়তে দিয়েছি।’’

হেরিটেজ স্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র সৌমিত বসু আবার এই ছুটিতে মাকে রান্নায় সাহায্য করছে। মা মৌমিতাদেবী বলেন, ‘‘ছেলে কেক খেতে ভালবাসে। বাড়িতে কেক তৈরি করছিলাম। ও দেখলাম রান্নাঘরে এসে আমাকে কেক তৈরির উপকরণগুলি হাতের কাছে দিয়ে যাচ্ছে। মাইক্রোওয়েভে কী ভাবে রান্না করছি মন দিয়ে দেখছে। হাতেকলমে নিজেও করছে।’’ তিনি জানান, আগামী পঁচিশে বৈশাখ উপলক্ষে একটি নাটক লিখতেও শুরু করেছে সৌমিত। তার প্রতিবেশী শারদ্ধ্যতী ধর ডিপিএস রুবি পার্কের দশম শ্রেণির ছাত্রী। তার মা শ্রেয়সীদেবী বলেন, ‘‘সামনের বছরই বোর্ডের পরীক্ষা মেয়ের। এই লম্বা ছুটিতে ও পড়াশোনাটা মন দিয়ে করতে পারছে।’’ হাওড়ার ইছাপুরের বাসিন্দা সুনীতা গৌর জানান, তাঁর মেয়ে রূপসা গোখেল মেমোরিয়ালে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ে। সে নাচ শেখে। তবে এখন নাচের ক্লাস বন্ধ। বাড়িতেই চলছে অনুশীলন।

সাউথ পয়েন্ট স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র শেখ আবির রহমানের বাবা জয়দুর রহমান বলেন, ‘‘একটা গণ্ডির মধ্যে আটকা পড়ে গিয়েছি সবাই। অন্য সময়ে ছুটিতে নিকো পার্ক কিংবা ইকো পার্কে যাওয়া হয়। এ বার সব বাতিল। তাই বাড়িতে বসে ছেলে কার্টুন দেখছে।’’ জয়দুর জানান, ছেলে শুধু কার্টুন দেখে না, ভাল কার্টুন আঁকতেও পারে। সে সব নিয়েই তার দিন কাটছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Health
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE