Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus in Kolkata

কেন ছিল না করোনার তথ্য, সরব মৃত তরুণের মা

রবিবার বেলঘরিয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ১৮ বছরের ওই তরুণের মা। পুলিশ ‘অবহেলায় মৃত্যু’ ধারায় মামলা দায়ের করেছে।

শুভ্রজিৎ চট্টোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

শুভ্রজিৎ চট্টোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ জুলাই ২০২০ ০২:৪৯
Share: Save:

বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু হয়েছে ছেলের। এমনকি, সরকারি ও বেসরকারি মিলিয়ে যে সমস্ত হাসপাতালে তাঁরা ঘুরেছেন, সেখানেও চূড়ান্ত অমানবিকতার শিকার হতে হয়েছে। এমনই অভিযোগের পাশাপাশি ইছাপুরের বাসিন্দা শুভ্রজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের বাবা-মায়ের দাবি, তদন্তে ওই সব হাসপাতালের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পরীক্ষা করে দেখতে হবে।

রবিবার বেলঘরিয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ১৮ বছরের ওই তরুণের মা। পুলিশ ‘অবহেলায় মৃত্যু’ ধারায় মামলা দায়ের করেছে। শুভ্রজিতের মায়ের দাবি, ‘‘ছেলের যদি করোনা হয়ে থাকে, তা হলে স্বাস্থ্য দফতরের কাছে ওর সম্পর্কে কোনও তথ্য ছিল না কেন? আর যদি তথ্য না-ই থাকে, তা হলে কোভিড হাসপাতালে রেফার করা হল কেন?’’ এর পাশাপাশি আরও কয়েকটি বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ওই দম্পতি। তাঁরা জানান, শুক্রবার কামারহাটি ইএসআই হাসপাতালে শুভ্রজিতের সুগার পরীক্ষার পরে তাকে স্থানীয় একটি নার্সিংহোমে পাঠানো হয়েছিল। সেখানেই ওই তরুণের রক্ত ও অন্য নমুনা পরীক্ষা করে বলা হয়, সে করোনা আক্রান্ত। এ দিন বেলঘরিয়া থানার বাইরে দাঁড়িয়ে শুভ্রজিতের মা বলেন, ‘‘রক্ত পরীক্ষার তিন মিনিটের মধ্যে কী করে কোভিড পরীক্ষার রিপোর্ট আসতে পারে? আর ওই রিপোর্ট কেন একটা কাগজে হাতে লেখা হল?’’ এ দিন ওই নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষকে বারবার ফোন করা হলে তাঁরা ধরেননি। মেসেজেরও উত্তর দেননি।

শুক্রবার ওই চিরকুটের রিপোর্ট দেখেই ইএসআই হাসপাতাল থেকে শুভ্রজিৎকে সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছিল। সেখানে শয্যা না থাকায় ফিরে আসার পরে ফের ওই রিপোর্টের উপর ভিত্তি করেই রেফারের কাজ তৈরি করে শুভ্রজিৎকে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে ছিলেন ইএসআই কর্তৃপক্ষ। ইএসআই হাসপাতালের সুপার সুব্রত সাহা বলেন, ‘‘নার্সিংহোমে র‌্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্টের মাধ্যমে তরুণের নমুনা পরীক্ষা করানো হয়েছিল। আরটি পিসিআর পদ্ধতিতে নয়।’’ তবে আইসিএমআর-এর নির্দেশিকায় বলা আছে, র‌্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্টের রিপোর্ট পজ়িটিভ হলে সেটি কোভিড পজ়িটিভ বলা যায়।

অন্য দিকে শনিবার সাগর দত্ত হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দাবি করেছিলেন, ওই তরুণ যে হাসপাতালে এসেছিলেন, সেই সংক্রান্ত কোনও নথি নেই। সেই দাবি খারিজ করে এ দিন শুভ্রজিতের মা বলেন, ‘‘সুপারের ঘরের সামনে কোল্যাপসিব্‌ল গেটের কাছে আমাদের আটকে দেওয়া হয়। ওই গেটে থাকা এক জন কর্মী আমাদের থেকে কাগজ নিয়ে ভিতরে যান। কিছু ক্ষণ পরে এসে বলেন, বেড নেই।’’ তাঁর অভিযোগ, কলকাতা মেডিক্যাল ক‌লেজে পৌঁছনোর পরেও দীর্ঘ সময় তাঁর ছেলের কোনও চিকিৎসা হয়নি। পরে তাঁকে ভর্তি নেওয়া হয়।

রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম বলেন, ‘‘ঘটনাটি খুবই দুর্ভাগ্যজনক। তদন্ত শুরু হয়েছে। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে ওই রোগীর কী ধরনের চিকিৎসা হয়েছিল, সে বিষয়ে সবিস্তার খোঁজ নিয়েছি। সেখানে তাঁর যথেষ্ট ভাল চিকিৎসা হয়েছে। বাঁচানোর জন্য সব রকম চেষ্টা করা হয়েছিল।’’ তবে সাগর দত্তে রোগী কোথায় গিয়ে ফিরে এসেছেন, সে বিষয়ে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন স্বাস্থ্যসচিব।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus in Kolkata Coronavirus
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE