Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus in West Bengal

উপসর্গ মিলল ২ জনের, বাইপাসের ধারে ১৫ হাজার মানুষের বস্তি কোয়রান্টিনে

এ রাজ্যের প্রথম করোনা আক্রান্ত আমলা-পুত্র ১০৯ নম্বর ওয়ার্ডেরই অধীনে নিউ গড়িয়ার একটি আবাসনের বাসিন্দা।

ছবি পিটিআই।

ছবি পিটিআই।

শুভাশিস ঘটক
কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ এপ্রিল ২০২০ ০৪:২৩
Share: Save:

একশো বিঘা জমির বস্তিতে বসবাস প্রায় ১৫ হাজার মানুষের। আর ওই ঘিঞ্জি কলোনিতেই এক মহিলার করোনা পজ়িটিভ মিলেছে। পরে আরও দুই বাসিন্দার মধ্যে এই রোগের উপসর্গ পাওয়া গিয়েছে। ওই ঘটনার পরে কিছুটা হলেও আতঙ্কে প্রশাসন। শনিবার রাত থেকে ই এম বাইপাস সংলগ্ন কলকাতা পুরসভার ১০৯ নম্বর ওয়ার্ডের শহিদ স্মৃতি কলোনির সব বাসিন্দাকে কার্যত গৃহবন্দি করে ফেলা হয়েছে। রবিবার সকাল থেকে বস্তির পাশে টহল দিচ্ছে কমব্যাট ফোর্স।

পুরসভা সূত্রে খবর, ওই কলোনির বাসিন্দা প্রায় হাজার তিনেক মহিলা বাইপাস সংলগ্ন এলাকা-সহ দক্ষিণ কলকাতার বিভিন্ন এলাকায় পরিচারিকার কাজ করেন। শুধু ওই কাজেই নয়, কলোনির বাসিন্দাদের অনেকে আরও নানা কাজে আশপাশের এলাকা ছাড়াও কলকাতা ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায় যাতায়াত করেন। কলোনির এক বাসিন্দার কথায়, ‘‘এখানে সাতশো থেকে সাড়ে সাতশো ঘর রয়েছে। ওই ছোট ছোট ঘুপচি ঘরে আবার একাধিক ভাড়াটেরও বাস। লকডাউনের পরে এখানে সামাজিক দূরত্ব-বিধি কোনও ভাবেই প্রয়োগ হয়নি। ঘুপচি ঘরে গা-ঘেঁষাঘেঁষি করে থাকাই এখানকার রেওয়াজ।’’

এ রাজ্যের প্রথম করোনা আক্রান্ত আমলা-পুত্র ১০৯ নম্বর ওয়ার্ডেরই অধীনে নিউ গড়িয়ার একটি আবাসনের বাসিন্দা। দিন কয়েক আগে ওই কলোনির বাসিন্দা, স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালের এক কর্মীর করোনার উপসর্গ দেখা দেয়। তাঁকে ওই বেসরকারি হাসপাতালেই ভর্তি করা হয়। প্রশাসন সূত্রের খবর, শনিবার রাতে তাঁর রিপোর্ট পজ়িটিভ আসে। এর পরেই তাঁর পরিবারের তিন জনকে কোয়রান্টিনে নিয়ে নেওয়া হয়।

আরও পড়ুন: মেডিক্যালে ফের করোনার হানা, এ বার আক্রান্ত ৩ ডাক্তার, ২ রোগী

ওই মহিলার পজ়িটিভ ধরা পড়ার পরেই নড়েচড়ে বসেন জেলা প্রশাসন ও কলকাতা পুরসভার কর্তারা। করোনা আক্রান্ত মহিলার স্বামীর ওই কলোনিতে মুরগির মাংসের দোকান রয়েছে। লকডাউন চলাকালীন ওই দোকান থেকেই তাঁদের পড়শি এবং আশপাশের অঞ্চলের অনেকে মাংস কিনেছেন। ওই মাংসের দোকানের গা ঘেঁষেই আবার রয়েছে একাধিক দোকানপাট।

প্রশাসনের কর্তারা মনে করছেন, ওই কলোনিতে যে ভাবে লোকজন গা ঘেঁষাঘেঁষি করে থাকেন, তাতে অন্য বাসিন্দাদেরও সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সেই কারণেই ওই কলোনির বাসিন্দাদের বাইরে যাতায়াত পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন: পুলিশ কড়া হতেই ভিড় কমছে রাস্তায়

দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলাশাসক পি উলগানাথন বলেন, ‘‘পুলিশ ও কমব্যাট ফোর্স মোতায়েন করা হয়েছে। কোনও ভাবেই ওই কলোনি থেকে যাতে সংক্রমণ না ছাড়ায়, সে দিকে নজর রাখা হচ্ছে। উপসর্গ অনুযায়ী স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’’

ই এম বাইপাস থেকে ওই বস্তির চার দিকের সমস্ত রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ১০৯ নম্বর ওয়ার্ড পঞ্চসায়র ও পূর্ব যাদবপুর থানার অধীনে রয়েছে। শহিদ স্মৃতি কলোনি মূলত পঞ্চসায়র থানার অধীনে। তা সত্ত্বেও দু’টি থানার নজরদারিতেই রাখা হয়েছে ওই কলোনি। ওই কলোনিকে একেবারে বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে বলে দাবি করছেন প্রশাসনের কর্তারা।

(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE