আলাদা: এক প্রৌঢ়ের মৃত্যুর পরে ঘিরে দেওয়া হয়েছে হাওড়ার একটি বেসরকারি হাসপাতালের সামনের রাস্তা। বুধবার। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য
গত ২৪ ঘণ্টায় হাওড়ায় দুই করোনা আক্রান্তের মৃত্যু হয়েছে। ওই দু’জনের সংস্পর্শে যাঁরা এসেছিলেন, এ বার তাঁদের খুঁজে বার করতে বিশেষ দল গড়ল হাওড়া পুরসভা। মৃত দু’জনের গত ১৫ দিনের যাবতীয় ভ্রমণ-বৃত্তান্ত, বাড়ি ফিরে তাঁরা কোথায় কোথায় গিয়েছিলেন— বুধবার সকাল থেকে সেই তথ্য জোগাড় করা শুরু করেছেন ওই দলের সদস্যেরা। প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, মধ্য হাওড়ার রাজবল্লভ সাহা দ্বিতীয় বাইলেনের বাসিন্দা, করোনা আক্রান্ত ওই প্রৌঢ়ের রাজস্থান ছাড়াও সপরিবার মালয়েশিয়া ভ্রমণের ইতিহাস রয়েছে। তাই ওই প্রৌঢ়ের স্ত্রী, ভাইপো, ভাই এবং এক শ্যালিকাকে মঙ্গলবার রাতেই ডুমুরজলা ইন্ডোর স্টেডিয়ামের কোয়রান্টিন কেন্দ্রে পাঠানো হয়। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার শিবপুর শ্মশানে সমস্ত নিয়ম মেনে দাহ করা হয় ওই প্রৌঢ়কে।
হাওড়া পুরসভা সূত্রের খবর, শহরে করোনা আক্রান্ত এক মহিলা ও এক প্রৌঢ়ের মৃত্যুর পরেই পুর কর্তৃপক্ষের কাছে ওই দু’জনের ভ্রমণ বৃত্তান্ত-সহ এলাকায় গতিবিধি এবং তাঁদের আত্মীয়স্বজনদের তালিকা তৈরি করতে সাহায্য চায় জেলা প্রশাসন। পুর কমিশনার বিজিন কৃষ্ণ জানান, সালকিয়ার বাসিন্দা ওই মহিলা এবং রাজবল্লভ সাহা দ্বিতীয় বাইলেনের বাসিন্দা প্রৌঢ় কোথায় কার সঙ্গে মিশেছেন, সেই সব ব্যক্তিদের খুঁজে বার করতে বলেছে জেলা প্রশাসন। সেই তালিকা তৈরি করে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের হাতে তুলে দেওয়া হবে। ওই ব্যক্তিদের কোয়রান্টিন কেন্দ্রে পাঠানো হবে না আইসোলেশন করা হবে, সেই সিদ্ধান্ত নেবে স্বাস্থ্য দফতরই।
পুর কমিশনার বলেন, ‘‘সালকিয়ার বাসিন্দা ওই মহিলাকে যে রিকশা করে সত্যবালা আইডি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, সেই রিকশাচালকের খোঁজ চলছে। সালকিয়ায় ফিরে মহিলা যে সব দোকানে গিয়েছিলেন, সেই দোকানিদেরও খোঁজা হচ্ছে। দু’টি মৃত্যুর পরে কোনও ফাঁক রাখতে চাইছে না প্রশাসন।’’ অন্য দিকে, রাজবল্লভ সাহা লেনের বাসিন্দা প্রৌঢ়ের পরিবারের চার জনকে ইতিমধ্যেই কোয়রান্টিনে পাঠানো হয়েছে। ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের যে বহুতলে ওই প্রৌঢ়ের পরিবার থাকে, সেই ফ্ল্যাট-সহ স্থানীয় সব রাস্তাঘাট এবং বাজার বুধবার জীবাণুমুক্ত করার কাজ করে দমকলবাহিনী।
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, হাওড়া জেলা হাসপাতাল ও জয়সওয়াল হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মী মিলিয়ে মোট ৩৫ জনকে এ দিন কোয়রান্টিনে পাঠানো হয়েছে। স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘ডুমুরজলা কোয়রান্টিন কেন্দ্রে এই মুহূর্তে সব শয্যা ভর্তি হয়ে যাওয়ায় আর একটি কোয়রান্টিন কেন্দ্র তৈরি করার চেষ্টা চলছে। কারণ, হাওড়ায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে।’’
এ দিকে, হাওড়া জেলা হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্স-সহ ২৯ জন স্বাস্থ্যকর্মীকে কোয়রান্টিনে পাঠানোয় কার্যত মুখ থুবড়ে পড়েছে সেখানকার রোগী পরিষেবা। হাসপাতালের এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘আপৎকালীন ভিত্তিতে আরও চিকিৎসক ও নার্স পাঠানোর জন্য আমরা রাজ্য সরকারকে অনুরোধ করেছি। করোনার উপসর্গ নিয়ে ভর্তি হওয়া রোগীদের আইসোলেশনে রাখার ব্যবস্থা হয়েছে। হাসপাতালের সব ওয়ার্ড জীবাণুমুক্ত করার কাজও চলছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy