Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

বিশেষ দিনে শুভেচ্ছা পাঠিয়ে ‘বন্ধু’ কাউন্সিলর

দক্ষিণ দমদম পুরসভার  ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের প্রত্যেক বাসিন্দার জন্মদিন, বিবাহবার্ষিকীতে স্থানীয় পুর প্রতিনিধির তরফে এমনই শুভেচ্ছাবার্তা এবং উপহার পৌঁছে যায় তাঁর ঠিকানায়।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৭ জুলাই ২০১৯ ০১:৫৫
Share: Save:

বছরের প্রথম দিনটি যে তাঁর জন্মদিন, মধ্য বয়সে এসে সেটাই ভুলতে বসেছিলেন দক্ষিণ দমদম পুরসভার হরকালী কলোনির বাসিন্দা অপূর্ব নস্কর। চলতি বছরের ১ জানুয়ারি সকাল সকাল বাড়ি এসে সে কথাই মনে করিয়ে গিয়েছিলেন পাড়ার কয়েক জন যুবক। প্রাপ্তিযোগের তালিকায় ছিল জন্মদিনের শুভেচ্ছা লেখা একটি কার্ড, ক্যাডবেরি, ফলের রস এবং ফুল। পরিবারের বাইরে থেকে এমন উপহার পেয়ে বেজায় খুশি এবং বিস্মিত অপূর্ববাবু। ওই যুবকদের কাছে জানতে চান, তাঁরা কী ভাবে মনে করে রেখেছেন তাঁর বিশেষ তারিখটা?

দক্ষিণ দমদম পুরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের প্রত্যেক বাসিন্দার জন্মদিন, বিবাহবার্ষিকীতে স্থানীয় পুর প্রতিনিধির তরফে এমনই শুভেচ্ছাবার্তা এবং উপহার পৌঁছে যায় তাঁর ঠিকানায়। এ সবের জন্য একটি তথ্য ভাণ্ডার তৈরি করা হয়েছে বলে জানাচ্ছেন স্থানীয় কাউন্সিলর দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়।

দেবাশিসবাবুর কথায়, “পাড়ার বাসিন্দাদের সঙ্গে জনসংযোগ রক্ষার পদ্ধতি বলতে পারেন। শুধু প্রয়োজনে সাধারণ মানুষ কাউন্সিলরের কাছে আসবেন এটা চাই না। তাঁদের পাশে বন্ধুর মতো থাকতে চাই। সেই বার্তা দিতে তাঁদের বিশেষ দিনগুলিতে পৌঁছে যাচ্ছি আমরা।”

গত এক বছর ধরে পাড়ার বিভিন্ন বাড়িতে এ ভাবেই শুভেচ্ছাপত্র পৌঁছে দিচ্ছেন রানা দেব ও তাঁর কয়েক জন বন্ধু। রানা জানান, শুভেচ্ছাপত্র বাড়িতে দিতে গিয়ে নানা অভিজ্ঞতার সন্মুখীন হতে হয়েছে। ছেলেমেয়েরা কর্মসূত্রে বাইরে চলে যাওয়ায় কত বৃদ্ধ-বৃদ্ধা নিঃসঙ্গতায় ভোগেন। এমন বাড়িতে শুভেচ্ছাপত্র ও উপহার দিতে গিয়ে দেখেছি, তাঁরা আপ্লুত হয়ে ওঠেন। রানার কথায়, “অনেকেই বলেন, ‛ছেলেমেয়েরা এখনও শুভেচ্ছা জানিয়ে ফোন করল না, অথচ তোমরা বাড়ি এসে উপহার দিয়ে গেলে?’ খুশি হয়ে ওঁরা তখন পাল্টা মিষ্টি খাওয়াতে চান আমাদের।”

বাসিন্দাদের একটি অংশের মতে, সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে বিশেষ দিন মনে রাখা কঠিন নয়। ওই সব দিনগুলিতে শুভেচ্ছা জানিয়ে ভূরি ভূরি বার্তা আসে ফেসবুকে। এ সবই অনলাইনে। তাই কেউ যদি বিশেষ দিনে বাড়ি এসে উপহার দিয়ে যায় সেটায় অন্য ভাল লাগা জুড়ে যায়।

এ ভাবে বছরভর শুভেচ্ছাপত্র পাঠানোর মধ্য দিয়ে জনসংযোগ করার লাভ ভোট বাক্সেও পড়ছে বলে দাবি দেবাশিসবাবুর। শুভেচ্ছাপত্রে কোনও রাজনৈতিক দলের নাম থাকে না। তবে স্থানীয় বিধায়কের ছবি থাকে। থাকে স্থানীয় কাউন্সিলর ও পুরসভার নাম। দেবাশিসবাবুর দাবি, “এ বার লোকসভা ভোটে দমদম লোকসভা কেন্দ্রে আমার ওয়ার্ড থেকেই শতকরা হিসেবে সব থেকে বেশি ভোট তৃণমূল পেয়েছে। এর অন্যতম কারণ মানুষের সঙ্গে এই জনসংযোগ তৈরি করা”

ভোট বাক্সের কথা ভেবেই যে জনসংযোগে জোর দিচ্ছেন, এমন নয় বলে দাবি দেবাশিসবাবুর। তাঁর মতে, “শুভেচ্ছাপত্র এবং উপহার দিতে গিয়ে কোনও বিরোধী সমর্থকের সঙ্গেও ভাব হয়ে যায়। ওই মানুষটির সঙ্গে রাজনৈতিক আদর্শ আলাদা হলেও বন্ধু হতে তো আপত্তি নেই!”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Councilor South Dumdum Municipality
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE