Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

মধ্যরাতে পিস্তলের মুখে লুট, ধৃত চার

সঙ্গী যুবক বাধা দিতে গেলে তাঁর মাথায় পিস্তলের বাট দিয়ে আঘাত করে ওই দুষ্কৃতীরা। ভয় পেয়ে তরুণী চিৎকার করে ওঠেন। তার পরেই এলাকা ছেড়ে চম্পট দেয় ওই দুই যুবক।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৪ নভেম্বর ২০১৮ ০১:৪০
Share: Save:

সিনেমা দেখে বেরিয়ে হেঁটে খাবার কিনতে যাচ্ছিলেন এক তরুণ ও তরুণী। আচমকাই তাঁদের পথ আটকায় একটি মোটরবাইক। দুই আরোহী নেমে এসে তরুণীর দিকে পিস্তল তাক করে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই তাঁর ব্যাগ ও মোবাইল ফোন কেড়ে নেয়। সঙ্গী যুবক বাধা দিতে গেলে তাঁর মাথায় পিস্তলের বাট দিয়ে আঘাত করে ওই দুষ্কৃতীরা। ভয় পেয়ে তরুণী চিৎকার করে ওঠেন। তার পরেই এলাকা ছেড়ে চম্পট দেয় ওই দুই যুবক।

বৃহস্পতিবার গভীর রাতে এই ঘটনা ঘটেছে যাদবপুর থানা এলাকার পোদ্দারনগরে। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগ পাওয়ার কিছু ক্ষণের মধ্যেই ওই দুই দুষ্কৃতীকে মোটরবাইক সমেত পাকড়াও করা হয়। তাদের জেরা করে আরও দুই দুষ্কৃতীকে ওই রাতেই গ্রেফতার করেছে যাদবপুর থানার পুলিশ। ধৃতদের কাছ থেকে দেশি পিস্তল ছাড়াও লুট করা মোবাইল ফোন, এটিএম কার্ড ও ব্যাগ উদ্ধার হয়েছে। পুলিশ জানায়, ধৃতদের কাছেও একটি ব্যাগ ছিল। তা থেকে জ্যান্ত সাপ ও একটি ছুরি পাওয়া গিয়েছে।

পুলিশের অনুমান, আগ্নেয়াস্ত্রের পাশাপাশি সাপের ভয় দেখিয়েও ছিনতাই করত তারা। ধৃতদের নাম ইউসুফ আলম, ইজাজ আহমেদ, রবীন আহমেদ এবং অরিজি়ৎ সিংহ। তাদের আজ, শনিবার আদালতে তোলা হবে। এর মধ্যে রবীন এবং অরিজিৎ স্থানীয় বাসিন্দা। তাদের বাড়িতেই আশ্রয় নিয়েছিল বাকি দুই দুষ্কৃতী। পুজোর আগে শহরের বুকে দুই জায়গায় দুষ্কৃতীরা আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে লুট করেছিল। পরে পুলিশ সেই দলটিকে ধরে। এর পরে ফের বৃহস্পতিবার রাতে দুষ্কৃতী হানার অভিযোগ উঠল।

পুলিশ জানায়, অভিযোগকারী অঞ্জন ভদ্র হরিদেবপুরের বাসিন্দা। সঙ্গী তরুণী থাকেন পাটুলিতে। বৃহস্পতিবার রাত দু’টো নাগাদ তাঁরা হাজরার কাছে এক জায়গায় সিনেমা দেখে খাবার কিনতে যাদবপুরের পোদ্দারনগরে গিয়েছিলেন। পুলিশের কাছে ওই যুবকের অভিযোগ, একটি গলি দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময়ে ওই দুষ্কৃতীদের মোটরবাইকটি তাঁদের সামনে এসে দাঁড়ায়। কিছু বোঝার আগেই দুই যুবক পিস্তল হাতে নেমে আসে। তরুণীর ব্যাগ ও মোবাইল কেড়ে নেয়। ওই যুবক বাধা দিতে গেলে দুষ্কৃতীদের এক জন তাঁর মাথায় বন্দুকের বাট দিয়ে মারে। এর পরে তাঁর কাছ থেকেও জিনিসপত্র ছিনিয়ে নেয়। তরুণী চিৎকার জুড়ে দিলে ওই দুষ্কৃতীরা প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোডের দিকে পালিয়ে যায়। পুলিশের এক কর্তা জানান, ওই দু’জন যাদবপুর থানায় পুরো ঘটনাটি জানাতেই অভিযুক্তদের ধরতে তদারকি শুরু করেন ডিসি (যাদবপুর) সন্তোষ নিম্বলকর।

পুলিশ জানায়, প্রথমেই দুষ্কৃতীদের বিবরণ দিয়ে আশপাশের টহলদার পুলিশকর্মীদের সজাগ করা হয়। আর তাতেই কাজ হয়। বিক্রমগড়ের কাছে দুষ্কৃতীদের মোটরবাইকটি যাদবপুর থানার টহলদার গাড়ির সামনে পড়ে যায়। অভিযোগকারীদের দেওয়া বিবরণের সঙ্গে মোটরবাইক আরোহীদের চেহারা মিলে যাওয়ায় পুলিশকর্মীরা গাড়ি থেকে নেমে অরিজিৎ ও ইউসুফকে পাকড়াও করেন। তাদের জেরা করে বিজয়গড়ে ইজাজের বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। তাকে জেরা করে সন্ধান মেলে রবীনের। উদ্ধার হয় লুটের টাকা-সহ বাকি জিনিসপত্র।

শুক্রবার ঘটনাস্থল কাছে এক বহুতলের আবাসিক জানান, গভীর রাতে মহিলার চিৎকার শুনে বারান্দায় এসে দেখতে পান, ওই যুগল কান্নাকাটি করছেন। বহুতলের অন্য এক আবাসিক ১০০ ডায়ালে ফোন করেন। পুলিশ কিছু ক্ষণের মধ্যেই চলে আসে বলে তাঁরা জানান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kolkata Police Loot Jadavpur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE