Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

রোগিণীকে ছেড়ে দিতে বলল কোর্ট

আদালতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের আইনজীবী দাবি করেন, ওই মহিলাকে আদৌ আটকে রাখা হয়নি। তাঁকে অনেক আগেই হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দিতে চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু বা়ড়ির লোকই তাঁকে নিয়ে যাচ্ছিলেন না।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০১:২৭
Share: Save:

স্ত্রী সুস্থ হয়ে গেলেও চিকিৎসার খরচ না মেটানোয় সল্টলেকের এক হাসপাতাল তাঁকে দেড় মাস ধরে আটকে রেখেছে, এই অভিযোগ তুলে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেছিলেন মহিলার স্বামী। বৃহস্পতিবার সেই মামলার শুনানিতে বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেয়, ওই মহিলাকে দুপুর একটার মধ্যে ছেড়ে দিতে হবে। ওই নির্দেশ কার্যকর হয়েছে কি না, পুলিশকে আদালতে হাজির হয়ে তা জানাতে বলা হয়েছিল। বেলা দুটোয় বিধাননগর উত্তর থানার ওসি আদালতে জানান, মহিলাকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। বাড়ির লোক এসে তাঁকে নিয়েও গিয়েছেন। তবে, আদালতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের আইনজীবী দাবি করেন, ওই মহিলাকে আদৌ আটকে রাখা হয়নি। তাঁকে অনেক আগেই হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দিতে চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু বা়ড়ির লোকই তাঁকে নিয়ে যাচ্ছিলেন না।

বন্দনা বাগচী নামে ওই মহিলা এন্টালির পদ্মপুকুর পার্কের বাসিন্দা। সল্টলেকের কলম্বিয়া এশিয়া হাসপাতালে শ্বাসকষ্টজনিত অসুস্থতা নিয়ে গত ১৩ ডিসেম্বর তিনি ভর্তি হন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান, বেশ কয়েক জন চিকিৎসক তাঁকে দেখছিলেন। পুরোপুরি সুস্থ হওয়ার পরে ২৬ ডিসেম্বর তাঁকে ‘ডিসচার্জ সার্টিফিকেট’ দেওয়া হয়। বন্দনাদেবীকে বাড়ি নিয়ে যেতে বলা হয় তাঁর পরিবারের লোকজনকে।

ওই মহিলার স্বামী সুবীর বাগচীর দাবি, স্ত্রীর চিকিৎসার খরচ হিসেবে তিনি এক লক্ষ দশ হাজার টাকা হাসপাতালে জমা দেন। তাঁর অভিযোগ, তার পরেও প্রায় দু’লক্ষ টাকা চিকিৎসার বিল হিসেবে দিতে বলা হয় তাঁকে। তা না মেটানোয় তাঁর স্ত্রীকে ছাড়া হচ্ছিল না। সুবীরবাবুর আইনজীবী সৌম্য দাশগুপ্ত এ দিন আদালতে জানান, তাঁর মক্কেল প্রথমে বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটে অভিযোগ জানান। পুলিশ সাহায্য না করায় তিনি স্বাস্থ্য কমিশনে অভিযোগ জানান। সেখান থেকেও তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়নি বলে তাঁর মক্কেলের অভিযোগ। উপায় না দেখে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন সুবীরবাবু।

এ দিন হাসপাতালের আইনজীবী শিবাজীকুমার দাস আদালতে পাল্টা দাবি করেন, ২৬ ডিসেম্বরের পরে একাধিকবার বন্দনাদেবীর পরিবারের লোকজনকে বলা হয়, হাসপাতালের টাকার প্রয়োজন নেই। তাঁকে যেন বাড়ি নিয়ে যাওয়া হয়। ই-মেল পাঠানো হয় সুবীরবাবুকেও। কিন্তু বন্দনাদেবীকে নিয়ে যাওয়া হয়নি। আদালতে পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) শাশ্বতগোপাল মুখোপাধ্যায় জানান, গোটা বিষয়টি হাসপাতাল ও মহিলার পরিবারের মধ্যে ঘটেছে। এ ক্ষেত্রে পুলিশের কিছু করার নেই।

সব পক্ষের বক্তব্য শুনে ডিভিশন বেঞ্চ বলে, মহিলা যখন বাড়ি ফিরে গিয়েছেন, তখন মামলার নিষ্পত্তি করে দেওয়া ছাড়া আর কিছু করার নেই। তবে, একই সঙ্গে ডিভিশন বেঞ্চ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দেয়, চিকিৎসার খরচের বিল মেটানো নিয়ে বিতর্ক থাকলে তাঁরা আইনমাফিক ব্যবস্থা নিতে পারেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Court High Court
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE