Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
Cyclone Amphan

বিদ্যুৎ নেই, জলের হাহাকার, দক্ষিণ কলকাতা জুড়ে অবরোধ-বিক্ষোভ

ঝড়ের তাণ্ডবে ভেঙে পড়া গাছপালা, বাঁশ তুলে এনে রাস্তায় ফেলে দেওয়া হয়েছে অনেক জায়গাতেই। ফলে যান চলাচলে ব্যাপক প্রভাব পড়েছে।

বেহালার বকুলতলায় অবরোধ, পুলিশকে ঘিরে ক্ষোভ স্থানীয় বাসিন্দাদের। নিজস্ব চিত্র

বেহালার বকুলতলায় অবরোধ, পুলিশকে ঘিরে ক্ষোভ স্থানীয় বাসিন্দাদের। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ মে ২০২০ ১৫:৩৪
Share: Save:

তিন দিন হয়ে গেল বিদ্যুত্ নেই। ফলে পাম্প চলছে না। জল নেই। হাঁসফাঁস দশা দক্ষিণ কলকাতার অনেকগুলো এলাকায়। অতিষ্ঠ মানুষজন শনিবার সকাল থেকে নেমে এলেন রাস্তায়। শহরের বিভিন্ন প্রান্তে চলছে বিক্ষোভ-অবরোধ।

বুধবার আমপানের (প্রকৃত উচ্চারণ উম পুন) তাণ্ডবের পর শহর থেকে জেলা— অন্ধকারে ডুবে গিয়েছিল। দক্ষিণ কলকাতায় বেহালা, টালিগঞ্জ, যাদবপুর, গড়িয়া এবং ইএম বাইপাস সংলগ্ন বহু এলাকায় এখনও বিদ্যুত্ ফিরে আসেনি। অবিলম্বে জল আর বিদ্যুতের দাবিতে, করোনা আতঙ্ক ভুলে গিয়েই, মানুষজন ভিড় করে পথে নেমে আসেন সকাল থেকে।

ঝড়ের তাণ্ডবে ভেঙে পড়া গাছপালা, বাঁশ তুলে এনে রাস্তায় ফেলে দেওয়া হয়েছে অনেক জায়গাতেই। ফলে যান চলাচলে ব্যাপক প্রভাব পড়েছে দক্ষিণ কলকাতায়। ফোনের নেটওয়ার্কেরও বেহাল অবস্থা। এক দিকে জল-বিদ্যুত্ নেই, তার উপর মোবাইলে যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। সব মিলিয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন বিভিন্ন এলাকার মানুষ। কলকাতা পুরসভার প্রশাসকমন্ডলীর চেয়ারম্যান ফিরহাদ হাকিম আশ্বাস দিয়েছেন, কাল, রবিবারের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে।

বেহালার পথ অবরোধ। নিজস্ব চিত্র

আরও পড়ুন: লকডাউনে বেতন নেই, তেলঙ্গানায় কুয়োয় ঝাঁপ দিয়ে বাঙালি পরিবার সহ আত্মঘাতী ৯

এ দিন সকাল থেকেই কসবার সাঁপুইপাড়াতে অবরোধ শুরু হয়। তার জেরে বাইপাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। গাছ ফেলে অবরোধ শুরু করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, “প্রশাসনের দেখা নেই। আমরা জল চাইছি, পুলিশ আমাদের মারছে। যত ক্ষণ না পর্যন্ত বিদ্যুত্ পাচ্ছি, অবরোধ উঠবে না।”

বেহালার বকুলতলাতেও বাঁশ ফেলে রাস্তা অবরোধ করেছেন বাসিন্দারা। চৌরাস্তা থেকে ডাকঘর পর্যন্ত একমাত্র এই রাস্তায় বিপর্যস্ত যানচলাচল। লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে গাড়ি। জল-বিদ্যুতের দাবিতে পুলিশকে ঘিরেও চলছে বিক্ষোভ। ওই এলাকার এক মহিলা বিক্ষোভকারী বলেন, “তিন দিন ধরে আলো-জল নেই, এ বার তো মরে যাব। প্রশাসন কোথায়? পরিষেবা না পাওয়া পর্যন্ত, অবরোধ উঠবে না।”

পানীয় জলের লাইন। নিজস্ব চিত্র

একই রকম ভাবে যাদবপুরের মণ্ডলপাড়াতেও বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। কলকাতা পুরসভার ১০৬ নম্বর ওয়ার্ডে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে এখনও। পানীয় জল না মেলায় ক্ষোভ ফেটে পড়েছেন এলাকাবাসী। যাদবপুর কানেক্টর থেকে ইএম বাইপাসে যাওয়া যায় ওই রাস্তা ধরে। আপাতত যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। ওই এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, সিইএসসি-র একজন কর্মীও এলাকায় আসেননি।

আরও পড়ুন: স্বাস্থ্যকর্মীরা ছাড়াও কারা খেতে পারেন হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন, সংশোধিত নির্দেশ আইসিএমআর-এর

বিজয়গড় পল্লিশ্রী এলাকাতেও পথ অবরোধ করে রেখেছেন এলাকাবাসী। তাঁদের বক্তব্য, সব থেকে বেশি সমস্যা হচ্ছে বয়স্কদের। পুরসভার তরফে কোনো সহযোগিতা মিলছে না বলে অভিযোগ।

রাস্তা থেকে গাছ সরানোর তদারকি করছেন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। নিজস্ব চিত্র

বড় রাস্তার পাশাপাশি, অনেক অলিগলিতেও চলছে অবরোধ। তবে দক্ষিণের তুলনায়, উত্তর কলকাতার পরিস্থিতি তুলনামূলক ভাল। অধিকাংশ জায়গাতেই জল-বিদ্যুত্ রয়েছে।

এ দিন শহরের বিভিন্ন এলাকায় পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে যান রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। সাদার্ন অ্যাভেনেউতে তিনি নিজে দাঁড়িয়ে থেকে কাজকর্মের তদারকি করেন। রাস্তা থেকে গাছ সরাতে পুরকর্মীদের সঙ্গে কাজ করছে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী, সিভিল ডিফেন্স, দমকল এবং কলকাতা পুলিশের বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE