Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

ভূগর্ভস্থ পথ ফাঁকা পড়ে, লাইন পেরোতে ঝোঁক

শিয়ালদহ থেকে বনগাঁ এবং হাসনাবাদ শাখার মাঝের গুরুত্বপূর্ণ জংশন এই বারাসত। স্থানীয় বাসিন্দারাই জানাচ্ছেন, আগে বারাসত স্টেশনের কাছে কলোনি মোড় থেকে হরিতলা মোড়ের মধ্যে ছিল একটি রেলগেট।

সুনসান: ফাঁকা পড়ে ভূগর্ভস্থ পথ। ছবি: সুদীপ ঘোষ

সুনসান: ফাঁকা পড়ে ভূগর্ভস্থ পথ। ছবি: সুদীপ ঘোষ

অরুণাক্ষ ভট্টাচার্য
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ অক্টোবর ২০১৯ ০২:০৪
Share: Save:

এত দিন পারাপারের কোনও পথ ছিল না। তাই রেললাইন পেরোতে গিয়ে দুর্ঘটনা ঘটছিল হামেশাই। সেই প্রবণতা ঠেকাতে ভূগর্ভস্থ পথ হয়েছিল। তবু সে পথ ব্যবহার করছেন না বেশির ভাগই। ট্রেনের সামনে দিয়ে হেঁটে বা দৌড়ে রেললাইন পারাপারেই যেন স্বচ্ছন্দ মানুষ। বারাসত জংশন স্টেশনে গেলেই দেখা যাবে এই দৃশ্য। রেলের দাবি, বারবার প্রচার সত্ত্বেও হুঁশ নেই বেশির ভাগ যাত্রীদের।

শিয়ালদহ থেকে বনগাঁ এবং হাসনাবাদ শাখার মাঝের গুরুত্বপূর্ণ জংশন এই বারাসত। স্থানীয় বাসিন্দারাই জানাচ্ছেন, আগে বারাসত স্টেশনের কাছে কলোনি মোড় থেকে হরিতলা মোড়ের মধ্যে ছিল একটি রেলগেট। সেই পথ দিয়েই রিকশা, গাড়ি পারাপার করত। পরে সেই রেলগেটের উপরে কলোনি মোড় থেকে চাঁপাডালি মোড় পর্যন্ত তৈরি হয় উড়ালপুল। কিন্তু সেখান দিয়ে রিকশা, সাইকেল এবং পথচারীর যাতায়াত নিষিদ্ধ করা হয়। আবার সেতুর নীচে যেখানে আগে রেলগেট ছিল, সেখান দিয়ে যাতায়াতও বন্ধ করে দেয় রেল। ফলে বারাসত শহরটি কার্যত দু’ভাগ হয়ে যায়। পারাপারের জন্য বেগ পেতে হত বাসিন্দাদের।

সে জন্য ওই রেলগেটের কাছে একটি ভূগর্ভস্থ পথ তৈরির দাবি ছিল দীর্ঘদিন ধরেই। বারাসতের সাংসদ কাকলি ঘোষদস্তিদার বলেন, ‘‘এ নিয়ে সংসদ ও রেলের কাছে বারবার দরবার করার পর রেল ভূগর্ভস্থ পথটি তৈরি করে।’’ লক্ষাধিক টাকা খরচ করে তৈরি ওই পথ কয়েক মাস আগেই চালু হয়। সম্প্রতি সেখানে গিয়ে দেখা গেল, হাতো গোনা যাত্রীরা ওই পথ ব্যবহার করছেন। বেশির ভাগ মানুষ ঝুঁকি নিয়েই রেললাইন পার হচ্ছেন। এমনকি ট্রেনের সামনে দিয়ে হাতে সাইকেল তুলে লাইন পেরোচ্ছেন কেউ কেউ।

কেন ভূগর্ভস্থ পথ ব্যবহার করছেন না? সে প্রশ্ন এড়িয়ে গিয়েছেন তাঁদের অনেকেই। সাইকেল হাতে পার হওয়া এক যুবক অবশ্য বলেন, ‘‘ওপারেই আমার দোকান। সাইকেল নিয়ে ভূগর্ভস্থ পথ দিয়ে যাওয়া যায় না।’’ এক বৃদ্ধার দাবি, ‘‘পায়ে ব্যাথা, সিঁড়ি চড়তে পারি না।’’ কারও আবার অভিযোগ, ‘‘বৃষ্টি হলেই জল চুঁইয়ে পড়ে ছাদ থেকে। ভূগর্ভস্থ পথেই তো জল জমে যায়।’’ পূর্ব রেল অবশ্য জানাচ্ছে, ‘‘জল পড়ার খবর পাওয়া মাত্রই তা মেরামত করা হয়েছে।’’

রেলের দাবি, লাইন পারাপার আটকাতে রেলপুলিশ জরিমানা করে। কর্তব্যরত এক পুলিশকর্মী বলেন, ‘‘রেললাইন পারাপার করতে নিষেধ করলে অনেক সময়েই কথা কাটাকাটি শুরু হয়ে যায়। বারবার দুর্ঘটনা, মৃত্যুর পরেও যাত্রীদেরই যদি টনক না নড়ে, কী করব!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Barasat Subway
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE