Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

রাত বাড়তেই যান উধাও, বিপাকে পড়ছেন নিত্যযাত্রীরা

বাস থাকে না। অটোও মেলে না। ভরসা তখন ম্যাটাডর আর শেয়ার ট্যাক্সি। অনেক সময়ে তাও না মিললে পেট্রোল ট্যাঙ্কারে ঝুলেও যাত্রীদের যাতায়াত করতে দেখা যায়।

নেই যান। বাধ্য হয়ে ঝুঁকির যাত্রা। ছবি: অরুণ লোধ।

নেই যান। বাধ্য হয়ে ঝুঁকির যাত্রা। ছবি: অরুণ লোধ।

জয়তী রাহা
শেষ আপডেট: ২৭ জুন ২০১৫ ০০:১৬
Share: Save:

বাস থাকে না। অটোও মেলে না। ভরসা তখন ম্যাটাডর আর শেয়ার ট্যাক্সি। অনেক সময়ে তাও না মিললে পেট্রোল ট্যাঙ্কারে ঝুলেও যাত্রীদের যাতায়াত করতে দেখা যায়। অভিযোগ, রাত সাড়ে আটটার পরে তারাতলা মোড় থেকে চটা, চড়িয়াল, বাটানগর, সন্তোষপুর, বজবজ, পুজালি, আছিপুর যেতে নিত্যযাত্রীদের এ ভাবেই দুর্ভোগ পোহাতে হয়।

মহেশতলা পুর এলাকার ডাকঘরের বাসিন্দা তরুণ শীল, মেটিয়াবুরুজের প্রবীর বিশ্বাস এবং সন্তোপুরের সৌমেন বারিক কর্মক্ষেত্র থেকে ফেরার পথে রোজই এই সমস্যার মুখোমুখি হন। তারাতলা মোড় থেকে বেশ কয়েকটি রুটের অটো চলে। একটি মেটিয়াবুরুজের দিকে, অন্যগুলি ব্রেস ব্রিজ ঘুরে সন্তোষপুর, মোল্লার গেট এবং ব্যানার্জি হাট, চটা হয়ে বেহালার মোড় পর্যন্ত। মোল্লার গেট থেকে অন্য একটি রুটের অটোয় বজবজ, পুজালি কিংবা অছিপুর যাওয়া যায়। আর আছে সরকারি এবং বেসরকারি কয়েকটি বাসরুট। তবে রাত বাড়তেই সে সবও উধাও হয়ে যায় বলে অভিযোগ জানাচ্ছেন নিত্যযাত্রীরা। তখন মেটিয়াবুরুজ, বদরতলা, সন্তোষপুর-সহ বিস্তীর্ণ এলাকার বাসিন্দাদের শেয়ার ট্যাক্সি, ম্যাটডর ভরসা। নিত্যযাত্রীরা জানাচ্ছেন, বাস তো বন্ধই হয়ে যায়। অটো থাকে। তবে প্রয়োজনের তুলনায় সামান্য। বহু ক্ষণ অপেক্ষা করে কখনও মেলে। কখনও তাও পাওয়া যায় না। রুটগুলির ইউনিয়নের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাঁরা এর কোনও ব্যাখ্যা দিতে রাজি হয়নি। তবে তারাতলা থেকে মোল্লার গেট রুটের অটো ইউনিয়নের সদস্য কার্তিক মজুমদার মেনে নিচ্ছেন এই অভিযোগ। তাঁর দাবি, ‘‘রাত দশটা পর্যন্ত অটো চালু থাকে। কিন্তু বাস বন্ধ হয়ে যায়। বৃষ্টি বা দুর্যোগ থাকলে দিনেও অটো বের করা যায় না।’’ তিনি আরও জানাচ্ছেন, যে দিকে যাত্রীর চাপ থাকে না সেখান থেকে অটোগুলি যাত্রী বোঝাই না হওয়া পর্যন্ত ছাড়ে না। ফলে উল্টোদিকে যাত্রী চাপ সত্ত্বেও প্রয়োজন মতো অটো যেতে পারে না।

স্থানীয় রিজিওনাল ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (আরটিএ) সূত্রের খবর, অটোর সংখ্যা এবং সময় নিয়ন্ত্রণের কোনও অধিকার তাদের নেই। সরকারি বাসের সময়, সংখ্যা সরাসরি নিয়ন্ত্রণ করে পরিবহণ দফতর। কলকাতার আরটিও সূত্রের খবর, কোন এলাকায় ক’টি বাস চলবে তা নিয়ে ২০০৩-এ শেষ বার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। গত ১৩ বছরে জনসংখ্যা বাড়লেও বাসের সংখ্যা বাড়েনি। তার মধ্যে আদালতের নির্দেশে ১৫ বছরের পুরনো অনেকগুলি বাস উঠে যাওয়ায় সমস্যা আরও বেড়েছে।

মহেশতলা, বজবজ, পুজালি এলাকা আলিপুর আরটিএ-এর আওতায় পড়ে। আলিপুর-এর রিজিওনাল ট্রান্সপোর্ট অফিসার চপল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘অটোর নিয়ন্ত্রণ আমরা করতে পারি না। তবে বেসরকারি বাসের সময়সূচী নিয়ে যাবতীয় সমস্যা যাত্রীদের অথবা কোনও প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমাদের লিখিত ভাবে জানালে সকলকে নিয়ে আলোচনায় বসে সমাধানের চেষ্টা করব।’’ বজবজ পুরসভার উপপ্রধান তৃণমূলের গৌতম দাশগুপ্ত বলছেন, ‘‘অভিযোগ শুনেছি। এই সমস্যা বাঞ্ছনীয় নয়। যথাযথ ব্যবস্থা নিতে উচ্চতর কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে। পাশাপাশি আরটিও আলিপুরকেও চিঠি দেব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bus Daily passenger road Taxi RTA
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE