ক্ষুব্ধ: অটোর দাদাগিরির অভিযোগ তুলে পথ অবরোধ করলেন নিত্যযাত্রীরা। সোমবার, উল্টোডাঙায়। ছবি: স্নেহাশিস ভট্টাচার্য
অটোর জুলুমের বিরুদ্ধে ক্ষোভের ধিকিধিকি আগুন জ্বলছিল অনেক দিন ধরেই। তারই বহিঃপ্রকাশ হল সোমবার, সপ্তাহের প্রথম দিনে উল্টোডাঙায় পনেরো নম্বর বাস স্ট্যান্ডের সামনে। ব্যস্ত অফিসের সময়ে সকাল সাড়ে ন’টা থেকে দশটা পর্যন্ত পথ অবরোধ করেন সাধারণ মানুষ। এর জেরে কার্যত স্তব্ধ হয়ে যায় উল্টোডাঙা মোড় সংলগ্ন সবক’টি রাস্তা।
যখন যেমন ইচ্ছে ভাড়া চাওয়া, নির্দিষ্ট স্ট্যান্ডে না দাঁড়িয়ে যেখান সেখান থেকে যাত্রী তোলা, যাত্রী-প্রত্যাখান, গন্তব্যস্থল পর্যন্ত না যাওয়া— এ সব দাদাগিরি উল্টোডাঙা রুটে দীর্ঘ দিন ধরেই চলছে বলে অভিযোগ।
পুলিশ সূত্রে খবর, সোমবারও ভাড়া নিয়েই প্রথমে দুই যাত্রীর সঙ্গে এক অটোচালকের গন্ডগোল শুরু হয়েছিল। অভিযোগ, উল্টোডাঙা মোড়ে থেকে সেক্টর ফাইভের ভাড়া ২৫ টাকা হলেও অটো চালকেরা কোনও দিন ১০০ টাকা, কোনও দিন আরও বেশি ভাড়া দাবি করেন। বেশির ভাগ দিনই যাত্রীরা আপস করতে বাধ্য হন। এক যাত্রী অসীম বসু বলেন, ‘‘পনেরো নম্বর বাস স্ট্যান্ডের কাছে বহুক্ষণ অটোর অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকার পরে একটা অটো আসে। চালক সাফ জানান, ২৫ টাকায় যাবেন না। বেশি ভাড়া লাগবে।’’
এর পরেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন অপেক্ষারত যাত্রীরা। কয়েক মুহূর্তের মধ্যে ১৫ নম্বর বাস স্ট্যান্ডের সামনের রাস্তায় কয়েকশো মানুষ ভিড় জমিয়ে বিক্ষোভ দেখানো শুরু করেন। এক বিক্ষোভকারী বলেন, ‘‘স্ট্যান্ডে লম্বা লাইন থাকলেও সেখানে অটো নেই। অথচ রাস্তা থেকে মাঝপথে অটো যাত্রী তুলে নিয়ে চলে যাচ্ছে। বাধ্য হয়েই আমরা রাস্তায় নেমে অটো ধরি। কেন অটো নির্দিষ্ট স্টপে থামবে না?’’
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, উল্টোডাঙা থেকে ১৩টি রুটে তিন হাজারের মতো অটো চলে। অভিযোগ, প্রায় অর্ধেক অটোই বেআইনি এবং এগুলিই কোনও স্ট্যান্ডে দাঁড়ায় না। উল্টোডাঙা অটোরিকশা অপারেটর্স ইউনিয়নের সদস্য অশোক দাস বলেন, ‘‘আমাদের ইউনিয়নের অধীনে সব অটো ছাড়ে নির্দিষ্ট স্ট্যান্ড থেকেই। কারা অন্য রুটে অটো চালান ও বেশি ভাড়া নেন, জানা নেই।’’
উল্টোডাঙা ট্র্যাফিক গার্ডের ওসি তন্ময় উপাধ্যায় বলেন, ‘‘বারাসত থেকে পারমিট জোগাড় করে উল্টোডাঙায় অটো নিয়ে নেমে পড়ছেন অনেকে। আমরা বারবার মোটর ভেহিকেলসকে জানিয়েছি, পারমিট হাতে নিয়ে নিয়ে বেআইনি রুটে যাঁরা অটো চালাচ্ছেন তাঁদের চিহ্নিত করতে।’’
পরিবহণ দফতরের এক আধিকারিক বলেন, “বেআইনি অটো ঠেকাতে, রুট পিছু অটোর সংখ্যা বেঁধে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। অটো নীতি কার্যকর হলে এ নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ সম্ভব হবে।” এলাকার বিধায়ক তথা ক্রেতা সুরক্ষা মন্ত্রী সাধন পাণ্ডে বলেন, ‘‘জুলুমবাজি সহ্য করা হবে না। অটো ইউনিয়নগুলির সঙ্গে আলোচনায় বসব।’’
কলকাতা শহরের রোজকার ঘটনা, কলকাতার আবহাওয়া, কলকাতার হালচাল জানতে চোখ রাখুন আমাদের কলকাতা বিভাগে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy