Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

এটিএম কার্ড ‘ক্লোন’ করে চলত অবাধে তথ্য চুরি

এই কাণ্ডে গ্রেফতার হওয়া তিন রোমানীয় যুবক অ্যাড্রিয়ান লিভিউ, কর্নেল কনস্টানটাইন এবং নানাকে জেরা করে এমনই জানতে পেরেছেন কলকাতা পুলিশের তদন্তকারীরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১১ অগস্ট ২০১৮ ০১:০৯
Share: Save:

এটিএম কার্ড ক্লোন করে ডার্ক ওয়েবের মাধ্যমে ব্যাঙ্ক গ্রাহকদের তথ্য সংগ্রহ করত রোমানীয় জালিয়াতেরা। এই কাণ্ডে গ্রেফতার হওয়া তিন রোমানীয় যুবক অ্যাড্রিয়ান লিভিউ, কর্নেল কনস্টানটাইন এবং নানাকে জেরা করে এমনই জানতে পেরেছেন কলকাতা পুলিশের তদন্তকারীরা। তাঁরা জানিয়েছেন, ডার্ক ওয়েব হল ইন্টারনেটের একটি প্রযুক্তি, যাতে ব্যবহারকারীর পরিচয় এবং অবস্থান গোপন থাকে। এমনকি কোথা থেকে ওই তথ্য তারা সংগ্রহ করেছে তা-ও জানা যায় না।

তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, ইন্টারনেট ব্যবহারে তুখোড় অ্যাড্রিয়ানই মূলত গ্রাহকদের এটিএম কার্ড ক্লোন করে তথ্য সংগ্রহ করার কাজ করত। সে এই ভাবে কত সংখ্যক এটিএম কার্ড ক্লোন করেছে, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা-প্রধান প্রবীণ ত্রিপাঠী শুক্রবার বলেন, ‘‘অ্যাড্রিয়ানকে জেরা করে তার ভূমিকা অনেকটাই জানা সম্ভব হয়েছে। বাকি দু’জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।’’ এ দিন অ্যাড্রিয়ান, কনস্টানটাইন ও নানাকে ব্যাঙ্কশাল আদালতে তোলা হলে সরকারি আইনজীবী অভিজিৎ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ধৃতদের বিরুদ্ধে তদন্তকারীদের হাতে যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছে, তারা কার্ড ক্লোন করে টাকা তুলত। উদ্ধার হয়েছে ক্লোনিং মেশিন-সহ বেশ কিছু জিনিস।’’ এর পরেই বিচারক ওই তিন জনকে ১৪ দিনের পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।

তদন্তে নেমে গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, চলতি বছরের এপ্রিল মাসে অ্যাড্রিয়ান কলকাতায় এসে আলিপুরের একটি হোটেলে সপ্তাহ দুই ছিল। ওই ১৫ দিন সে কী করেছিল, তা খতিয়ে দেখছেন তাঁরা। পাশাপাশি অভিযুক্তদের জেরা করে জানা গিয়েছে, কার্ড ক্লোন করার মেশিন-সহ অন্য জিনিসপত্র তারা কিনেছিল চিন থেকে। সেখান থেকে ওই সব মেশিনপত্র নিয়ে আসা হয়েছিল নেপালে। গোয়েন্দাদের সন্দেহ, ওই দেশে তাদের নকল কার্ড তৈরির ঘাঁটি রয়েছে। সে কারণে তারা মাঝেমধ্যেই নেপালে যাতায়াত করত।

তদন্তকারীদের দাবি, জিজ্ঞাসাবাদে নানা তাদের জানিয়েছে, বিমানে নেপালে যেতে গেলে অভিবাসন দফতরের অনেক কড়াকড়ি রয়েছে। তাই তারা সড়কপথে যেতেই পছন্দ করত। দিন দুই আগে ভারত-নেপাল সীমান্তবর্তী এলাকা সোনালি থেকে গ্রেফতার হয় নানা। সে ওই এলাকার প্রধান রাস্তা দিয়ে না গিয়ে ঘুরপথে যাওয়ার চেষ্টা করছিল। গোয়েন্দারা আশা করছেন, নানাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এই জালিয়াতদের সঙ্গে নেপাল-যোগের বিষয়ে আরও একাধিক তথ্য জানা যাবে।

কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা-প্রধান প্রবীণ ত্রিপাঠী জানিয়েছেন, গ্রেফতার হওয়া তিন যুবক রোমানিয়ায় কী করত, সে বিষয়ে সবিস্তার জানার জন্য ওই দেশের কনস্যুলেটের সঙ্গে তাঁরা কথা বলছেন। সেই সঙ্গে চলতি বছরের মার্চ থেকে এখনও পর্যন্ত কত জন রোমানীয় নাগরিক টুরিস্ট ভিসা নিয়ে ভারতে এসেছেন, সেই তথ্যও জোগাড় করা হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Dark Web ATM Fraudsters Data Theft
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE