Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

গাছের কোটরে উদ্ধার মৃতদেহ

ঘটনাটি ঘটেছে মধ্য হাওড়ার কালীবাবুর বাজারের কাছে ঈশ্বর দত্ত লেনে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃত যুবকের নাম সুরজ সাউ (২৬)। বাড়ি ওই এলাকাতেই।

সুরজ সাউ

সুরজ সাউ

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৬ জুন ২০১৮ ০২:১২
Share: Save:

আট ফুট বাই দশ ফুট একটি গলি। তারই একপাশে বহু পুরনো বটগাছ। সেই গাছের গোড়ায় প্রাকৃতিক ভাবেই তৈরি হয়েছিল অতিকায় কোটর, যেখানে চোলাই মদ আর জুয়ার ঠেক বসাত স্থানীয় দুষ্কৃতীরা। মঙ্গলবার সকালে ওই কোটর থেকেই উদ্ধার হল এক যুবকের পচাগলা মৃতদেহ। যাঁর দেহে মিলেছে আঘাতের চিহ্ন।

ঘটনাটি ঘটেছে মধ্য হাওড়ার কালীবাবুর বাজারের কাছে ঈশ্বর দত্ত লেনে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃত যুবকের নাম সুরজ সাউ (২৬)। বাড়ি ওই এলাকাতেই। তিনি জমি-বাড়ির দালালি করতেন। পুলিশ সূত্রের খবর, পাঁচ দিন ধরে সুরজ নিখোঁজ ছিলেন। এ দিন বাড়ির কাছেই ওই বটগাছের কোটরে তাঁর দেহ মিললেও মোবাইল পাওয়া যায়নি। তবে বাড়ি থেকে একটি চিঠি পাওয়া গিয়েছে। সেটি সুইসাইড নোট কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পুলিশের কাছে মৃতের পরিবারের অভিযোগ, প্রোমোটারি চক্রের জেরে সুরজকে খুন করে ওখানে ফেলে যাওয়া হয়েছে। পুলিশ একটি খুনের মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে।

পুলিশ সূত্রের খবর, বটগাছের কোটর থেকে দুর্গন্ধ বেরোতে থাকায় এ দিন এলাকাবাসীর সন্দেহ হয়। এর পরে তাঁরাই কোটরের সামনে ঝোলানো কাপড় সরিয়ে দেখতে পান, ভিতরে পড়ে সুরজের পচাগলা দেহ। পুলিশ এসে মৃতদেহটি ময়না-তদন্তে পাঠিয়ে দেয়। বিকেলে ঘটনাস্থলে আসেন ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞেরা।

এ দিন ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, এলাকার লোকজন ভিড় করেছেন ওই বটগাছের সামনে। তাঁদের অভিযোগ, ওই কোটরের ভিতরে সিমেন্ট দিয়ে বাঁধিয়ে চাতাল তৈরি করে বসত মদ, জুয়ার আসর। এলাকার বাসিন্দা মহুয়া সাঁতরা বলেন, ‘‘পুলিশকে বারবার বলেছি। কিন্তু দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এখন ওই জায়গা দিয়ে দিনের বেলাও যেতে ভয় করে। ’’

ওই পাড়ায় সপরিবার ভাড়া থাকেন সুরজের বাবা রাজকুমার সাউ। তাঁর অভিযোগ, সম্প্রতি সুরজ শ্যামাশ্রী সিনেমা এলাকায় একটি ফ্ল্যাট বিক্রি করা নিয়ে মানসিক অশান্তিতে ভুগছিলেন। তার জেরে আত্মঘাতী হওয়ার চিন্তাও শুরু করেন। সে কথা কাগজে লিখেও রাখেন দিন পনেরো আগে। ওই চিঠির কথা জানার পরে পরিবারের তরফে তাঁকে বোঝানোর চেষ্টা হয়েছিল। রাজকুমারবাবু বলেন, ‘‘ওকে অনেক বুঝিয়েছিলাম। কিন্তু বৃহস্পতিবার ও বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। তার পরে আর ফেরেনি। সোমবার ওর মোবাইলে রিং হয়েছিল। কিন্তু তার পরে সেটি বন্ধ হয়ে যায়।’’

প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, দেহটি তিন-চার দিনের পুরনো। অর্থাৎ, নিখোঁজ হওয়ার দু’-এক দিনের মধ্যেই সুরজের মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু নিত্যদিন যেখানে মদ-জুয়ার ঠেক বসে, সেখানে দেহ কারও চোখে পড়ল না কী ভাবে? তা হলে কি অন্য কোথাও খুন করে দেহটি পরে কোটরে ফেলে যাওয়া হয়েছিল? পুলিশ জানিয়েছে, ফরেন্সিক রিপোর্ট পেলেই বিষয়টি পরিষ্কার হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Dead body Tree hole
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE