প্রতীকী ছবি।
অ্যালোপ্যাথির নানান শাখা, শল্য চিকিৎসা-সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে কিছু ভুয়ো চিকিৎসক ইতিমধ্যে ধরা পড়েছেন। এ বার ভুয়ো দাঁতের ডাক্তারেরও হদিস পেল সিআইডি। ভুয়ো দন্ত চিকিৎসকদের সংগঠিত চক্রের সঙ্গে নথিভুক্ত কিছু দাঁতের ডাক্তারের যোগসাজশ আছে বলেও তদন্তে জানতে পেরেছেন গোয়েন্দারা।
গোয়েন্দা সূত্রের খবর, রাজ্য ডেন্টাল কাউন্সিলের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমে গোটা রাজ্যে ছড়িয়ে থাকা দেড়শোর বেশি ভুয়ো দন্ত চিকিৎসকের সন্ধান মিলেছে। তবে দাঁতের জাল ডাক্তারের সংখ্যা পাঁচশোরও বেশি বলে খবর। বারাসত থেকে ইতিমধ্যে দুই ভুয়ো দন্ত চিকিৎসককে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁদের জেরা করে বাকিদের সন্ধানে তল্লাশি শুরু করেছে সিআইডি।
গোয়েন্দারা জানাচ্ছেন, দাঁতের ভুয়ো চিকিৎসকদের বেশির ভাগই নামের পাশে ‘ডেন্টাল সার্জেন’ অথবা ‘বিডিএএস’ (ব্যাচেলর ডেন্টাল অল্টারনেটিভ সার্ভিস) তকমার উল্লেখ করেন। বাস্তবে ওই ডিগ্রির কোনও অস্তিত্ব নেই বলে গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন। এ রাজ্যে মূলত ব্যাচেলর অব ডেন্টাল সার্জারি (বিডিএস) এবং মাস্টার অব ডেন্টাল সার্জারি (এমডিএস)-র ডিগ্রিধারীরা দাঁতের চিকিৎসা করেন। এর বাইরে ডেন্টাল কাউন্সিল অব ইন্ডিয়ার অনুমোদিত বেশ কয়েকটি বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রিধারীদের চিকিৎসার অধিকার রয়েছে। রাজ্য ডেন্টাল কাউন্সিলের কাছ থেকে সিআইডি জেনেছে, এ রাজ্যে ৫৫২০ জন নথিভুক্ত দন্ত চিকিৎসক রয়েছেন। তদন্তকারীদের দাবি, নথিভুক্ত দন্ত চিকিৎসক ছাড়া যাঁরা দাঁতের চিকিৎসা করছেন, তাঁদের সকলেই ভুয়ো। রাজ্য ডেন্টাল কাউন্সিলের সদস্য রাজু বিশ্বাস বলেন, ‘‘আমরা ভুয়ো চিকিৎসকদের তালিকা সিআইডি-কে দিয়েছি। তাঁদের ধরতে গোয়েন্দাদের সাহায্যও করছি।’’
গোয়েন্দা সূত্রের খবর, ২২ জুন রাজ্য ডেন্টাল কাউন্সিল বারাসত থানায় উত্তর ২৪ পরগনার তিন ভুয়ো দন্ত চিকিৎসক এবং দু’টি ক্লিনিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে। তদন্তে নেমে বারাসত থেকে দু’জনকে গ্রেফতার করে সিআইডি। তারা জানায়, ওই চক্রের পিছনে এক শ্রেণির নথিভুক্ত দন্ত চিকিৎসক রয়েছেন। তাঁরা নিজেদের রেজিস্ট্রেশন নম্বর ভুয়ো ডাক্তারদের ভাড়া দিয়ে চেম্বার চালাতে সাহায্য করছেন। সাইনবোর্ডে ওই নম্বর লিখে ভুয়ো দাঁতের চিকিৎসকেরা বিভিন্ন এলাকায় চেম্বার খুলে বসেছেন। রাজ্যের বেশ কয়েকটি বেসরকারি হাসপাতালে দন্তরোগের বিশেষজ্ঞ হিসেবে তাঁরা মোটা টাকা ভিজিটও নিচ্ছেন। মে মাসে ভুয়ো চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে অভিযানে নামে সিআইডি। ধরা পড়েন সাত জন। সেই দলে সরকারি চিকিৎসকও ছিলেন। সেই সূত্রেই তদন্তকারীরা জানতে পারেন, রাজ্যে পাঁচশোর বেশি ভুয়ো দন্ত চিকিৎসক লোক ঠকিয়ে চলেছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy