প্রস্তাবটা ছিল বহু দিন ধরেই। ২০১৩ সালে এই প্রস্তাব দেওয়ার পরে বছরের পর বছর ধরে তা বাস্তবায়িত না হওয়ায় স্বাভাবিক ভাবেই কিছুটা হতাশ হয়ে পড়েছিলেন কলকাতা পুলিশের ডগ স্কোয়াডের কর্মীরা। অবশেষে সরকারি স্তরে মিলল অনুমতি। স্বরাষ্ট্র দফতর সূত্রে খবর, শহরের নিরাপত্তাকে গুরুত্ব দিয়ে কলকাতা পুলিশে তৈরি হচ্ছে পৃথক ৮টি ‘ডগ স্কোয়াড’। বাহিনীর আধুনিকীকরণে সম্প্রতি পর্যায়ক্রমে খরচ হয়েছে প্রায় এক কোটি টাকা। স্বরাষ্ট্র দফতরের এক অফিসার জানান, এই বিকেন্দ্রীকরণ নিয়ে সম্প্রতি আলোচনা হয়েছে নবান্নে। এই প্রকল্পে অর্থ মঞ্জুরের ব্যাপারেও সরকারি সম্মতি মিলেছে।
রেসকোর্সের পাশে কলকাতা পুলিশ ট্রেনিং স্কুলে ৪৫ বছর আগে তৈরি হয় সারমেয় বাহিনী। এখন তাদের সদস্য সংখ্যা ৩৫। এর মধ্যে আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু রোডে পুলিশ ট্রেনিং স্কুলে রয়েছে ২৫টি কুকুর। বাকি ১০টি রয়েছে বালিগঞ্জ ফাঁড়ির কাছে। প্রয়োজনে সেখান থেকেই পুলিশ কুকুরদের ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়।
লালবাজারের এক কর্তা জানাচ্ছেন, কলকাতা পুলিশের এলাকা বেড়েছে। ফলে বন্দর এলাকার নাদিয়াল, উত্তরের সিঁথি বা দক্ষিণ শহরতলিতে বোমাতঙ্ক হলে সেখানে পৌঁছতে যানজটে নাকাল হতে হয়। তাই ডগ স্কোয়া়ডের বিকেন্দ্রীকরণের প্রস্তাব পাঠানো হয় লালবাজারে। সেখান থেকে তা পাঠানো হয় নবান্নে।
স্থির হয়েছে কলকাতা পুলিশের ৮টি ডিভিশনের প্রতিটিতে রাখা হবে ৪টি করে কুকুর। অর্থাৎ, আরও ৩২টি কুকুর আসবে। এ জন্য সংশ্লিষ্ট দফতরকে প্রতি ডিভিশনে ১টি করে সারমেয় বাহিনীর পরিকাঠামো তৈরি করতেও বলা হয়েছে। পুলিশ জানায়, শহরে বেশ কিছু স্পর্শকাতর এলাকা রয়েছে। সেই এলাকার থানাতেই এই বাহিনীকে রাখা জরুরি। প্রাথমিক ভাবে এক-একটি বিভাগের জন্য এক-একটি থানাকে বেছে নেওয়া হয়েছে। মধ্য বিভাগের তালতলা থানা, বন্দর বিভাগের গার্ডেনরিচ, উত্তর বিভাগের জন্য মানিকতলা এলাকায় ডিসি-র অফিসে পুলিশ কুকুরদের রাখার ভাবনা রয়েছে।
আধুনিকীকরণ প্রকল্পে সারমেয় বাহিনীর এলাকাও বাড়ানো হয়েছে। অনুশীলনের জন্য সাজানো হয়েছে ‘সফ্ট কোর্ট’ ও ‘হার্ড কোর্ট’। রয়েছে সুইমিং পুল, চিকিৎসালয় এবং কুকুরদের দেখভাল করার কর্মীদের থাকার জায়গা। বিভাগটির অফিসার-ইন-চার্জ রাজনারায়ণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বাহিনীর জন্য বরাদ্দ অ্যাম্বুল্যান্সটিকে অপারেশন থিয়েটার করার প্রস্তাবও পাঠানো হয়েছে স্বরাষ্ট্র দফতরে।’’ এখন শুধু অপেক্ষা পরিকল্পনা বাস্তবায়নের। তবুও বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত সংশয় কাটছে না ডগ স্কোয়াডের কর্মীদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy