উপহার হাতে এক রক্তদাতা। ৫৫ নম্বর ওয়ার্ডে। নিজস্ব চিত্র
এক হাতে ধরা চা করার বৈদ্যুতিক যন্ত্র। অন্য হাতে সেই যন্ত্রেরই কার্যকারিতা বোঝাচ্ছেন এক যুবক। সদ্য উপহার পেয়ে সামনে দাঁড়ানো এক ব্যক্তি বললেন, ‘‘রক্ত দিয়ে তা হলে ভালই হয়েছে। ঘুরতে গেলে চা করে খাওয়া যাবে!’’ এ বার যুবকের সম্মতি-বার্তা, ‘‘প্রতি বারই আমরা ভাল ভাল জিনিস দিই। তবু রক্ত দিতে আপনাদের ডেকে আনতে হয়। পরের বার নিজে থেকে আসবেন।’’
স্বাস্থ্য দফতরের লাগাতার প্রচার, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কড়া হুঁশিয়ারি সত্ত্বেও উপহারের বিনিময়ে প্রকাশ্যে রক্তদান চলছে শহরের বিভিন্ন জায়গায়। রবিবারই কলকাতা পুরসভার ৫২ এবং ৫৫ নম্বর ওয়ার্ডে উপহারের বিনিময়ে রক্তদান কর্মসূচি হয়েছে। রক্তদাতারাই জানাচ্ছেন, ৫২ নম্বর ওয়ার্ডে উপহার হিসেবে ‘ডিনার সেট’ এবং ৫৫ নম্বর ওয়ার্ডে চা করার বৈদ্যুতিক যন্ত্র দেওয়া হয়েছে। দুই জায়গাতেই রক্তদান কর্মসূচির আয়োজক ছিল রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল। ৫২ নম্বর ওয়ার্ডে ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের উদ্যোগে এবং স্থানীয় কাউন্সিলর সন্দীপ সাহার সহায়তায় রক্তদান কর্মসূচি হয়েছে। ৫৫ নম্বর ওয়ার্ডে আবার উদ্যোক্তা ছিলেন স্বয়ং স্থানীয় কাউন্সিলর অরুণ দাস!
দুই কাউন্সিলরই অবশ্য উপহারের বিনিময়ে রক্তদানের কথা অস্বীকার করেছেন। অরুণবাবু বলেন, ‘‘প্রতি বারই আমরা কিছু না কিছু দিই। তবে এ বার কিছু দিইনি।’’ সন্দীপবাবুর বক্তব্য, এখন তো উপহার দিয়ে রক্তদান বন্ধ। ফলে উপহারের ব্যবস্থা রাখার প্রশ্নই ওঠে না। তিনি বলেন, ‘‘আমরা খাবার দিয়েছি।’’
বিধিভঙ্গ: ৫২ নম্বর ওয়ার্ডের রক্তদান শিবির ঘিরেও তৈরি হয়েছে বিতর্ক। রবিবার। নিজস্ব চিত্র
যদিও রক্তদান কর্মসূচির সঙ্গে যুক্তেরাই কেউ কেউ অভিযোগ করেছেন, দু’জায়গাতেই রক্ত দিয়ে উপহার হাতে বাড়ি ফিরতে দেখা গিয়েছে অনেককে। ৫৫ নম্বর ওয়ার্ডে মোট ২৫০ ইউনিট রক্ত মিলেছে। ৫২ নম্বর ওয়ার্ডে হয়েছে ১৫২ ইউনিট। রাজ্য রক্ত সঞ্চালন পর্ষদের পরিচালন সমিতির সদস্য সংগঠনের পক্ষ থেকে অচিন্ত্য লাহা বলেন, ‘‘বেশি রক্তের তো প্রয়োজন নেই। উপহার দিলে অনেকে রোগ লুকিয়ে রক্ত দেন। তা আদতে কাজেও লাগে না। এ ব্যাপারে সকলের সতর্ক হওয়া প্রয়োজন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy