সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের ভিত্তিতে কারা কারা গাড়িতে লালবাতি ব্যবহার করতে পারবেন, তার নির্দেশিকা জারি করেছিল রাজ্য পরিবহণ দফতর। তার মধ্যে ফ্ল্যাশার-সহ ও ফ্ল্যাশার ছাড়া কারা লালবাতি ব্যবহার করতে পারবেন, তার তালিকাও ঘোষণা করা হয়েছিল।
সেই তালিকায় দেখা গিয়েছে, পুরনিগমের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র কলকাতার মেয়র পদের জন্য লালবাতির ব্যবহারের উল্লেখ রয়েছে। তাও ফ্ল্যাশার ছাড়া। দেখা গেল, সেই নির্দেশের সঙ্গে বাস্তবের মিল নেই। এমনকী, শাসক দলের জনপ্রতিনিধিরাও গাড়িতে লালবাতির ব্যবহারের নিয়ম সম্পর্কে ধোঁয়াশায়।
তবে সোমবার বিধাননগর মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিধাননগরের মেয়র সব্যসাচী দত্ত, ডেপুটি মেয়র তাপস চট্টোপাধ্যায় ও চেয়ারপার্সন কৃষ্ণা চক্রবর্তীকে গাড়িতে লালবাতি ব্যবহার করতে দেখা গিয়েছে। কিন্তু রাজ্য পরিবহণ দফতরের নির্দেশিকায় কলকাতা বাদে অন্য কোনও পুরনিগমের কোনও পদাধিকারীর গাড়িতে লালবাতি ব্যবহার করার কথার উল্লেখ নেই।
আর সেখানেই বিতর্ক। কার্যত রাজ্যের আইনমন্ত্রী, পুরমন্ত্রী থেকে শুরু করে বিধাননগর পুরনিগমের মেয়র, ডেপুটি মেয়র কিংবা চেয়ারপার্সনের কাছে সেই প্রশ্নের কোনও সদুত্তর
মিলল না।
আইনমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য গাড়িতে লালবাতির ব্যবহার নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি। মেয়র সব্যসাচী দত্ত বলেন, ‘‘উপযুক্ত জায়গায় কথা বলুন।’’ ডেপুটি মেয়র তাপস চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমি এই বিষয়ে ওয়াকিবহাল নই।’’ চেয়ারপার্সন কৃষ্ণা চক্রবর্তীর কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। কলকাতা পুরসভার চেয়ারপার্সন মালা রায় অবশ্য সাফ জানিয়েছেন, তাঁর এই অধিকার আছে কি না, তা তিনি জানেন না। তবে স্বয়ং রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই যেখানে গাড়িতে লালবাতি ব্যবহার করেন না, সেখানে তাঁর লালবাতি ব্যবহারের প্রশ্নই ওঠে না।
প্রশ্ন উঠেছে, যদি নির্দেশিকা সম্পর্কে কেউ ওয়াকিবহাল না হল, তবে তাঁরা কী ভাবে গাড়িতে লালবাতি ব্যবহার করছেন? পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের কথায়, ‘‘আমার কাছে তালিকা নেই। তাই এই বিষয়ে বলতে পারব না।’’
বিধাননগর পুরপ্রশাসনের একাংশের দাবি, রাজ্য সরকার সুপ্রিম কোর্টে যে তালিকা জমা দিয়েছিল, তাতে শুধু মেয়রের জন্য লালবাতি ব্যবহারের উল্লেখ ছিল। রাজ্য পরিবহণ দফতরের এক কর্তাও সে কথা মেনে নিয়ে জানান, অন্য কোনও পুরনিগমের কোনও পদাধিকারীর ক্ষেত্রে এমন উল্লেখ নেই।
ইতিমধ্যে বিধাননগর পুরনিগমের পক্ষ থেকে কত জন পদাধিকারীর গাড়িতে বেকন লাইট ব্যবহার করা যাবে, তা জানতে চেয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে সূত্রের খবর। এখনও অবশ্য রাজ্য পরিবহণ দফতরের তরফে কোনও উত্তর পায়নি পুরনিগম।
তবে লালবাতির এমন যথেচ্ছ ব্যবহার যে শুধু রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ তা নয়, কোনও কোনও ক্ষেত্রে ধর্মীয় সংগঠনের শীর্ষে থাকা ব্যক্তির গাড়িতেও অবলীলায় লালবাতি জ্বলে। কোনও বিধি, কোনও আইনেই সে আলো নেভেনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy