Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

‘নারীদেহ প্রদর্শনকারী উত্তেজক পোশাকের উৎপাদন ও বিপণন বন্ধ করতে হবে’, পোস্টার পড়ল শ্যামবাজারে

গত শুক্রবার ওই ব্যানারটির ছবি তুলে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেন উৎসব চন্দ্র নামে এক ব্যক্তি। তিনি সোমবার বলেন, “শ্যামবাজারের কাছ দিয়ে যাওয়ার সময়ে হঠাৎই ব্যানারটি চোখে পড়ে।

শ্যামবাজার মোড়ের কাছে টাঙানো এই দু’টি পোস্টার ঘিরেই শুরু হয়েছে বিতর্ক। নিজস্ব চিত্র

শ্যামবাজার মোড়ের কাছে টাঙানো এই দু’টি পোস্টার ঘিরেই শুরু হয়েছে বিতর্ক। নিজস্ব চিত্র

নীলোৎপল বিশ্বাস
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ ডিসেম্বর ২০১৯ ০২:৩৮
Share: Save:

পোশাক ফতোয়া সংক্রান্ত ব্যানার পড়ল এ বার খাস কলকাতায়। শ্যামবাজার মোড়ের কাছে লাগানো সেই ব্যানারে ‘নারীদেহ প্রদর্শনকারী উত্তেজক পোশাকের উৎপাদন ও বিপণন বন্ধ করতে হবে’ বলে মন্তব্য করা হয়েছে। নীচে লেখা ‘বাঙালি মহিলা সমাজ’। এই ব্যানার ঘিরে ইতিমধ্যেই বিতর্ক শুরু হয়েছে। কয়েক জন ওই ব্যানারের পাশেই কালো কাগজে পাল্টা লিখে দিয়ে এসেছেন, ‘মধ্যযুগীয় হাম্বা। পোশাক ধর্ষণের কারণ নয়।’

গত শুক্রবার ওই ব্যানারটির ছবি তুলে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেন উৎসব চন্দ্র নামে এক ব্যক্তি। তিনি সোমবার বলেন, “শ্যামবাজারের কাছ দিয়ে যাওয়ার সময়ে হঠাৎই ব্যানারটি চোখে পড়ে। দেশ জুড়ে ধর্ষণ নিয়ে যখন তোলপাড় চলছে, তখন এই ধরনের মধ্যযুগীয় ভাবনা মানতে পারিনি। পোশাক যে কোনও সমস্যার কারণ নয়, সেটা বলতেই ছবিটা পোস্ট করেছিলাম।” সেই ছবি নিয়েই এর পরে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিতর্ক শুরু হয়। অনেকেই সেখানে লেখেন, ‘উত্তেজক পোশাক কোনটি, আর কোনটি নয়, সেটা কে ঠিক করে দেবে? নাবালিকা, এমনকি শিশুদের সঙ্গেও এমন ঘৃণ্য ঘটনা ঘটে যা পোশাকের জন্য হয় না।’

সোশ্যাল মিডিয়াতেই এর পরে ওই ব্যানারের বিরুদ্ধে শ্যামবাজার চত্বরে জমায়েতের ডাক দেন কয়েক জন। এলাকাটি শ্যামপুকুর থানার অন্তর্গত হওয়ায় সেখানে গিয়ে তাঁরা জমায়েতের অনুমতি নেন। সেই মতো রবিবার ওই ব্যানারের সামনে হাজির হয়ে ১৮ জনের একটি দল পাল্টা পোস্টার টাঙিয়ে দিয়ে আসেন। ওই দলেরই এক জন, ঋক ধর্মপাল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “প্রথমে ঠিক করেছিলাম, ওই ব্যানারের উপরে কালো কালি দিয়ে ছিঃ লিখে দেব। কিন্তু যে দোকানের সামনে ব্যানারটি লাগানো ছিল, তার মালিক বারণ করলেন। কারণ, যাঁরা ওই ব্যানার লাগিয়ে গিয়েছেন, তাঁরা হামলা করতে পারেন।”

সোমবার ওই দোকানদারের সঙ্গে কথা বলতে গেলে তিনি এ বিষয়ে কিছু বলতে চাননি। তাঁর মন্তব্য, “আমার নাম যেন প্রকাশ না হয়। কোনও ঝামেলায় জড়াতে চাই না। যাঁরা ব্যানার লাগিয়েছেন তাঁদের সঙ্গে কথা বলুন।” তবে এ দিন রাত পর্যন্ত বেশ কয়েকটি সংগঠনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও কেউই ওই ব্যানারটির দায়িত্ব নিতে চাননি। স্থানীয় হাতিবাগান বাজার মার্চেন্টস ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের তরফে রঞ্জন রায় বলেন, “ব্যক্তি স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপকারী এই ব্যানার কারা লাগালেন, পুলিশের তদন্ত করা উচিত।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE