ধৃত পরিচারিকা, ড্রাইভার
সম্পত্তি হাতাতে আটাত্তর বছরের বৃদ্ধকে দীর্ঘ দিন ধরে বিষ খাইয়ে মৃত্যুর পথে ঠেলে দিয়েছেন তাঁরই পরিচারিকা। শুধু তাই নয়, মৃত্যুর পর পরিবারের কাউকে না জানিয়ে দেহ পাচার করে দেওয়ার অভিযোগ উঠল সেই পরিচারিকা এবং বৃদ্ধের গাড়ির চালকের বিরুদ্ধে।
অভিযুক্ত দু’জনকেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
সল্টলেকের ইই ব্লকের একটি আবাসনের দোতলায় থাকতেন নগরোন্নয়ন দফতরের অবসরপ্রাপ্ত কর্মী পৃথ্বীবরণ গঙ্গোপাধ্যায়। স্ত্রী গত হয়েছেন কয়েক বছর আগেই।তার পর থেকে একাই থাকতেন তিনি। তাঁকে দেখাশোনা করতেন পুরনো পরিচারিকা জবা চক্রবর্তী।
শনিবার রাতে প্রতিবেশীরা দেখেন আবাসনের সামনে একটি শববাহী গাড়ি দাঁড়িয়ে। স্বভাবতই তাঁদের মনে প্রশ্ন জাগে কার মৃত্যু হয়েছে আবাসনে। দেখা যায়, চাদরে মুড়ে দোতলার ফ্ল্যাট থেকে একটি দেহ নামিয়ে আনছেন রঞ্জিত সাঁতরা। আবাসনের বাকি বাসিন্দারা জানেন, তিনি পৃথ্বীবরণের গাড়ির চালক।
ওই আবাসনের তিনতলার এক বাসিন্দা বলেন, “আমরা জিজ্ঞাসা করি কখন মৃত্যু হয়েছে? র়ঞ্জিত একেক বার একেক রকম উত্তর দেন। তাতে আমাদের সন্দেহ হয়। আমরা বৃদ্ধের ভাইকে ফোন করি। তিনি এই ব্লকেই থাকেন। দাদার মৃত্যুর ব্যাপারে তিনিও কিছু শোনেননি বলে আমাদের জানান।”
আরও পড়ুন: নন্দরাম থেকে বাগরি, জ্বলেই চলেছে বাজার, শহরে ১০ বছরের খতিয়ান
সন্দেহ হওয়ায় দেহ আটকে রাখেন প্রতিবেশীরা। তত ক্ষণে চলে আসেন বৃদ্ধের ভাই দিব্যেন্দু গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি অভিযোগ করেন, পরিবারের কেউ দেখা করতে গেলে ওই পরিচারিকা পৃথ্বীবাবুর শারীরিক অসুস্থতার অজুহাতে দেখা করতে দিতেন না। দিব্যেন্দু বলেন, “ওই পরিচারিকা এর আগে দাবি করেছিলেন,দাদা ফ্ল্যাটের একাংশ তাঁকে লিখে দিয়েছিলেন ২০১৬ সালে।”
আরও পড়ুন: এক বছরে মাঝেরহাটে নতুন সেতু! এত কম সময়ে গড়া কি সম্ভব?
স্থানীয় বাসিন্দাদের প্রশ্নের মুখে জবা এবং তাঁর সঙ্গী রঞ্জিত একটি ডেথ সার্টিফিকেট দেখান। সেটি কাদাপাড়া এলাকার এক চিকিৎসকের। জবা এবং রঞ্জিত দাবি করেন, স্থানীয় কোনও চিকিৎসক ডেথ সার্টিফিকেট দিতে অস্বীকার করায় তাঁরা কাদাপাড়ার চিকিৎসকের কাছ থেকে মৃত্যু শংসাপত্র নিয়ে এসেছেন। তাতে আরও সন্দেহ হয় বৃদ্ধের পরিবারের। রাতেই বিধাননগর পূর্ব থানায় অভিযোগ দায়ের করেন বৃদ্ধের ভাই দিব্যেন্দু। অভিযোগে তিনি জানিয়েছেন, হুগলির পুরশুড়ার বাসিন্দা জবা এবং ফুলবাগানের বাসিন্দা রঞ্জিত ষড়যন্ত্র করে দীর্ঘদিন ধরে পৃথ্বীবরণকে অল্প অল্প করে বিষ খাইয়েছেন, এবং তাঁর অসুস্থতার সুযোগ নিয়ে সম্পত্তি হাতানোর পরিকল্পনা করেছিলেন।
রাতেই অভিযুক্তদের আটক করা হয়।জি়জ্ঞাসাবাদের পর সকালে দু’জনকেই গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ সূত্রে খবর, জেরায় রঞ্জিত জানিয়েছেন, কাদাপাড়ার ওই চিকিৎসক তাঁর পূর্ব পরিচিত। পুলিশ সেই চিকিৎসককেও ডেকে পাঠিয়েছে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য।
(কেমন যাবে কলকাতার আজকের আবহাওয়া, জানতে সব সময় চোখ রাখুন আমাদের কলকাতা বিভাগে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy