Advertisement
১৯ মার্চ ২০২৪
Drug

শহরে ধৃত মাদক পাচারকারী বাংলাদেশে খুনে অভিযুক্ত

ধৃতের সঙ্গে অন্য কোনও ঘটনার যোগ রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে কলকাতা পুলিশের স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্সের (এসটিএফ) সঙ্গেও কথা বলা হচ্ছে বলে খবর।

উদ্ধার হওয়া মাদক। নিজস্ব চিত্র

উদ্ধার হওয়া মাদক। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ এপ্রিল ২০১৯ ০০:০০
Share: Save:

কলকাতায় মাদক পাচারকারী হিসেবে ধৃত ব্যক্তি বাংলাদেশে খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত! অন্তত গোয়েন্দা পুলিশের সামনে জেরায় ধৃত তেমনটাই জানিয়েছে বলে লালবাজারের দাবি। মঙ্গলবার কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা প্রধান প্রবীণ ত্রিপাঠী জানান, সম্প্রতি কলিন স্ট্রিট থেকে গ্রেফতার হওয়া তাপস আহমেদের আসল নাম মহম্মদ হুসেন সঈদ। ওই যুবক জেরায় বলেছে, ‘‘বাংলাদেশে খুন করে এসেছি। গত দেড়-দু’বছর ধরে সেখানকার পুলিশ আমায় খুঁজছে।’’ এর পরেই তাঁরা বাংলাদেশে যোগাযোগ করেছেন বলে জানান গোয়েন্দা প্রধান। ধৃতের সঙ্গে অন্য কোনও ঘটনার যোগ রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে কলকাতা পুলিশের স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্সের (এসটিএফ) সঙ্গেও কথা বলা হচ্ছে বলে খবর।

গত ৩ এপ্রিল কলিন স্ট্রিট থেকে ওই বাংলাদেশিকে গ্রেফতার করা হয়। ধৃতের কাছে প্রায় ৮০ হাজার টাকা মূল্যের ইয়াবা মাদক উদ্ধার হয়েছে বলে জানায় পুলিশ। ধর্মতলা, পার্ক স্ট্রিট এবং ফ্রি স্কুল স্ট্রিটের বেশ কয়েকটি হোটেল এবং লজে ওই মাদক পাচার করা হত বলে অভিযোগ। ধৃতের থেকে তথ্য পেয়ে সোমবার রাতে পার্ক স্ট্রিট থানা এলাকার মার্কুইস স্ট্রিট থেকে পিন্টু ঘোষ নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেন গোয়েন্দারা। তাঁর কাছ থেকে ৩৫৮টি অর্থাৎ প্রায় ১৭ হাজার টাকার ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার হয়েছে বলে লালবাজার জানায়। টুর এবং ট্র্যাভেল সংস্থার মালিক পিন্টুকে জেরা করে এর পরে কলকাতায় মাদক পাচার চক্রের বেশ কয়েকটি নয়া দিক উঠে এসেছে বলে পুলিশ সূত্রের খবর। পিন্টু এবং তাপসের ঘনিষ্ঠ প্রায় ২০ জন এজেন্টের নামও গোয়েন্দাদের হাতে এসেছে। তাদের খোঁজে তল্লাশি করা হচ্ছে।

গোয়েন্দারা জেনেছেন, বাংলাদেশ থেকে ব্যবসার কাজে কলকাতায় আসা বাংলাদেশি নাগরিকদের ওই মাদক পাচারের কাজে ব্যবহার করে চক্রটি। তাঁদের ব্যাগে ৩০-৪০টির মতো ট্যাবলেট দিয়ে সীমান্ত পার করিয়ে কলকাতায় নিয়ে আসা হত। ব্যাগে খুব কম সংখ্যায় ট্যাবলেট থাকায় বৈধ ভিসা থাকা ওই ব্যবসায়ীরা সীমান্তে ধরাও পড়ছেন না। তাপসের মাধ্যমে শহরে আসার পরে মধ্য কলকাতার বিভিন্ন হোটেলে তাঁদের রাখার ব্যবস্থা করত পিন্টু। সেখানেই হাত বদল হত মাদক ট্যাবলেট। পরে তা পিন্টুর মাধ্যমে স্কুল-কলেজের পড়ুয়া থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের গ্রাহকের কাছে পৌঁছে যেত। স্থানীয় এজেন্ট মারফত ট্যাবলেট পৌঁছত পার্ক সার্কাস, নারকেলডাঙা, রাজাবাজারের মতো এলাকাতেও। তদন্তকারীদের দাবি, ওই মাদকের ক্রেতাদের একটি বড় অংশ পার্ক স্ট্রিট, নিউ মার্কেট এলাকার হোটেল ও গেস্ট হাউসে থাকা ভিন্‌ দেশের নাগরিকেরা। যার মধ্যে বাংলাদেশের নাগরিকরাও আছেন বলে জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা।

পুলিশ জানিয়েছে, মায়ানমার-সহ বিভিন্ন দেশে অত্যন্ত জনপ্রিয় ওই ইয়াবা ট্যাবলেট। বেশ কিছু দেশ এই ট্যাবলেটটি নিষিদ্ধও ঘোষণা করেছে। বাংলাদেশে ২০ গ্রামের বেশি ইয়াবা ট্যাবলেট রাখার সাজা মৃত্যুদণ্ড। বাংলাদেশের থেকে এখানে প্রায় তিন গুণ বেশি দামে ওই মাদক ট্যাবলেট বিক্রি করা হয়। ফলে ব্যবসার জন্য এ দেশে আসা বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের অনেকেই খুব সহজে তা নিয়ে আসার জন্য রাজি হয়ে যান। তাতে তাঁদের ‘রথ দেখা কলা বেচা’ দুইই হত বলে দাবি গোয়েন্দাদের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Drug Smuggling Arrest Bangladesh
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE