প্রতীকী ছবি
পানশালা থেকে গাড়ি চালিয়ে সবে বেরিয়েেছন এক যুবক। পথ আটকাল পুলিশ। ‘ব্রেথ অ্যানালাইজার’ মুখের সামনে ধরতেই জানা গেল তিনি নেশাগ্রস্ত। তবে বেশি ঝক্কি পোহাতে হয়নি ওই যুবককে। জরিমানার টাকা দিতেই ছাড় পেয়ে গিয়েছিলেন তিনি।
এ ছবি বদলাতে চলেছে। লালবাজার থেকে থানা ও ট্র্যাফিকের ওসিদের কাছে মৌখিক নির্দেশ গিয়েছে, নেশাগ্রস্ত অবস্থায় গাড়ি চালাতে গিয়ে ধরা পড়লে মামলা রুজু করে লক-আপে পুরতে হবে অভিযুক্তকে। থানা থেকে জামিনের বদলে পরদিন আদালত থেকে জামিন নিতে হবে। এক পুলিশকর্তার কথায়, ‘‘জরিমানা দিলে সহজেই ছাড় পাওয়া যায়। তাই শিক্ষা দিতে এক রাত লক-আপ বাসের কথা ভাবা হয়েছে।’’
এই নির্দেশ ঘিরে প্রশ্ন উঠেছে পুলিশমহলেই। অনেকে বলছেন, আমজনতা না হয় নেশা করে লক-আপে ঢুকল। কিন্তু নাইট ক্লাব চত্বর থেকে যে সব অভিজাত ও প্রভাবশালী ঘরের ছেলেমেয়েরা ধরা পড়বে, তাঁদের লক আপে পুরে শিক্ষা দেওয়া যাবে কি? পুলিশের অন্দরেই খবর, লক আপে পোরা তো দূর অস্ত, প্রভাবশালীদের ছেলেমেয়েদের কাছ থেকে জরিমানা আদায় করতেই থরহরি কম্প হবেন নিচু ও মাঝারি তলার পুলিশকর্মীরা। ফলে এই নির্দেশ বাস্তবে কতটা কাজে আসবে, তা নিয়েও যারপরনাই ধন্দে অনেকে।
অপরাধ জরিমানা*
* জরিমানার অঙ্ক টাকায়
ট্র্যাফিক পুলিশের অফিসারেরা বলছেন, এ শহরে রাস্তায় নিয়ম না মানাটাই দস্তুর। তা সে সিগন্যাল মানাই হোক বা নির্দিষ্ট গতিতে গা়ড়ি চালানো। জরিমানার টাকা দিলে ছাড় মিলবে, এমনটাও যেন মনে গেঁথে গিয়েছে। এক ট্র্যাফিক সার্জেন্টের কথায়, ‘‘সিগন্যাল ভাঙলে ১০০ টাকা জরিমানা। এটাই লোকের ধারণা। কিন্তু সিগন্যাল ভাঙলে যে দুর্ঘটনায় লোকের প্রাণ যেতে পারে সেটা বোঝা উচিত।’’ এক পুলিশকর্তা বলেন, ‘‘জরিমানা আদায় পুলিশের উদ্দেশ্য নয়। জরিমানার ভয় দেখিয়ে আইন মানতে শেখানোই লক্ষ্য। তাই মত্ত চালকদের লক-আপে পুরতে বলা হয়েছে।’’
তা হলে জরিমানা বাড়ছে না কেন?
পুলিশ সূত্রে খবর, সিগন্যাল ভাঙলে ১০০ টাকা জরিমানা হয়। কিন্তু তা প্রথম বারে। তা জমা না দিলে আদালত সেই জরিমানার অঙ্ক বাড়াতে পারে। যদি দেখা যায়, একই জায়গায় বা একই গাড়ি বারবার একই অপরাধ করছে, তবে শাস্তির মাত্রা বেশি হতে পারে। সে ক্ষেত্রে ট্র্যাফিক সার্জেন্টদের হাতে সাময়িক ভাবে লাইসেন্স বাজেয়াপ্ত করার সুপারিশের ক্ষমতাও দেওয়া হয়েছে। অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার পদেমর্যাদার কেউ সার্জেন্ট ও অভিযুক্তের কথা শুনে তিন মাসের জন্য লাইসেন্স বাজেয়াপ্ত করবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy