Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
ফ্যান্সি মার্কেট

উদ্ধার ৮ হাজার জাল মোবাইল ও যন্ত্রাংশ

কলকাতার বন্দর এলাকার কিছু দোকানে তাদের নকল লোগো লাগানো মোবাইল ও তার যন্ত্রাংশ অবাধে বিকোচ্ছে বলে দিল্লি হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেছিল এক বহুজাতিক সংস্থা। এর পরে আদালতের নির্দেশে দু’বার অভিযানও চালিয়েছিল পুলিশ। কিন্তু বাধা এসেছিল এলাকার দোকানদার ও বাসিন্দাদের একাংশের থেকে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৩ অগস্ট ২০১৫ ০১:৪৯
Share: Save:

কলকাতার বন্দর এলাকার কিছু দোকানে তাদের নকল লোগো লাগানো মোবাইল ও তার যন্ত্রাংশ অবাধে বিকোচ্ছে বলে দিল্লি হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেছিল এক বহুজাতিক সংস্থা। এর পরে আদালতের নির্দেশে দু’বার অভিযানও চালিয়েছিল পুলিশ। কিন্তু বাধা এসেছিল এলাকার দোকানদার ও বাসিন্দাদের একাংশের থেকে। শনিবার কলকাতা পুলিশেরই বড় বাহিনীর সাহায্য নিয়ে ওয়াটগঞ্জ এলাকা থেকে আট হাজার জাল মোবাইল ও তিন হাজারেরও বেশি ফোনের যন্ত্রাংশ উদ্ধার করলেন দিল্লি হাইকোর্টের অফিসারেরা। তাদের কাজে সাহায্য করেন অভিযোগকারী ওই বহুজাতিক সংস্থার প্রতিনিধিরাও।
গত বছর ডিসেম্বর মাসে দিল্লি হাইকোর্ট কলকাতা পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছিল ওই সব দোকানগুলিতে অভিযান চালিয়ে নকল ফোন ও তার যন্ত্রাংশ বাজেয়াপ্ত করতে। লালবাজারের কর্তারা চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে ফ্যান্সি মার্কেটের কিছু দোকানে অভিযানে নামেন। কিন্তু দোকানদার ও স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের বাধায় ওই অভিযান চালানো সম্ভব হয়নি বলে জানা গিয়েছে। পরেও ফের একবার অভিযানে নামলে কার্যত এলাকার বাসিন্দাদের একাংশের হাতে মার খেয়ে ফিরে আসতে হয় পুলিশকে।
এর পরে ১৭ জুলাই ফের অভিযানের নির্দেশ দেয় দিল্লি হাইকোর্ট। লালবাজারের এক কর্তা জানান, সেই কারণে এ দিনের অভিযানের প্রস্তুতি নেওয়া হয় শুক্রবার সন্ধ্যা থেকেই। ব্যাটেলিয়ান ছাড়াও বন্দর-সহ কলকাতা পুলিশের বিভিন্ন থানা ও রিজার্ভ ফোর্স থেকে প্রচুর সংখ্যক পুলিশকর্মীকে মোতায়েন করা হয় ওয়াটগঞ্জের বহুতল বাণিজ্যিক কমপ্লেক্সগুলিতে। তাঁদের দাবি, বড় বাহিনী ছিল বলেই ফ্যান্সি মার্কেট থেকে এত জাল মোবাইল বাজেয়াপ্ত করা গিয়েছে।

এর পরে শনিবার দুপুর সওয়া ১২টা নাগাদ দিল্লি হাইকোর্টের ৩৮ জনের একটি দল কার্ল মার্কস সরণির পাশে ডেন্ট ম্যাসন রোড এবং মনসাতলা লেন-সহ ফ্যান্সি মাকের্ট চত্বরে জড়ো হন। কয়েকটি ছোট দলে হয়ে ভাগ হয়ে লাঠিধারী ও সাদা পোশাকের পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে অভিযান শুরু করেন বহুজাতিক সংস্থার অফিসার, কোর্ট কমিশনার, তদন্তকারী অফিসারেরা। তবে তাঁদের দাবি, এ দিন সামান্য বাধা এলেও খুব একটা অসুবিধার মুখে পড়তে হয়নি।

বিভিন্ন কমপ্লেক্সের দোকানে গিয়ে সংস্থার মোবাইল, ব্যাটারি, হেডফোন-সহ বিভিন্ন যন্ত্রাংশ তাঁরা পরীক্ষা
করতে থাকেন। বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে দোকান এবং গুদামগুলি বন্ধ থাকায় গ্যাস-কাটার দিয়ে কেটে দোকানগুলি খুলে মালপত্র পরীক্ষা করা হয়। অনেক ক্ষেত্রেই মোবাইলগুলি বাক্সবন্দি ছিল না। সেগুলি প্লাস্টিকের প্যাকেটের মধ্যে সিল করা ছিল। এ দিন সমস্ত মালপত্র উদ্ধার করে প্রথমে তা জমা করা হয় ওয়াটগঞ্জ থানায়। পরে সেগুলি তুলে দেওয়া হয় ওই বহুজাতিক সংস্থার হাতে।

তবে, সাড়ে তিন ঘণ্টা অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ মালপত্র উদ্ধার করেও সন্তুষ্ট নন দিল্লির অফিসারেরা। দিল্লি হাইকোর্টের এক কমিশনার নগেন্দ্র বেণী পালের কথায়, ‘‘শুক্রবার রাতেও আমরা দেখে এসেছিলাম ওই এলাকার কোন কোন দোকানে বেশি জাল মোবাইল রয়েছে। আমাদের সন্দেহ, অভিযানের আগেই কোনও ভাবে আঁচ পেয়ে অনেক জাল জিনিসপত্র সরিয়ে ফেলেছেন দোকানদারেরা।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Duplicate mobile fancy market kolkata high court
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE