Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

নড়বড়ে পরিষেবা নিয়েই পুজো পার করল মেট্রো

খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়েও দু’কোটি ছুঁয়ে ফেলার পথে পুজোর মেট্রো।

চতুর্থী থেকেই মেট্রোয় আছড়ে পড়ে জনস্রোত। নিজস্ব চিত্র

চতুর্থী থেকেই মেট্রোয় আছড়ে পড়ে জনস্রোত। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২১ অক্টোবর ২০১৮ ০০:৩০
Share: Save:

খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়েও দু’কোটি ছুঁয়ে ফেলার পথে পুজোর মেট্রো।

হাজার চেষ্টার পরেও পুজোতে মেট্রোর নতুন রেক চালানো যায়নি। নড়বড়ে নন-এসি রেক নিয়ে ভি়ড়ের সময়ে মেট্রো কর্তাদের শঙ্কার অন্ত ছিল না। ভিড়ের চাপে কখনো মেট্রোর কামরার দরজা বন্ধ করা যায়নি, আবার কখনও আটকে গিয়েছে প্ল্যাটফর্মে ঢোকার গেট। ঠাসাঠাসি ভিড়ের মধ্যে রেক বিকল হওয়ার ঘটনাও ঘটেছে।

কিন্ত তার পরেও পুজোর মাসে অতীতের সব নজির ভেঙে মেট্রোর যাত্রী সংখ্যা ২ কোটি পেরিয়ে যাবে বলে মনে করছেন মেট্রো রেলের কর্তারা।

মেট্রো সূত্রের খবর, চতুর্থী থেকে নবমীর মধ্যে প্রতিদিনই গড়ে সাত লক্ষের বেশি যাত্রী যাতায়াত করেছেন মেট্রোতে। এর মধ্যে ষষ্ঠীর দিন যাতায়াত করেছেন ৯ লক্ষ ১১ হাজার যাত্রী, যা মেট্রোর ইতিহাসে সর্বোচ্চ। চতুর্থী থেকে দশমী পর্যন্ত মেট্রোয়

মোট যাত্রী হয়েছে ৩৯ লক্ষ ১০ হাজারেরও বেশি।

দমদম, শোভাবাজার, কালীঘাটের মতো কয়েকটি স্টেশনে পুজোর কয়েক দিনে কার্যত সমুদ্রের স্রোতের মতো ভিড় আছড়ে পড়েছে। ভিড় সামলাতে গিয়ে হিমশিম খেয়েছেন মেট্রোর নিরাপত্তা রক্ষী থেকে অন্য কর্মীরা। ষষ্ঠীর দুপুরে ভিড়ের চাপে কালীঘাট স্টেশনে কিছু সময়ের জন্য প্ল্যাটফর্মে ঢোকার প্রবেশ পথ বন্ধ করে দিতে হয়। দমদমে টোকেন এবং স্মার্ট কার্ড ব্যবহারের গেট কাজ না করায় যাত্রীদের ক্ষোভের মুখে পড়েন মেট্রো কর্মীরা। আপৎকালীন পরিস্থিতি সামলাতে টোকেনের বদলে কাগজের টিকিটও ব্যবহার করতে হয়েছে। ষষ্ঠীতে সেন্ট্রাল মেট্রো স্টেশনে একটি এসি রেক থেকে ধোঁয়া বেরোতে থাকে। আতঙ্ক ছড়ায় যাত্রীদের মধ্যে। বিকল সেই রেকের জন্য মেট্রো চলাচল বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে বেশ কিছু ক্ষণ।

মাঝেমধ্যেই বিঘ্ন ঘটলেও মহালয়ার পরের এক সপ্তাহে মেট্রোয় যাত্রীসংখ্যা তিন বার ৮ লক্ষের সীমা অতিক্রম করেছে বলে জানাচ্ছেন মেট্রো কর্তারা। যা অতীতে কখনও হয়নি।

পুজো মিটে যাওয়ার পরে কার্যত হাঁফ ছেড়ে বাঁচার কথা বলছেন মেট্রোর কর্মীরা। চতুর্থী থেকে নবমী পর্যন্ত প্রতিদিনই বেশি রাত অবধি কাজ করতে হয়েছে মেট্রো কর্মীদের। এর মধ্যে সপ্তমী থেকে নবমী পর্যন্ত দুপুর ১টা ৪০ মিনিট থেকে ভোর ৪টে পর্যন্ত মেট্রো চলেছে। চতুর্থী থেকে ষষ্ঠী

পর্যন্ত সকাল ৮টায় মেট্রো পরিষেবা শুরু হয়েছে। ওই দিনগুলিতে রাত ১১টা ১০ মিনিটে শেষ ট্রেন প্রান্তিক স্টেশন থেকে ছেড়েছে।

গত বছর পুজোর মাসে মেট্রোয় মোট যাত্রীর সংখ্যা ছিল ১ কোটি ৯৫ লক্ষের মতো। এ বছর রোজ গড়ে সাত লক্ষের কাছাকাছি যাত্রী মেট্রোতে চড়েছেন। ফলে মেট্রো কর্তাদের আশা, সার্বিক হিসেবের নিরিখে সারা মাসে মোট যাত্রী সংখ্যা অনায়াসে ২ কোটির সীমা অতিক্রম করে যাবে।

কী ভাবে সম্ভব হল এই বিপুল সংখ্যক যাত্রী পরিবহণ? মেট্রো কর্তাদের একাংশের মতে, মাঝেরহাটে সেতু বিপর্যয়ের জেরে যাত্রীসংখ্যা এমনিতেই বেড়েছিল। পাশাপাশি, পুজোর সময়ে যানজটের আশঙ্কায় মেট্রোর উপরেই ভরসা রেখেছেন যাত্রীদের বড় অংশ।

মেট্রো রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক ইন্দ্রাণী বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য বলেন, “কোথায় সমস্যা হতে পারে, তা ভেবে নিয়ে আগে থেকে প্রস্তুতি নেওয়ায় পরিষেবা অনেকটাই মসৃণ রাখা গিয়েছে। এই কৃতিত্ব মেট্রোর কর্মী থেকে আধিকারিক সকলের। সবাই পরিশ্রম করেছেন।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Railways Metro Transport Central
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE