Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪
Calcutta News

বচসার জেরে বৃদ্ধ দম্পতি ও তাঁদের ছেলেকে মারধর, সিন্ডিকেটই কি কারণ?

সোনারপুর থানা এলাকার মহামায়াতলা মণ্ডল পড়ার বাসিন্দা ৮৩ বছরের সীতাংশুমোহন সরকার এবং তাঁর স্ত্রী রত্না সরকার। তাঁদের ছেলে সৌমেন্দ্রমোহন সরকার কর্মসূত্রে পঞ্জাবে থাকেন। তবে ঘটনার দিন তিনি সোনারপুরের বাড়িতেই ছিলেন। বচসার সূত্রপাত মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ।

সোনারপুর থানার সামনে সীতাংশুমোহন সরকার (বাঁ-দিকে) ও তাঁর ছেলে সৌমেন্দ্রমোহন সরকার। —নিজস্ব চিত্র।

সোনারপুর থানার সামনে সীতাংশুমোহন সরকার (বাঁ-দিকে) ও তাঁর ছেলে সৌমেন্দ্রমোহন সরকার। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ১৪:০০
Share: Save:

খুব সামান্য একটি বিষয়ে বচসা। আর সেই বচসার জেরে অশীতিপর দম্পতিকে মারধর করল এক দল যুবক। মা-বাবাকে বাঁচাতে গিয়ে মাথা ফাটল ওই দম্পতির ছেলের। আক্রান্ত দম্পতির অভিযোগ, গোটা ঘটনার পিছনে সিন্ডিকেটের হাত রয়েছে। বাড়ি তৈরির সময়ে সিন্ডিকেটের থেকে জিনিসপত্র না কেনার জন্যই বার বার হামলার শিকার হচ্ছেন তাঁরা। পুলিশকে জানিয়েও লাভ হচ্ছে না। গত মঙ্গলবারের ওই ঘটনা সম্পর্কে সোনারপুর থানার এক আধিকারিক বলেন, “ওই বৃদ্ধের অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনাস্থলে গিয়ে অনুসন্ধানের পরই এফআইআর দায়ের করা হবে।”

সোনারপুর থানা এলাকার মহামায়াতলা মণ্ডল পড়ার বাসিন্দা ৮৩ বছরের সীতাংশুমোহন সরকার এবং তাঁর স্ত্রী রত্না সরকার। তাঁদের ছেলে সৌমেন্দ্রমোহন সরকার কর্মসূত্রে পঞ্জাবে থাকেন। তবে ঘটনার দিন তিনি সোনারপুরের বাড়িতেই ছিলেন। বচসার সূত্রপাত মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ। বৃদ্ধ সীতাংশুমোহনের অভিযোগ, দীর্ঘ দিন ধরে এলাকার কিছু মানুষ তাঁদের বাড়ির সামনে নর্দমাতে আবর্জনা ফেলছেন। প্রতিবাদ করেও লাভ হয়নি। গতকাল একই ভাবে আবর্জনা ফেললে তিনি ফের প্রতিবাদ করেন। তখন স্থানীয় কিছু যুবক তাঁকে কটূক্তি করেন। ধাক্কা মারেন। এর পর মারতে উদ্যত হন। বৃদ্ধের ছেলে সৌমেন্দ্র বলেন, “বাবাকে মারতে দেখে আমি ঠেকাতে যাই, তখন ওরা আমার ওপর হামলা চালায়। আমাকে লাঠি-রড-বাঁশ দিয়ে মারে। আমার কপাল ফেটে যায়।”

বুধবার সকালে সোনারপুর থানায় অভিযোগ জানাতে যান সীতাংশুবাবু। তাঁর অভিযোগ, পুলিশ গোটা বিষয়টিকে আদৌ গুরুত্ব দেয়নি। প্রথমে অভিযোগ নিতেই অস্বীকার করে। পরে জেনারেল ডায়েরি করে রাখে। সৌমেন্দ্রবাবুর অভিযোগ, “ওই যুবকদের মারে আমার মাথা ফেটে যায়। রক্ত ঝরতে থাকে। চিকিৎসার জন্য আমাকে বাঘাযতীন এস জি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।” ওই পরিবারের দাবি, চাঁদ মণ্ডল, প্রলয় মণ্ডল অমিত মণ্ডল, চিরঞ্জীব মণ্ডল ওরফে লেটো, বাবু মণ্ডল-সহ মণ্ডলপাড়ার বেশ কয়েক জন তাঁদের উপর হামলা চালিয়েছেন।

দেখুন ভিডিয়ো

বৃদ্ধের আরও অভিযোগ, এই হামলার পিছনে আসলে সিন্ডিকেটের ‘শত্রুতা’ রয়েছে। তাঁর কথায়, “একটি বেসরকারি কোম্পানিতে উঁচু পদে চাকরি করতাম। সেই সময় হাওড়াতে থাকতাম। এর পর এখানে জমি কিনে বাড়ি তৈরির কাজ শুরু করি। তখন থেকেই এদের সঙ্গে বিরোধের শুরু। অভিযুক্তদের এক জনের লোহার গ্রিলের ব্যবসা রয়েছে। সেই সময়ে ওদের কাছ থেকে গ্রিল কিনিনি। তখনও এক বার আমার ওপর হামলা করেছিল। আমার হাত ভেঙে দিয়েছিল। তা-ও আমি ভয় পেয়ে আপোস করিনি। এখানে আরও এ রকম অনেকে আছেন, যাঁরা ইট-বালির ব্যবসা করেন। তাঁদের কাছ থেকেও কোন দিন আমি কিছু কিনিনি। আর সেই কারণেই আমার ওপর রাগ। আমাকে বিভিন্ন সময়ে হেনস্থা করে, ভয় দেখায়। গত কালও তাই করেছে।”

আরও পড়ুন: অসমের ভূমিকম্পে কাঁপল কলকাতা পর্যন্ত, আতঙ্কে রাস্তায় লোকজন

আরও পড়ুন: ‘স্কুলের দাদার মতো আমারও জ্বর হয়নি তো!’, শেষরক্ষা হল না আরুষের

সোনারপুর থানায় এই অভিযোগ দায়ের করেছেন সীতাংশুবাবু ছেলে। —নিজস্ব চিত্র।

ঘটনার সত্যতা যাচাই করতে তদন্তে নেমেছে পুলিশ। তবে হামলার কথা অস্বীকার করেছেন রাজপুর-সোনারপুর পুরসভার ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর রাজীব পুরোহিত। তিনি বলেন, “এ রকম কোনও ঘটনার কথা আমি শুনিনি। এ রকম ঘটনা ঘটে থাকলে আমি ব্যবস্থা নেব। পুলিশের সঙ্গেও সহযোগিতা করব।” রাজীববাবুর মন্তব্য, “এ ধরনের ঘটনা বরদাস্ত করব না!”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE