Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

‘আনন্দবাজার যেন আর বাড়াবাড়ি না করে’

বৃহস্পতিবার আনন্দবাজার পত্রিকার প্রতিবেদকের কাছে ফোন আসে সানন্দা দত্তরায় নামে এক মহিলার।

পঞ্চসায়রের সেই হোম।

পঞ্চসায়রের সেই হোম।

নীলোৎপল বিশ্বাস
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ নভেম্বর ২০১৯ ০৫:২৪
Share: Save:

কোনও রকম পরিকাঠামো ছাড়াই গত ২২ বছর ধরে চলছে একটি হোম। পঞ্চসায়রের ‘সেবা ওল্ড এজ হোম’-এর এক আবাসিক মহিলা গণধর্ষণের অভিযোগ আনার পরে এই সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য সামনে এনেছিল আনন্দবাজার।

তার পরেই বৃহস্পতিবার আনন্দবাজার পত্রিকার প্রতিবেদকের কাছে ফোন আসে সানন্দা দত্তরায় নামে এক মহিলার। তিনি বর্তমানে রাজ্যে তৃণমূল নিযুক্ত ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরের সংস্থা আই-প্যাকে প্রচারমাধ্যমের সঙ্গে যোগাযোগের দায়িত্বপ্রাপ্ত। ফোনে তিনি বলেন, ‘‘ওই হোমটা আমার হবু শ্বশুরের। ভোটের কাজে আমাকে কলকাতার বাইরে খড়্গপুরে আসতে হয়েছে। কলকাতায় থাকলে আমি নিজেই মিডিয়া সামলে দিতাম। আনন্দবাজার যেন ব্যাপারটা নিয়ে আর বাড়াবাড়ি না করে।’’ তিনি এ-ও বলেন, ‘‘পুলিশকে আমি বুঝে নেব।’’ ওই হোমের মালিক হরেকিশোরবাবুও শুক্রবার প্রতিবেদককে বলেন, ‘‘পুলিশ বলেছে, আমাদের হোম বন্ধ করিয়ে দেবে। সব নথি এর পরে করে নেওয়া হবে। আবাসিকেরা থাকতে ভয় পাচ্ছেন। কিছু করে ব্যাপারটা মিটিয়ে নেওয়া যায় না?’’

গত বৃহস্পতিবার রাতে রাজ্য মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন লীনা গঙ্গোপাধ্যায়ও আনন্দবাজারের সাংবাদিককে ফোন করে দাবি করেন, যৌন হেনস্থা হয়ে থাকতে পারে, কিন্তু গণধর্ষণ কোনও ভাবেই নয়। অভিযোগকারী মহিলা এবং তাঁর দিদির বয়ানেই প্রচুর অসঙ্গতি রয়েছে। শুক্রবার সকালেও লীনাদেবী দাবি করেন, ‘‘ধর্ষণ হয়নি। যৌন হেনস্থা হয়তো ঘটেছিল।’’ তাঁকে মনে করানো হয়, আইনে ধর্ষণের সংজ্ঞাই বদলে গিয়েছে। শুধু যৌনাঙ্গের ব্যবহার নয়, যে কোনও ধরনের ‘পেনিট্রেশন’কেই ধর্ষণ বলা হয়। উত্তরে লীনাদেবী বলেন, ‘‘সেটা অবশ্য ঠিক। কিন্তু এখানে যা যা বলা হচ্ছে, তেমন কিছু ঘটেনি।’’

এ দিন হোমে গিয়ে অভিযোগকারী মহিলার সঙ্গে ফের কথা বলা হয়। তিনি প্রতিবেদককে বলেন, ‘‘দু’জন ছিল। আমি বারবার পুলিশকে বলেছি। মনে পড়েছে। ফিরোজ ছাড়াও বাবলু নামে একটা লোক ছিল। ওদের দেখালেই আমি চিনতে পারব।’’

জাতীয় মহিলা কমিশনের প্রতিনিধিদলের প্রধান চন্দ্রমুখী দেবীর দিকে তাকিয়ে নির্যাতিতা মহিলা প্রশ্ন করেন, ‘‘আর কী ভাবে বললে আমাকে বিশ্বাস করবেন? আমি তো বারবার একই কথা বলে চলেছি।’’

পরে চন্দ্রমুখী দেবী বলেন, ‘‘আক্রান্ত মহিলা আমাকে স্পষ্ট বলছেন, তাঁকে দু’জনে মিলে ধর্ষণ করেছেন। কলকাতা পুলিশও তেমনটাই জানিয়েছে। চিকিৎসকেরা যে রিপোর্ট দিয়েছেন, তার ভিত্তিতে নিশ্চয়ই পুলিশ গণধর্ষণের ধারা প্রয়োগ করেছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Panchasayar Gang Rape Anandabaz Threat
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE