Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

খাতায় সই করেই উধাও পুরকর্মীরা

ছুটির দিনেও স্বাস্থ্যকর্মীদের কাজ করতে বলা হয়েছে। ওই কাজ কেমন চলছে, তা দেখতে এ দিন উত্তর কলকাতার আটটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ঘোরেন মেয়র পারিষদ-সহ পুর অফিসারেরা।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৩ অক্টোবর ২০১৮ ০৩:০২
Share: Save:

গাঁধী জয়ন্তী উপলক্ষে মঙ্গলবার ছিল ছুটি। ছুটির সকালে ডেঙ্গি প্রতিরোধের কাজ কেমন চলছে, দেখতে বেরিয়েছিল কলকাতা পুরসভার দল। নেতৃত্বে ছিলেন মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) অতীন ঘোষ। উত্তর কলকাতার ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়ে তাঁদের নজরে পড়ে, ১২ জন কর্মী সাতসকালেই হাজিরা দিয়ে অন্যত্র চলে গিয়েছেন। তাঁরা সকলেই ১০০ দিনের কাজে যুক্ত। কিন্তু ওই কর্মীরা গেলেন কোথায়? অভিযোগ, ওই ওয়ার্ডেরই কাউন্সিলরের কাজে ব্যস্ত ছিলেন তাঁরা। বিষয়টি জেনে অত্যন্ত ক্ষুব্ধ হন অতীনবাবু। তৎক্ষণাৎ সংশ্লিষ্ট বরোর স্বাস্থ্য অফিসারকে ওই কর্মীদের শো-কজ করার নির্দেশ দেন। শুধু ২৩ নম্বর ওয়ার্ডই নয়, বাগবাজারের কাছে সাত নম্বর ওয়ার্ডেও কয়েক জন কর্মী অনুপস্থিত থাকায় তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলেছেন তিনি।

প্রসঙ্গত, ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বিজেপির বিজয় ওঝা। স্বভাবতই ১০০ দিনের কর্মীদের পুরসভার কাজে না লাগিয়ে অন্য কাজে লাগানোর অভিযোগও উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে। যদিও বিজয়বাবুর বক্তব্য, ‘‘আমার ওয়ার্ডে স্বচ্ছতা মিশনের একটি কর্মসূচি ছিল। যা পুরসভার না হলেও এলাকার স্বাস্থ্য নিয়েই। সেখানে তিন-চার জন ১০০ দিনের কর্মী ছিলেন। বাকিরা ছুটি নিয়েছিলেন কি না, জানি না। আর অতীনবাবু কখন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এসেছিলেন, তা-ও জানি না।’’ কিন্তু পুর প্রশাসন তো ওই কর্মীদের কারণ দর্শাতে বলেছে? বিজয়বাবুর জবাব, ‘‘সে ব্যাপারে আমি কি করব? তবে আমি মনে করি, এলাকায় স্বচ্ছতা মিশনের কাজটাও জরুরি ছিল।’’ তিনি জানান, অতীনবাবু তাঁর সঙ্গে কোনও যোগাযোগ করেননি। কিছু জানতেও চাননি।

শহরে এখনও পর্যন্ত ডেঙ্গিতে মারা গিয়েছেন ছ’জন। দিন কয়েক আগে পুর ভবনে রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিবের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করেছেন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় এবং অতীনবাবুরা। পুজোর মুখে গত কয়েক দিন পর পর বৃষ্টি হওয়ায় ডেঙ্গির প্রকোপ আরও বাড়তে পারে আশঙ্কা পুর প্রশাসনেরই। সেই প্রেক্ষিতেই ছুটির দিনেও স্বাস্থ্যকর্মীদের কাজ করতে বলা হয়েছে। ওই কাজ কেমন চলছে, তা দেখতে এ দিন উত্তর কলকাতার আটটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ঘোরেন মেয়র পারিষদ-সহ পুর অফিসারেরা।

পরে অতীনবাবু বলেন, ‘‘২৩ নম্বর ওয়ার্ডে গিয়ে দেখি, একশো দিনের কর্মীরা অনুপস্থিত। খবর নিয়ে জানতে পারি, তাঁরা হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে চলে গিয়েছেন। বলে গিয়েছেন, কাউন্সিলরের কাজে যাচ্ছেন।’’ এটা চরম অন্যায় কাজ বলে জানান তিনি। সাত নম্বর ওয়ার্ডেও কয়েক জন স্বাস্থ্যকর্মী গরহাজির ছিলেন। সেখানকার কাউন্সিলর আবার শাসক দলেরই বাপি ঘোষ। ওই ওয়ার্ডের অনুপস্থিত কর্মীদেরও শো-কজ করা হবে বলে জানান মেয়র পারিষদ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

KMC Employee Mosquito Health Leave Signature
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE