Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

কোর্ট অবমাননায় মামলা দায়েরের হুমকি 

বাজির বিক্রেতা বা ব্যবহারকারীদের বিরুদ্ধেই শুধু নয়, কালীপুজো ও দীপাবলির রাতে শব্দবাজির তাণ্ডবে কড়া না হলে সংশ্লিষ্ট থানার ওসি-দের বিরুদ্ধেও সুপ্রিম কোর্ট অবমাননার মামলা দায়ের করার হুঁশিয়ারি দিলেন শহরের পরিবেশকর্মীরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০২ নভেম্বর ২০১৮ ০০:৫০
Share: Save:

বাজির বিক্রেতা বা ব্যবহারকারীদের বিরুদ্ধেই শুধু নয়, কালীপুজো ও দীপাবলির রাতে শব্দবাজির তাণ্ডবে কড়া না হলে সংশ্লিষ্ট থানার ওসি-দের বিরুদ্ধেও সুপ্রিম কোর্ট অবমাননার মামলা দায়ের করার হুঁশিয়ারি দিলেন শহরের পরিবেশকর্মীরা।

পরিবেশকর্মী এবং প্রবীণ আইনজীবী গীতানাথ গঙ্গোপাধ্যায়ের বক্তব্য, বাজি সংক্রান্ত নির্দেশিকা পালনে পুলিশের ওসি-দের দায় সঁপেছে শীর্ষ আদালত। তাই নির্দেশিকা কার্যকর না হলে তার দায়ও নিতে হবে সংশ্লিষ্ট আধিকারিককে।

পরিবেশকর্মীদের যৌথ সংগঠন ‘সবুজ মঞ্চ’-এর আহ্বায়ক নব দত্ত বৃহস্পতিবার জানান, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের প্রতিলিপি এবং তাঁদের বক্তব্য কলকাতার পুলিশ কমিশনার এবং শহরের সব থানায় ই-মেল মারফত পাঠানো হবে। পাশাপাশি রাজ্য পুলিশের ডিজি এবং রাজ্যের সব থানাতেও ওই ই-মেল পাঠাবেন তাঁরা। প্রতি বছর কালীপুজো ও দীপাবলিতে সবুজ মঞ্চ কন্ট্রোল রুম খুলে থাকে। নাগরিকেরা অভিযোগ জানালে তার ব্যবস্থাও নেন পরিবেশকর্মীরা। এ বছরও কন্ট্রোল রুম খোলা হবে। গত বছর দু’দিনে সবুজ মঞ্চের কন্ট্রোল রুমে ১১৭টি অভিযোগ জমা পড়েছিল।

এত দিন কালীপুজো এবং দীপাবলিতে বায়ু এবং শব্দ দূষণের তাণ্ডবের অভিযোগ জমা পড়ত। কিন্তু এ বছর সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশিকা দীপাবলির দূষণকে ভিন্ন মাত্রায় নিয়ে গিয়েছে। আতসবাজিও যে বিপজ্জনক মাত্রায় দূষণ ছড়ায় তা উল্লেখ করে সুপ্রিম কোর্ট প্রথমে জানিয়েছিল, রাত ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত বাজি পোড়ানো যাবে। পরে তা সংশোধন করে শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, রাজ্যগুলি বিবেচনা করে সময় পরিবর্তন করতে পারে, কিন্তু বাজি পো়ড়ানোর সময়সীমা দু’ঘণ্টার বেশি কখনওই করা যাবে না। পরিবেশ দফতর সূত্রের খবর, এ রাজ্যে এখনও পর্যন্ত কোনও বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়নি। তাই এখানে সময়সীমা রাত ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্তই রয়েছে।

পরিবেশকর্মীরা জানান, কসবা, গল্ফ গ্রিন, কাশীপুর, পাইকপা়ড়া, নেতাজিনগর, হরিদেবপুর, গড়িয়া, বাঘা যতীন, বেলগাছিয়া, লেকটাউন, বাঙুর অ্যাভিনিউয়ের মতো বেশ কিছু এলাকা থেকে প্রতি বছর শব্দবাজির অভিযোগ বেশি পাওয়া যায়। এমনকি, আর জি কর, এসএসকেএম, এম আর বাঙুর, বি সি রায় শিশু হাসপাতাল এবং বিদ্যাসাগর হাসপাতাল লাগোয়া এলাকা থেকেও প্রচুর অভিযোগ জমা পড়ে। এ বছর তাই ওই সব এলাকাগুলিতে বিশেষ নজর রাখবেন পরিবেশকর্মীরা।

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশিকার পরেও পরিবেশকর্মীদের এত তৎপর হতে হবে কেন? নববাবু বলেন, ‘‘জাতীয় পরিবেশ আদালত রাজ্যের বেআইনি বাজি কারখানা বন্ধ করতে নির্দেশ দিয়েছিল। যদিও সেই নির্দেশিকা যথাযথ পালন করা

নিয়েও সন্দেহ রয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারের ‘পেট্রোলিয়াম অ্যান্ড এক্সপ্লোসিভ সেফটি অর্গানাইজেশন’-এর ছাড়পত্র রয়েছে রাজ্যের চারটি বাজি কারখানার ক্ষেত্রে। দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ ২৪টি কারখানাকে অনুমতি দিয়েছে। তা হলে এত বাজি রাজ্যে তৈরি হচ্ছে কোথায়!’’ শব্দবাজির পাশাপাশি ডিজে বন্ধ করা নিয়েও পুলিশের একাংশের বিরুদ্ধে গড়িমসির অভিযোগ করেছেন গীতানাথবাবু।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Environment Activist Case Court Defamation
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE