Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

তোলা চেয়ে পুর প্রকল্পে হামলা, ধৃত ১

পুলিশ সূত্রের খবর, ধৃত প্রসেনজিৎ এক আইনজীবীর গাড়িচালক ছিলেন। কিন্তু আচার-আচরণ সুবিধাজনক না হওয়ায় তাঁকে কাজ থেকে ছাড়িয়ে দেন তিনি। বাকি দু’জনের মধ্যে এক অভিযুক্ত ম্যান্ডেলা বিধাননগর পুরসভাতেই কাজ করেন বলে খবর। তৃতীয় জনের নাম শ্যামল।

প্রতীকী চিত্র।

প্রতীকী চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ৩১ অক্টোবর ২০১৮ ০৩:২৭
Share: Save:

পুর ভবন থেকে আক্ষরিক অর্থেই ঢিল ছোড়া দূরত্বে পুরসভারই প্রকল্পের নির্মাণস্থল। রাতের অন্ধকারে সেখানেই তোলা চেয়ে বরাতপ্রাপ্ত সংস্থার এক কর্মীকে মারধরের অভিযোগ উঠল তিন যুবকের বিরুদ্ধে। শনিবার গভীর রাতে বিধাননগরের ওই ঘটনায় এক জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বাকি দু’জন এখনও অধরা।

পুরসভা সূত্রের খবর, এফই ৫০৫ নম্বর প্লটে রবীন্দ্র ভবন তৈরির কাজ চলছে। ওই কাজে ২১৩টি পাইলিংয়ের জন্য সম্প্রতি দরপত্র আহ্বান করা হয়। একটি সংস্থা সেই কাজে চার কোটি টাকার বরাত পায়। পুলিশ জানিয়েছে, শনিবার গভীর রাতে তিন যুবক প্রকল্প স্থলে ঢুকে অলোক মাইতি নামে সংস্থার এক কর্মীকে মারধর করে। দাবি মতো ঠিকাদার সংস্থা তোলার টাকা না দিলে ওই কর্মীকে প্রাণনাশের হুমকিও দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। তদন্তে নেমে ইসি ব্লকের বাসিন্দা প্রসেনজিৎ

পুরকাইত নামে এক যুবককে গ্রেফতার করে বিধাননগর থানার পুলিশ। মঙ্গলবার ধৃতকে বিধাননগর মহকুমা আদালতে তোলা হয়ে পাঁচ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক।

ওই দিন ঠিক কী ঘটেছিল?

বরাতপ্রাপ্ত সংস্থার সাইট ইন-চার্জ সাবির আলি মঙ্গলবার জানান, প্রকল্প এলাকায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মূর্তির পাশের রাস্তা দিয়ে রাত পৌনে বারোটা নাগাদ

তিন যুবক বাইকে চেপে নির্মাণস্থলে ঢোকে। সে সময়ে শৌচাগারে যাচ্ছিলেন প্রকল্প এলাকার হেড মিস্ত্রি, মেদিনীপুরের বাসিন্দা অলোক। অপরিচিত তিন যুবককে দেখে পরিচয় জানতে চাইলে অলোককে তারা বলে, ‘তোর ঠিকাদারকে ডাক। এখনই বল ১৫ লক্ষ টাকা নিয়ে আসতে। এত বড় কাজ চলছে আর আমাদের কিছু দিবি না? না হলে তোকে এবং তোর ঠিকাদার, দু’জনকেই তুলে নিয়ে যাব’। সাবিরের দাবি, এ কথা বলার মধ্যেই অলোকের হাত ধরে তাঁকে টেনে বাইরে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে দুষ্কৃতীরা। তখনই তাঁকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। অলোক কোনও রকমে হাত ছাড়িয়ে বাকি শ্রমিকদের ডাকলে অভিযুক্তেরা বাইক নিয়ে চম্পট দেয়। পুলিশ জানিয়েছে, প্রাথমিক তদন্ত এবং প্রকল্প এলাকার কাছে নেতাজি আইল্যান্ডের সিসি ক্যামেরার ফুটেজের ভিত্তিতে প্রসেনজিৎকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি দু’জনের খোঁজ চলছে।

পুলিশ সূত্রের খবর, ধৃত প্রসেনজিৎ এক আইনজীবীর গাড়িচালক ছিলেন। কিন্তু আচার-আচরণ সুবিধাজনক না হওয়ায় তাঁকে কাজ থেকে ছাড়িয়ে দেন তিনি। বাকি দু’জনের মধ্যে এক অভিযুক্ত ম্যান্ডেলা বিধাননগর পুরসভাতেই কাজ করেন বলে খবর। তৃতীয় জনের নাম শ্যামল। ঘটনার রাতে একসঙ্গে মদ্যপানের পরে তারা প্রকল্প এলাকায় চড়াও হয় বলে অভিযোগ। তিন অভিযুক্তের সঙ্গে কোনও দুষ্কৃতী-যোগ রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

পুরসভা সূত্রের খবর, পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের অধীনস্থ মিউনিসিপ্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিরেক্টরেট রবীন্দ্র ভবনের নকশা অনুমোদন না করায় প্রায় ১৫ কাঠা জমিতে প্রকল্প নির্মাণের কাজ আটকে ছিল বেশ কিছু দিন। কিন্তু, সেই কাজের সূচনা পর্বেই এমন ঘটনা অনভিপ্রেত বলে মনে করছেন পুর আধিকারিকেরা।

বিধাননগরের মেয়র সব্যসাচী দত্ত বলেন, ‘‘সরকারি প্রকল্পের কাজ কেউ বেআইনি ভাবে আটকালে তাদের কড়া শাস্তি হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Extortion Municipal Project
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE