হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পরে সঙ্গীতা প্রসাদ। নিজস্ব চিত্র
পুজোর জন্য কাজিপাড়া মোড়ে অজিত হালদারের কাছে ফল কিনতে গিয়েছিলেন তিনি। ফল বিক্রেতার আশেপাশে অপরিচিত কাউকে দেখেননি বলে জানালেন নাগেরবাজারের বিস্ফোরণে আহত, কাজিপাড়ার বাসিন্দা সঙ্গীতা প্রসাদ। ঘটনার ১৪ দিনের মাথায়, সোমবার বেসরকারি হাসপাতাল থেকে ছাড়া পান তিনি। সেই উপলক্ষে সাংবাদিক বৈঠকে এ কথা জানান ওই গৃহবধূ।
সঙ্গীতাদেবী জানান, ফল কিনে টাকা ফেরত নিচ্ছিলেন তিনি। তখনই বিস্ফোরণ ঘটে। অজিতবাবুর পিছনে বা পাশে কাউকে কি দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেছিলেন? ‘‘কেউ দাঁড়িয়ে ছিল বলে তো মনে পড়ছে না। ফলওয়ালার ডান দিকে আচমকা বিস্ফোরণটা হল। সম্বিৎ ফিরতে দেখলাম, রাস্তায় বসে আছি। পেটের কাছে একটা অদ্ভুত অনুভূতি হওয়ায় নীচে তাকিয়ে দেখি গলগল করে রক্ত বেরোচ্ছে। কেউ এক জন ধরাধরি করে আমায় তুলল, এটুকু মনে আছে,’’ বললেন সঙ্গীতাদেবী। মেয়ে স্নেহাকে পাশে নিয়ে তিনি যোগ করেন, ‘‘সে-দিনের কথা মনে পড়লে এখনও ভয় লাগে। একটি বাচ্চা-সহ তিন জনের মৃত্যু হল। ওদের কী দোষ ছিল বলতে পারেন? সিআইডি তো কাউকে ধরতেই পারেনি!’’
সঙ্গীতাদেবীকে অত্যন্ত আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। এ দিনের সাংবাদিক বৈঠকে শল্যচিকিৎসক দেবরাজ রায় জানান, একটা চাদর ছিঁড়ে টুকরো টুকরো অবস্থা হলে যেমন হয়, ওই মহিলার অবস্থা ছিল ঠিক তেমনটাই। বিস্ফোরণে নাড়িভুঁড়ি বেরিয়ে এসেছিল। প্রচুর রক্তক্ষরণের মধ্যে কাদা, স্প্লিন্টার থাকায় আরও সমস্যা হয়। পরীক্ষানিরীক্ষার সুযোগ ছিল না। তাই সব কিছু উপেক্ষা করে সঙ্গীতাদেবীর অস্ত্রোপচারের ব্যবস্থা করা হয়। ‘‘আমাদের বেশি আশঙ্কা ছিল শরীর পুড়ে যাওয়া অংশ থেকে সংক্রমণ নিয়ে। সেটা রোধ করতে পেরে খুব ভাল লাগছে,’’ বলেন দেবরাজবাবু। সঙ্গীতাদেবীর স্বামী অমিত প্রসাদ বলেন, ‘‘হাসপাতালে চিকিৎসায় গাফিলতি নিয়ে অনেক অভিযোগ শুনি। তবে দেবরাজবাবু, ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটের ইনচার্জ প্রসেনজিৎ সরকার-সহ চিকিৎসকেরা যে-ভাবে কাজ করেছেন, সেটা একটা দৃষ্টান্ত। আমরা কৃতজ্ঞ।’’
ওই হাসপাতালে চিফ এগ্জিকিউটিভ অফিসার বা সিইও নিবেদিতা চট্টোপাধ্যায় জানান, বিস্ফোরণের পরে কানের পর্দা ফেটে যাওয়ায় সঙ্গীতাদেবীর কানে এখন সমস্যা রয়েছে। তবে যথাযথ চিকিৎসায় তার সমাধান সম্ভব। সঙ্গীতাদেবীর চিকিৎসায় যে-খরচ হয়েছে, তার অধিকাংশই হাসপাতাল বহন করেছে বলে জানান সিইও।
এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি আছেন ওই বিস্ফোরণে আহত সীতা ঘোষ। আরও দু’তিন দিন পরে তাঁকে ছুটি দেওয়া হতে পারে। সীতাদেবীর দেওর দীপেঞ্জয় ঘোষ জানান, এখনও ওঁর কানের চিকিৎসা শুরু হয়নি। এসএসকেএমেই চিকিৎসা চলছে আহত শুভম দে-র। এ দিন শুভমের রক্ত পরীক্ষা করা হয়। এখন তিনি অনেকটাই ভাল আছেন বলে জানান তাঁর কাকা পিন্টু দে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy