Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

তোলাবাজি করে ধৃত ভুয়ো পুলিশ

পুলিশ সেজে একের পর এক তোলাবাজি চালাচ্ছিল সে। রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় তার খোঁজে তল্লাশি চালালেও পুলিশের কাছে অধরাই ছিল ওই ভুয়ো পুলিশ। শেষে ফোনের সূত্র ধরে তদন্তকারীদের জালে ধরা পড়েছে ওই জালিয়াত।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০২ ডিসেম্বর ২০১৮ ০০:৩১
Share: Save:

পুলিশ সেজে একের পর এক তোলাবাজি চালাচ্ছিল সে। রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় তার খোঁজে তল্লাশি চালালেও পুলিশের কাছে অধরাই ছিল ওই ভুয়ো পুলিশ। শেষে ফোনের সূত্র ধরে তদন্তকারীদের জালে ধরা পড়েছে ওই জালিয়াত।

ধৃতের নাম হরিদাস মণ্ডল। বাড়ি দক্ষিণ ২৪ পরগনার ডায়মন্ড হারবারের কুলেশ্বরে। শুক্রবার সেখান থেকেই তাকে ধরে বাঁশদ্রোণী থানার পুলিশ। তার বাড়ি থেকে তদন্তকারীরা ভুয়ো ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের নথিও উদ্ধার করেছেন। পুলিশের দাবি, বালিগঞ্জ থেকে বাঁকুড়া— ধৃতের বিরুদ্ধে রাজ্যের বিভিন্ন থানায় পুলিশ সেজে তোলাবাজির অভিযোগ রয়েছে।

পুলিশ জানায়, ঘটনার সূত্রপাত গত ৩০ জানুয়ারি। অভিযোগকারী শুভাশিস চক্রবর্তী বাঁশদ্রোণীর সতীন্দ্রপল্লির বাসিন্দা। সে দিন তিনি একটি ফোন পান। লালবাজারের গোয়েন্দা কৌস্তুভ চট্টোপাধ্যায় বলে পরিচয় দিয়ে এক ব্যক্তি ফোনে দাবি করে, শুভাশিস নারী পাচারের সঙ্গে যুক্ত। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ জমা পড়েছে। ওই কণ্ঠস্বর হুমকি দিয়ে বলে, তার কথা না শুনলে ফল খারাপ হবে। তদন্তকারীরা জানান, পেশায় আনাজ-বিক্রেতা শুভাশিস ভয় পেয়ে যান। তখন ফোনের কণ্ঠস্বর জানায়, বিচারককে টাকা দিলেই সব মিটে যাবে। সেই মতো একটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের নম্বর দিয়ে টাকা জমা দিতে বলা হয়।

পুলিশ জানায়, ওই অ্যাকাউন্টে বেশ কয়েক হাজার টাকা জমা দেন শুভাশিস। কিন্তু তার পরে সেই ভুয়ো পুলিশের সঙ্গে আর যোগাযোগ করতে পারেননি। তখনই বুঝতে পারেন, প্রতারিত হয়েছেন। বাঁশদ্রোণী থানায় অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, ওই অ্যাকাউন্টটি ডায়মন্ড হারবারের সরিষার একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের। কিন্তু সেই অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য যে নথি জমা দেওয়া হয়েছিল, তা ভুয়ো। এর পরে ওই ভুয়ো পুলিশের খোঁজে বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি শুরু হয়। কিন্তু লাভ হয়নি। হাল প্রায় ছেড়েই দিয়েছিলেন তদন্তকারীরা। হঠাৎ আলোর রেখা দেখায় অভিযুক্তের ফোনের ‘কল ডিটেলস’। দেখা যায়, অভিযুক্ত শেষ দশ মাসে মাত্র ৩০টি ফোন করেছে। যার বেশির ভাগই শুভাশিসের মতো প্রতারিতদের। কিন্তু পাঁচটি এমন নম্বরও মেলে, যেগুলি ডায়মন্ড হারবার এলাকার। ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টটিও ছিল সেখানকার।

পুলিশ জানায়, ওই পাঁচটি নম্বরেরই মালিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কৌস্তুভ বলে কাউকে তাঁরা চেনেন না। তদন্তকারীরা এর পরে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলার সময়ে জমা দেওয়া ছবির সূত্র ধরে এলাকায় তল্লাশি চালাতেই বৃহস্পতিবার রাতে জানা যায়, কৌস্তুভই আসলে হরিদাস মণ্ডল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Crime Arrest Fake Police Extortion
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE