প্রতীকী ছবি।
জেলায় জলসা করতে গিয়ে উদ্যোক্তাদের হাতে শিল্পীদের নিগৃহীত হওয়ার একাধিক অভিযোগ সাম্প্রতিক কালে সামনে এসেছে। এ বার সেই অভিযোগই খাস কলকাতায়!
মানিকতলার মুরারিপুকুরে গণেশ পুজোর জলসায় এক শিল্পীকে যৌন নিগ্রহের অভিযোগ উঠল পুজো উদ্যোক্তাদের বিরুদ্ধেই। অভিযোগকারী তরুণীর দাবি, গত বৃহস্পতিবার রাতে জলসার শেষে মঞ্চের পিছনের ‘গ্রিন রুমে’ তিনি বসতেই সেখানে ঢুকে সঙ্গীদের বাইরে থেকে দরজা বন্ধ করে দিতে বলে সুরজিৎ সাহা ওরফে ভানু নামে পুজোর মূল উদ্যোক্তা। সেখানে তরুণীকে আটকে যৌন নিগ্রহ চালানো হয় বলে অভিযোগ। উদ্যোক্তাদেরই এক জন কোনও মতে তরুণীকে বার করে দিলে তাঁর পিছু নেয় পুজো কমিটির ছেলেরা। খবর পেয়ে পুলিশ তরুণীকে রাস্তা থেকে উদ্ধার করে। ওই রাতেই থানায় লিখিত অভিযোগ করেন তরুণী। পুলিশের দাবি, রাতেই অভিযোগকারীকে নিয়ে ঘটনাস্থলে হানা দেওয়া হয়। তবে শনিবার রাত পর্যন্ত অভিযুক্তের খোঁজ মেলেনি।
বাগুইআটি এলাকার বাসিন্দা ওই তরুণী শনিবার জানান, গত বছরেও তিনি ২০-এর পল্লির পুজোর জলসায় গান গেয়েছেন। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ স্টেজে ওঠেন তিনি। সওয়া ১২টা নাগাদ অস্থায়ী ‘গ্রিন রুমে’ ঢোকেন। তরুণীর অভিযোগ, ভানু নেশাগ্রস্ত হয়ে সেখান থেকে অন্য শিল্পীদের বেরোতে বলে। নিজেকে পুজো ও এলাকার শেষ কথা বলে দাবি করা ভানু ওই তরুণীর বাবার শারীরিক অবস্থা জানতে চায়। তরুণীর কথায়, ‘‘বাবার যে কিডনির অসুখ, ডায়ালিসিস চলছে তা ওকে বলিনি। এর পরেই বলে, ১০ লক্ষ টাকা দেবে। কিন্তু যা বলবে শুনতে হবে।’’ তিনি সেখান থেকে বেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে ভানু তাঁর কোমর জড়িয়ে ধরে বলে অভিযোগ তরুণীর। তাঁর দাবি, ‘‘মাটিতে পড়ে যাই। ভানু গ্রিন রুমের দরজা বাইরে থেকে বন্ধ করে দিতে বলে। ভানুর নখের আঁচড়ে আমার হাত ছড়ে যায়। আমার জামা ছিঁড়ে দেয়, মোবাইলও কেড়ে নেয়। হাত জোর করলেও ছাড়েনি।’’
ভানুর দলেরই এক জন ওই সময়ে দরজা খুলে দেন বলে তরুণীর দাবি। ওই যুবকই মোটরবাইকে চাপিয়ে বিধাননগর উড়ালপুলের কাছে নিয়ে যান তরুণীকে। পুলিশকেও তিনিই ফোন করেন। তরুণী বলেন, ‘‘পুলিশ এসে না পড়লে কী হত জানি না।’’
এর আগেও জেলায় অনুষ্ঠান করতে গিয়ে ইমন চক্রবর্তী, সোমলতা আচার্য হয়রানির শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। বিদেশে থাকায় ইমনের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। সোমলতা বলেন, ‘‘আমার ঘটনার পরে লাইভ করে বলেছিলাম, ভাল করে খোঁজ নিয়ে তবেই অনুষ্ঠান করতে যাওয়া উচিত। এখনও তা-ই বলব।’’ বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছেন শিল্পীদের সংগঠন ‘বেঙ্গল স্টেজ পারফর্মার্স গিল্ড’-এর সদস্যেরাও। অভিযোগকারী তরুণী ও তাঁর পরিবারকে নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘লাইভ’ করে অভিযুক্তের দ্রুত গ্রেফতারি দাবি করেছেন তাঁরা।
মানিকতলার ওই এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, থমথমে পরিস্থিতি। অভিযুক্ত স্থানীয় তৃণমূলকর্মী হিসেবে নিজেকে দাবি করে। লিলি বিশ্বাস নামে এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘ছেলেটির নামে আগে খারাপ কিছু শুনিনি। পুলিশ তদন্ত করুক।’’ স্থানীয় কাউন্সিলর শান্তিরঞ্জন কুন্ডু অবশ্য বলেন, ‘‘এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করছি। কেউ শুধু শুধু অভিযোগ করেন না। পুলিশ ব্যবস্থা নিক।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy