ছারখার: আগুন নেভানোর কাজে দমকলকর্মীরা। শনিবার, কামারহাটিতে। নিজস্ব চিত্র
বস্তিতে আগুন লেগেছে শুনে দোকান ফেলেই ছুটেছিলেন বৃদ্ধ। নিজের ঘর বাঁচাতে না পেরে যখন ফের তিনি দোকানের দিকে ছুটলেন, তত ক্ষণে আগুন বিস্তীর্ণ এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে। ছোট্ট মুদিখানার দোকানের সামনে গিয়ে বৃদ্ধ দেখলেন, রোজগারের একমাত্র সম্বলও দাউদাউ করে জ্বলছে।
শনিবার সকালের অগ্নিকাণ্ডে কামারহাটির একটি বস্তির ১২টি ঘর-সহ একটি দোকান ছাই হয়ে গিয়েছে। আরও কয়েকটি ঘর সামান্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দমকলের তিনটি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নেভায়। হতাহতের কোনও খবর নেই। প্রাথমিক তদন্তের পরে দমকল কর্মীদের
অনুমান, গ্যাস সিলিন্ডার ফেটেই আগুন ছড়িয়েছে।
কামারহাটি পুরসভার ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের প্রান্তিক নগরে টালি, প্লাস্টিকের ছাউনি, দরমা ঘেরা বস্তিতে প্রায় ১০০টি পরিবার থাকে। স্থানীয় সূত্রের খবর, এ দিন সকাল ১০টা নাগাদ শফিক শেখের ঘরে প্রথম আগুন লাগে। মুহূর্তের মধ্যে আগুন বস্তির আরও কয়েকটি ঘরে ছড়িয়ে যায়। তার মধ্যেই কয়েকটি সিলিন্ডার ফেটে আগুন বিস্তীর্ণ এলাকায় ছড়ায়।
বস্তি সংলগ্ন সেরামিক কারখানার কর্মীরা নিজেদের জলাধার থেকে পাইপ দিয়ে জল ঢালতে শুরু করেন। স্থানীয় কাউন্সিলর বিমল সাহা জানান, পাশের পাড়া থেকেও যুবকেরা এসে আগুন নেভানোর কাজে হাত লাগান। মহিলা ও শিশুদের উদ্ধার করে স্থানীয় ক্লাবে পাঠানো হয়। দমকল ও পুলিশ
গিয়ে বেশ কয়েকটি পোড়া সিলিন্ডার উদ্ধার করেছে। স্থানীয় বাসিন্দা সুচিত্রা দাস বলেন, ‘‘চোখের সামনে ঘরটা জ্বলে গেল। কোনও মতে বাচ্চাটাকে নিয়ে বেরিয়ে এসেছি। ওর একটা জামাও বাঁচাতে পারিনি।’’
কামারহাটি পুরসভার চেয়ারম্যান গোপাল সাহা বলেন, ‘‘জেলা প্রশাসনকে জানিয়েছি। ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। ওঁদের পুনর্বাসনের জন্য কী করা যায়, পরিকল্পনা করা হচ্ছে।’’ বিমল জানান, টিচার্স কলোনির পুজো মণ্ডপ ও একটি ক্লাবঘরে পুড়ে যাওয়া বাসিন্দাদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ঘটনার পর থেকে, পোড়া দোকানের সামনে বসে কেঁদে চলেছেন বৃদ্ধ দোকানি তোয়েব শেখ। তাঁর আক্ষেপ, ‘‘মাথার ছাদ-রুটিরুজি সবই তো নিয়ে নিলে ভগবান!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy