Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

খাবার পৌঁছনোর তাড়া, দুর্ঘটনায় ডেলিভারি বয়

অর্ডার মতো খাবার ক্রেতার কাছে পৌঁছে দেওয়ার তাড়ায় মোটরবাইকের গতি বাড়াচ্ছেন ওঁরা।

আহত সরিফুল শেখ। ছবি: স্নেহাশিস ভট্টাচার্য

আহত সরিফুল শেখ। ছবি: স্নেহাশিস ভট্টাচার্য

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৩ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৩:০২
Share: Save:

অর্ডার মতো খাবার ক্রেতার কাছে পৌঁছে দিতে গিয়ে দুর্ঘটনাগ্রস্ত হলেন সরবরাহকারী এক যুবক। পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, অত্যন্ত দ্রুত গতিতে মোটরবাইক চালানোর জন্যেই এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। বুধবার সকালে, নিউ টাউনে জুডিশিয়াল অ্যাকাডেমির সামনের ঘটনা। পুলিশ জানিয়েছে, আহত যুবকের নাম সরিফুল শেখ (২৮)। গুরুতর আহত ওই যুবককে পুলিশ উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করে। রাতে তাঁকে মল্লিকবাজারের একটি বেসরকারি স্নায়ু চিকিৎসা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। হাসপাতাল সূত্রের খবর, তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক।

অর্ডার মতো খাবার ক্রেতার কাছে পৌঁছে দেওয়ার তাড়ায় মোটরবাইকের গতি বাড়াচ্ছেন ওঁরা। ট্র্যাফিক আইন না মানার এমনই অভিযোগ ওঁদের বিরুদ্ধে ওঠে বারবার। এ দিনের ঘটনার কারণও বেপরোয়া গতি বলেই জানাচ্ছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। যদিও সরবরাহকারীরা এমন অভিযোগ মানতে নারাজ। তাঁরা জানাচ্ছেন, ক্রেতা খাবার অর্ডার করলে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তা পৌঁছে দিতে হয়। পাশাপাশি, যত বেশি ক্রেতার কাছে তিনি খাবার পৌঁছে দিতে পারবেন, তত বাড়বে তাঁর রোজগার। সে কথা মাথায় রেখে কম সময়ের মধ্যে বেশি অর্ডার পৌঁছে দেওয়ার তাগিদে গতি বেপরোয়া হয়ে যায়। কারণ, অর্ডার পিছু যে টাকা তাঁরা পান, তাতে সারা দিনে মোটরবাইকের তেল ও অন্য খরচ বাদ দিয়ে হাতে সামান্য

টাকাই থাকে।

পুলিশ জানায়, এ দিন সকালে মোটরবাইকে চেপে নারকেলবাগানের দিকে যাচ্ছিলেন সরিফুল। একটি মোড় থেকে ‘ইউ টার্ন’ করার সময়ে অন্য একটি মোটরবাইকের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয় তাঁর। পুলিশ সূত্রের খবর, খাবার পৌঁছে দেওয়ার তাড়ায় তাঁর মোটরবাইকের গতি যথেষ্ট বেশি ছিল। যার জেরে মাথায় হেলমেট এবং ঘটনাস্থলের কাছে হাম্প ও গার্ডরেল থাকা সত্ত্বেও সরিফুলের গুরুতর আঘাত লাগে।

আহত যুবকের এক আত্মীয় জানান, মাথায় গুরুতর আঘাত রয়েছে তাঁর। তাই সরিফুলকে মল্লিকবাজারের ওই হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। খাবার সরবরাহকারী সংস্থার এক প্রতিনিধি নয়ন দাস এ দিন বলেন, ‘‘সরিফুলের দোষ নেই। তাঁর মোটরবাইকে অন্য মোটরবাইক এসে ধাক্কা মারে। তবে কর্তব্যরত অবস্থায় দুর্ঘটনাটি ঘটায় সরিফুলের চিকিৎসার যাবতীয় খরচ সংস্থার তরফেই বহন করা হবে।’’

পুলিশ সূত্রের খবর, দোষ কার, তা তদন্তের পরে স্পষ্ট হবে। তবে ক্রেতার কাছে খাবার পৌঁছে দিতে গিয়ে মোটরবাইকের গতি বেশি থাকছে চালকদের। এ দিনের দুর্ঘটনার পরপরই বিধাননগর পুলিশ ওই খাবার সরবরাহকারী সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন। তাড়া থাকলেও ওভারটেক কিংবা বেপরোয়া গতিতে যাতে গাড়ি না চালানো হয়, সে বিষয়ে সংস্থার প্রতিনিধিদের নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘খাবার সরবরাহ পিছু কমিশন থাকে। ফলে যত বেশি ক্রেতার কাছে পৌঁছনো যাবে, ততই লাভ। কিন্তু প্রাণের বিনিময়ে তা কোনও ভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। বৈঠকে সংস্থার সঙ্গে এ নিয়ে

কথা হয়েছে।’’

যদিও নয়নবাবুর দাবি, কী ভাবে নিজেকে সুরক্ষিত রেখে খাবার ক্রেতার কাছে পৌঁছে দিতে হবে, সে জন্য ডেলিভারি বয়দের প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Accident
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE