Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

মশা ঠেকাতে ফোয়ারায় কোপ সল্টলেকে

ডেঙ্গির হানা ঠেকাতে এমনই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিধাননগর পুরসভার সৌন্দর্যায়ন দফতর। নতুন করে আর কোনও ওয়ার্ডে ফোয়ারা বসানো হবে না বলে স্থির করেছেন ওই দফতরের কর্তারা।

আস্তানা: সল্টলেকের রামকৃষ্ণ আইল্যান্ড। ছবি: শৌভিক দে

আস্তানা: সল্টলেকের রামকৃষ্ণ আইল্যান্ড। ছবি: শৌভিক দে

সৌরভ দত্ত
শেষ আপডেট: ০৯ জুলাই ২০১৮ ০২:০৪
Share: Save:

মশার আতঙ্কে ব্রাত্য ফোয়ারা!

ডেঙ্গির হানা ঠেকাতে এমনই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিধাননগর পুরসভার সৌন্দর্যায়ন দফতর। নতুন করে আর কোনও ওয়ার্ডে ফোয়ারা বসানো হবে না বলে স্থির করেছেন ওই দফতরের কর্তারা।

সল্টলেকের বিভিন্ন ওয়ার্ডের সৌন্দর্যায়নে এক সময়ে পুর কর্তৃপক্ষের অগ্রাধিকারে ছিল ফোয়ারা। পুরসভা সূত্রের খবর, ২০১২-’১৩ সালে রামকৃষ্ণ আইল্যান্ডে ফোয়ারা বসানোর মাধ্যমে সল্টলেকের আইল্যান্ডগুলির সৌন্দর্যায়নের হাতেখড়ি হয়। তার পরেই এক এক করে একাধিক আইল্যান্ডে ফোয়ারা বসানো হয়। প্রতিটি ফোয়ারা যাতে অন্য রকম দেখতে হয়, সে দিকেও বিশেষ নজর দেওয়া হয়েছিল। এইচবি ব্লকের আইল্যান্ডে ডলফিন হলে পিএনবি মোড়ে সিংহের মুখ দিয়ে জল পড়ার ব্যবস্থা করা হয়। লাবণি আইল্যান্ডের আকর্ষণ ছিল গাছ থেকে জলের ধারা। কিন্তু রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে সেগুলির অধিকাংশই এখন অকেজো। উল্টে ফোয়ারার জলাধারে জমা জলে মশা অবাধে বংশবিস্তার করছে।

এইচবি ব্লকের ফোয়ারার জলাধারে শ্যাওলা জমে রয়েছে। একই অবস্থা পিএনবি মোড় এবং রামকৃষ্ণ আইল্যান্ডে। পুরসভা সূত্রের খবর, সিডি ব্লকে শপিং মলের কাছে ফোয়ারার নজ়ল প্রায় দু’বছর হল খুলে ফেলা হয়েছে। কিন্তু সেখানে জলাধারের চাতালে বৃষ্টির জল জমে রয়েছে। ডেঙ্গি সংক্রমণের মরসুমে ওই চাতালের জল মশার ডিম পাড়ার পক্ষে একেবারে আদর্শ পরিবেশ। সম্প্রতি বইমেলা উপলক্ষে করুণাময়ী মেলা প্রাঙ্গণে একাধিক ফোয়ারা তৈরি করেছিল নগরোন্নয়ন দফতর। সেগুলিও অকেজো হয়ে পড়ে রয়েছে বলে পুরসভা সূত্রে খবর।

করুণাময়ী মেলা প্রাঙ্গণের ফোয়ারার জমা জলেই জন্মাচ্ছে মশা।

সল্টলেকের বিভিন্ন আইল্যান্ডে কৃত্রিম ঝর্নার এই বেহাল দশা প্রসঙ্গে পুরসভার আধিকারিকদের বক্তব্য, অল্প দিনের মধ্যেই নজ়লের মুখে আয়রন জমে যায়। তা ছাড়া, ফোয়ারা সচল রাখার জন্য যে সমস্ত যন্ত্রাংশের প্রয়োজন, সেগুলি প্রায়ই চুরি যাওয়ায় সমস্যা তৈরি হয়। সব মিলিয়ে রক্ষণাবেক্ষণের প্রক্রিয়াটি খরচসাপেক্ষ। বিধাননগর পুরসভা সূত্রের খবর, আইল্যান্ড এবং ফোয়ারা রক্ষণাবেক্ষণে বেসরকারি সংস্থাকে যুক্ত করে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন পুর কর্তৃপক্ষ। কিন্তু নানা জটিলতায় সেই পথেও আপাতত অধরা সমাধানসূত্র।

সৌন্দর্যায়ন দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘পুরসভা নতুন কোনও ফোয়ারা করছে না। পুরনোগুলি কী অবস্থায় রয়েছে, তা-ও দেখা হচ্ছে। যেগুলি একেবারে অকেজো, সেগুলি প্রয়োজনে বদলে ফেলা হতে পারে।’’ এই ভাবনার কারণ ব্যাখ্যায় ওই পুরকর্তা বলেন, ‘‘ফোয়ারা বন্ধ হয়ে থাকলে সেই জমা জলে মশারা ডিম পাড়ে। আইল্যান্ডের গাছগাছালিও সমস্যা হয়ে দাঁড়াচ্ছে।’’ তবে যদি কোনও ব্লক ফোয়ারা রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব নিতে রাজি হয়, সে ক্ষেত্রে অনুমতি মিলতে পারে বলে জানিয়েছেন তিনি।

সৌন্দর্যায়ন দফতরের মেয়র পারিষদ দেবাশিস জানা বলেন, ‘‘ওয়ার্ডের সৌন্দর্যায়নে নতুন ফোয়ারা বসানোর কোনও উপায় নেই।’’ রক্ষণাবেক্ষণের অসুবিধার জন্যই এই সিদ্ধান্ত। দেবাশিসবাবু বলেন, ‘‘ফোয়ারার পরিবর্তে মূর্তি বসাব। সেটাই ভাল।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Saltlake Mosquito
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE