প্রতীকী ছবি।
লকডাউনে নেট-নির্ভরতা বেড়েছে, বেড়েছে অনলাইন ওয়ালেট নির্ভর লেনদেনও। সেই সুযোগে জাল বিছোচ্ছে প্রতারকেরা। কার্ড ব্লকের গল্প এখন পুরনো। এ বার তাই কেওয়াইসি (নো ইয়োর কাস্টমার) নেওয়ার ছকে দূর থেকেই গ্রাহকের অজান্তে তাঁর মোবাইল নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নিচ্ছে প্রতারক। হরিদেবপুর থানা এলাকার এক বাসিন্দা সম্প্রতি এ ভাবেই প্রায় এক লক্ষ টাকা খুইয়েছেন। পুলিশে অভিযোগ জানিয়েছেন তিনি।
এই ধরনের জালিয়াতির শিকার মানুষ এবং পুলিশের একাংশ জানাচ্ছেন, বিভিন্ন অনলাইন ওয়ালেটে লেনদেনের জন্য নতুন করে কেওয়াইসি লাগবে বলে ফোন আসছে। কখনও বা মিলছে এসএমএস। সেখানে একটি মোবাইল নম্বর ও একটি লিঙ্ক থাকছে। অনেকেই বিভ্রান্ত হয়ে ফোন করলে জানানো হচ্ছে, ওয়ালেট পরিষেবা চালু রাখার জন্য নতুন করে কেওয়াইসি তথ্য দিতে হবে এবং তা সম্পূর্ণ অনলাইন নির্ভর। এ জন্য প্লে-স্টোর থেকে একটি মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন ডাউনলোড করতে বলা হচ্ছে। তার পরেই ন’সংখ্যার একটি কোড ফোনের ও--পারের ব্যক্তিকে দিতে হচ্ছে। এর পরেই দেখা যাচ্ছে, অ্যাকাউন্টে থাকা টাকা গায়েব হয়ে যাচ্ছে।
পুলিশ ও সাইবার বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, ওই অ্যাপগুলি আসলে রিমোট শেয়ারিং। ওই ন’সংখ্যার কোড অন্য কাউকে দিলে সে দূরে থেকেই অ্যাপ মারফত অন্যের মোবাইল বা কম্পিউটার নিজের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নিতে পারবে। শুধু তাই নয়, মোবাইলে কী পাসওয়ার্ড দিচ্ছেন, তা-ও জানতে পারবে দূর থেকে ওই প্রতারক। এমনকি মোবাইলে কী কী ব্যাঙ্কের নথি রয়েছে, তাও জানা সম্ভব। এ ভাবেই নতুন কায়দায় জালিয়াতেরা টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।
সাইবার বিশেষজ্ঞদের মতে, ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ড ব্লক হওয়ার অছিলায় প্রতারণার ছক পরিচিত হয়ে যাওয়ায় এই নতুন পন্থা নিয়েছে জালিয়াতেরা। লকডাউনে নেট-লেনদেন বৃদ্ধি হওয়ায় পরিষেবা বন্ধের আশঙ্কাও মানুষের বেড়েছে। ফলে প্রতারকের পাতা ফাঁদে সহজেই পা দিচ্ছেন মানুষ।
যদিও পেটিএম-সহ বিভিন্ন অনলাইন ওয়ালেট সংস্থা বার বার সতর্ক করছে, অনলাইনে কখনও কেওয়াইসি নেওয়া হয় না। কেউ তাদের কর্মী পরিচয় দিয়ে ফোন করলেও গ্রাহককে নিজেদের তথ্য জানাতে নিষেধ করা হয়েছে। তবুও হচ্ছে একের পর এক প্রতারণা।
সতর্ক করছেন সাইবার বিশেষজ্ঞেরাও। তাঁদের পরামর্শ, ফোনে কেওয়াইসি নেওয়া হয় না। যে কোনও অজানা লিঙ্ক বা অ্যাপ ডাউনলোড থেকেও বিরত থাকুন। পুলিশ জানিয়েছে, ওই অ্যাপগুলি মূলত টিম ভিউয়ারের কাজ করে। প্রথম দিকে জামতাড়া গ্যাং এই ধরনের প্রতারণায় যুক্ত থাকত। সূত্রের খবর, এখন বিভিন্ন জায়গা থেকে ওই প্রতারণা চলছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy