Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Murder

অপহরণ করে খুন! ময়দানে মিলল দু’বছরের শিশুকন্যার দেহ

প্রাথমিক ভাবে তদন্তকারীদের অনুমান, মাথায় আঘাত করে খুন করে দেহটি ফেলে দেওয়া হয়েছে ময়দান এলাকার নর্দমায়।

ঘটনাস্থল খতিয়ে দেখছে পুলিশ ও ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা। —নিজস্ব চিত্র।

ঘটনাস্থল খতিয়ে দেখছে পুলিশ ও ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদাদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩১ জানুয়ারি ২০১৯ ১৪:১৪
Share: Save:

নর্দমার মধ্যে পাওয়া গেল এক শিশুকন্যার দেহ। ময়দান থানা এলাকার গঙ্গাসাগর মেলা মাঠের উত্তর-পশ্চিম দিকে ওই দেহটি পাওয়া গিয়েছে।

পুলিশ সূত্রে খবর, বুধবার সকালে মৃত শিশুর পরিবারের সদস্যরাই প্রথম দেখেন শিশুটির দেহ পড়ে রয়েছে। পরিবারের সদস্য়রাই শিশুটিকে নিয়ে যান এসএসকেএম হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। পুলিশ সূত্রে খবর দু’বছরের ওই শিশুটি বাবা-মায়ের সঙ্গে বাবুঘাটের ঠিক উল্টোদিকের ফুটপাতে থাকত। বাবা তপন সরকার এবং মা মুন্নি দু’জনেই দিন মজুরের কাজ করেন।

শিশুটির মামা ইলিয়াস মল্লিক বলেন,“মঙ্গলবার রাতে অন্যদিনের মতই বাবা-মায়ের সঙ্গে ঘুমিয়েছিল শিশুটি। মাঝরাত থেকে হঠাৎ করে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। গোটা রাত খোঁজা হয়। সকালে পাশের নর্দমায় ঝোপের মধ্যে শিশুটিকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখতে পাওয়া যায়।”

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শিশুটির মাথায় আঘাতের চিহ্ন আছে। সম্ভবত ভারী ও ভোঁতা কিছু দিয়ে আঘাত করা হয়েছে তার মাথায়। প্রাথমিক ভাবে তদন্তকারীদের অনুমান, মাথায় আঘাত করে খুন করে দেহটি ফেলে দেওয়া হয়েছে ময়দান এলাকার নর্দমায়। দেহের অন্য অংশেও আঘাতের চিহ্ন আছে বলে জানিয়েছেন এক তদন্তকারী অফিসার। তবে ময়না তদন্তে কোনও যৌন হেনস্তার চিহ্ন পাওয়া যায়নি।

ঘটনাস্থল থেকে রক্তমাখা গাছের অংশ সংগ্রহ করছেন ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা।—নিজস্ব চিত্র

আরও পড়ুন: মেট্রোয় ফের আগুন আতঙ্ক, দমদম স্টেশনে ধোঁয়ায় ভরে গেল নন এসি কামরা

ময়দান থানা ইতিমধ্যেই একটি খুনের মামলা রুজু করেছে। প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে, অপহরণ করে খুন করা হয়েছে শিশুটিকে। কিন্তু কেন অপহরণ এবং কে বা কারা এর পেছনে রয়েছে— তা এখনও স্পষ্ট নয়। পুলিশ সূত্রে খবর, তপন সরকার ওই শিশু কন্যার সৎ বাবা। ওই দম্পতির আরও দুই সন্তান রয়েছে। তাদের বাবা তপন হলেও মুন্নি তাদের মা নয়।

তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, যে জায়গায় দেহটি পাওয়া গিয়েছে সেই এলাকা বেশ নির্জন। ওই জায়গায় কোনও সিসি ক্যামেরাও নেই। রাস্তার ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।

বৃহস্পতিবার ঘটনাস্থলে যান ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা। পুলিশ ইতিমধ্যেই কয়েক জন ফুটপাথবাসীকে আটক করেছে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য। আটক করা হয়েছে শিশুর বাবা-মাকেও। পুলিশ মনে করছে ব্যক্তিগত আক্রোশের জেরেই খুন করা হয়েছে ওই শিশুকে। ময়দান থানার পুলিশের পাশাপাশিঘটনার তদন্ত করছেন কলকাতা গোয়েন্দা বিভাগের হোমিসাইড শাখাও। ফরেন্সিক সায়েন্স ল্যাবরোটরির সিনিয়র সায়েন্টিস্ট ওয়াসিম রেজা বলেন,“ আমরা ঘটনাস্থল থেকে বেশ কিছু নমুনা সংগ্রহ করেছি। গাছের পাতা এবং মাটিতে রক্তের দাগ রয়েছে।।”

আরও পড়ুন: পোড়া বিছানা, বেরোচ্ছে ধোঁয়া, কসবায় বন্ধ ঘর থেকে কিশোরের দেহ উদ্ধার

এর আগে ঠিক একই রকম ভাবে ময়দান লাগোয়া হেস্টিংস থানা এলাকায় ড্রামের মধ্যে এক ব্যক্তির দেহ পাওয়া গিয়েছিল। ময়দানে পাওয়া গিয়েছিল এক মহিলার দেহ। ওই দু’টি ক্ষেত্রেই মৃতদের শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। দু’টি হত্যা রহস্যই এখনও কিনারা করতে পারেনি পুলিশ।তদন্তকারীরা মনে করছেন পারিবারিক অশান্তির জেরেই খুন। সেই অনুযায়ী তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন গোয়েন্দারা।

(কলকাতা কলকাতা শহরের রোজকার ঘটনার বাছাই করাবাংলা খবরপড়তে চোখ রাখুন আমাদেরকলকাতাবিভাগে।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE