Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪

স্ত্রীকে ‘মার’, মেয়ের টুইট ও ফোনে ধৃত

এ বার একটি টুইট দেখে এবং ফোন পেয়ে ‘মারমুখী’ বৃদ্ধের হাত থেকে তাঁর মেয়ে ও স্ত্রীকে বাঁচাল কলকাতা পুলিশ। বুধবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে ঠাকুরপুকুরে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ অগস্ট ২০১৯ ০২:৪০
Share: Save:

ফেসবুকে একটি ভিডিয়ো পোস্ট করে আত্মহত্যা করতে যাওয়ার কথা জানিয়েছিলেন এক ব্যক্তি। যা দেখে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ ফোন এবং ইমেল করে লালবাজারকে বিষয়টি জানাতেই কসবা থানার পুলিশ বছর বিয়াল্লিশের ওই ব্যক্তিকে বাঁচিয়েছিল।

এ বার একটি টুইট দেখে এবং ফোন পেয়ে ‘মারমুখী’ বৃদ্ধের হাত থেকে তাঁর মেয়ে ও স্ত্রীকে বাঁচাল কলকাতা পুলিশ। বুধবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে ঠাকুরপুকুরে। পুলিশ জানিয়েছে, মেয়ের অভিযোগের ভিত্তিতে রাতেই তাঁদের আবাসনে গিয়ে সেই বৃদ্ধকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ধৃতের বয়স ৭১ বছর। বৃহস্পতিবার ওই বৃদ্ধ জামিনে ছাড়া পেয়েছেন।

বুধবার রাত সাড়ে দশটা নাগাদ কলকাতা পুলিশের টুইটার হ্যান্ডেলে এক তরুণী লেখেন, তাঁর বাবা খুব মারধর করছেন মাকে। তাঁকে ও তাঁর মাকে ওই বৃদ্ধ মেরেও ফেলতে পারেন। তিনি কোনও মতে বাবার হাত থেকে বাঁচতে নিজেকে একটি ঘরে বন্দি করে রেখেছেন। না-হলে তাঁর হাত থেকে মোবাইল কেড়ে নিয়ে বাবা ভেঙে দিতে পারেন। ঠাকুরপুকুর থানায় ফোন করেও যে কোনও সাড়া পাননি, তরুণী সে কথাও জানান। তাঁর আর্জি, পুলিশ যেন তড়িঘড়ি ব্যবস্থা নেয়। বাবার হাতে তাঁর মায়ের হেনস্থা যে অন্য ফ্ল্যাটের লোকজনও দেখতে পেয়েছেন, তরুণী সে কথাও লেখেন।

টুইটারে লেখার পরে ওই তরুণী ১০০ ডায়ালে ফোন করে বিষয়টি জানান লালবাজারের কন্ট্রোল রুমে। লালবাজার সঙ্গে সঙ্গে ঠাকুরপুকুর থানাকে ব্যবস্থা নিতে বলে। সেই নির্দেশ পেয়ে পুলিশ ডায়মন্ড হারবার রোডের শখেরবাজার মোড়ের কাছে ওই আবাসনে পৌঁছয় এবং মেয়ের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে বাবাকে গ্রেফতার করে।

পুলিশ দাবি করেছে, কন্ট্রোল রুমে জানানোর ১০ মিনিটের মধ্যেই তারা আবাসনে গিয়ে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, স্থানীয় থানাকে সক্রিয় করতে হলে সব সময়ে লালবাজারকে জানাতে হবে কেন? তরুণীর অভিযোগ পেয়ে প্রথমেই ঠাকুরপুকুর থানা নড়ে বসল না কেন? এ প্রশ্নের উত্তরে ঠাকুরপুকুর থানা অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করে দাবি করেছে, তরুণীর অভিযোগ পেয়েই তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছে গিয়েছিল।

এ দিন দুপুরে ওই আবাসনে গিয়ে জানা গেল, মা-বাবা এবং বছর উনচল্লিশের ওই তরুণী থাকেন ছ’তলায়। ৭১ বছরের অভিযুক্ত বৃদ্ধ ও তাঁর স্ত্রী দু’জনেই এক সময়ে ব্যাঙ্কে চাকরি করতেন। বৃদ্ধ স্বেচ্ছাবসর নেন অনেক আগেই। কয়েক বছর আগে স্ত্রীও অবসর নেন। মেয়ে আগে চাকরি করলেও পরে ছেড়ে দেন।

ওই আবাসনের অন্য বাসিন্দারা জানান, এর আগেও এমন ঘটনা ঘটেছে। তাঁদের কথায়, ওই তরুণীর বাবা খুবই রগচটা মানুষ। আগেও একাধিক বার ওই ফ্ল্যাটে গোলমাল এবং মারপিট হয়েছে। এমনকি, এর আগেও এক বার পুলিশ এসেছিল। সে সময়ে কাউকে গ্রেফতার না করে দু’পক্ষকে বুঝিয়ে যায় তারা। কিন্তু বুধবার রাতে গণ্ডগোল অন্য মাত্রায় পৌঁছনোয় বৃদ্ধকে গ্রেফতার করা হয়।

তরুণীর অভিযোগ অস্বীকার করে পুলিশের কাছে বৃদ্ধ বাবার পাল্টা অভিযোগ, তাঁকেই তাঁর মেয়ে মারধর করেন। মেয়েই ছোটবেলা থেকে রগচটা। ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করলেও চাকরি করেন না। সারা দিন বাড়িতেই থাকেন এবং সামান্য কিছু হলেই রেগে যা খুশি করেন। এ বিষয়ে ওই তরুণী কিংবা তাঁর মা কোনও কথা বলতে চাননি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Crime Torture Kolkata Police Lalbazar Twitter
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE