Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

আজ ভূতচতুর্দশী, কলকাতায় কোথায় কোথায় থাকেন তাঁরা?

আজ ভূতচতুর্দশী। আকাশে বাতাসে উড়ে বেড়াচ্ছেন তেনারা। চলছে পূর্বপুরুষদের আত্মাকে তুষ্ট করার কসরত্। আমাদেরও তৈরি হতে হবে। এই সময়ে চলুন ঘুরে আসা যাক কলকাতার নাম করা কিছু ভূতের ডেরায়।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৯ অক্টোবর ২০১৫ ১৩:২০
Share: Save:

আজ ভূতচতুর্দশী। আকাশে বাতাসে উড়ে বেড়াচ্ছেন তেনারা। চলছে পূর্বপুরুষদের আত্মাকে তুষ্ট করার কসরত্। আমাদেরও তৈরি হতে হবে। এই সময়ে চলুন ঘুরে আসা যাক কলকাতার নাম করা কিছু ভূতের ডেরায়।

১। ন্যাশনাল লাইব্রেরি- একশ আশি বছরের পুরনো ন্যাশনাল লাইব্রেরির নাকি আনাচে কানাচে, বইয়ের ভাঁজে ভাঁজে লুকিয়ে রয়েছেন তেনারা। লাইব্রেরির পুরনো কর্মীদের মুখে মুখে ঘোরে বেশ হাড় কাঁপানো অতিপ্রাকৃত গল্প। ভিতু নতুন কর্মীরা ভয় নাইট শিফট করতেই চান না।

২। পুতুল বাড়ি- কলকাতার ভূতের বাড়ি বলতেই পুতুল বাড়ির কথা মনে আসে। এই বাড়ির উপরের তলায় নাকি ঘুরে বেড়ান অতৃপ্ত পেত্নিরা। তবে এই বাড়ির ভূতের গল্পের সঙ্গে মিশে আছে বঞ্চনার ইতিহাসও। গুজব রয়েছে এই বাড়িতে নাকি আগেকার দিনে বাবুরা মহিলাদের নিয়ে এসে শারীরিক নির্যাতন চালাতেন। অনেক সময় তাঁদের খুনও করা হতো। বাড়ির বারান্দায়, উপরের তলার কুঠুরিতে তাঁদের আত্মাদের দেদার আনাগোনা।

৩। লোয়ার সার্কুলার রোডের কবরস্থান- করবস্থানে ভূত থাকবে না তা আবার হয় নাকি? এই গোরস্থানেই শুয়ে আছেন স্যর ডব্লিউ এইচ ম্যাক নাটেন। শোনা যায় প্রায়শই নাকি কবরের চারপাশে ঘুরে বেড়ান তিনি। ভয়ে কাঁপতে থাকে আশেপাশের গাছগুলো।

৪। রবীন্দ্র সরোবর মেট্রো স্টেশন- মাথায় আত্মহত্যার ভূত চাপলে নাকি হাতছানি দিয়ে ডাকে রবীন্দ্র সরোবর মেট্রো স্টেশন। কলকাতায় মেট্রো স্টেশনে যত আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে তার বেশির ভাগই এই স্টেশনে। ‘প্যারাডাইস অফ সুইসাইড’ বলেও মজা করা হয় এই স্টেশনকে।

৫। পার্ক স্ট্রিট কবরস্থান- গোরস্থানে সাবধান! মাঝে মাঝে অদ্ভুতুরে সব কাণ্ড ঘটে এই গোরস্থানে। মৃত প্রিয় জনের কবরে ফুল দিতে গিয়ে মাথা ঘুরে পড়ে গেছেন, ক্যামেরায় ধরা পড়েছে ছায়ামূর্তির ছবি এমন মুখরোচক গল্প প্রায়ই শোনা যায় পার্ক স্ট্রিট গোরস্থানে।

৬। হেস্টিংস হাউজ- হেস্টিংস কলেজে পড়েছেন অথচ হেস্টিংস সাহেবের ভূত দেখেননি, নিদেন পক্ষে তাঁর পায়ের শব্দ শোনেনি এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া বিরল। হোস্টেলে এক ছাত্রীর মধ্যে নাকি এক বার ঢুকেও পড়ে ছিল হেস্টিংস সাহেবের আত্মা। ক্যাম্পাসের ফুটবল মাঠে খেলতে খেলতে এক ছাত্রের মৃত্যু ঘিরেও রয়েছে রহস্যময় গল্প।

৭। খিদিরপুর ডক- ব্রিটিশরা তাঁকে লক্ষ্ণৌর মসনদচ্যুত করার পর কলকাতায় এসে ঠাঁই নিয়ে ছিলেন নবাব ওয়াজেদ আলি শাহ। এই খিদিরপুর ডকেই প্রথম পা রেখে ছিলেন তিনি। শোনা যায় এখনও নাকি ব্রিটিশদের ওপর প্রতিশোধ নেওয়ার তাড়নায় খিদিরপুর ডকে ঘুরে বেড়ান নবাবি আত্মা!

৮। নিমতলা শ্মশান- শ্মশান ঘিরে দু’-চারটে ভূতের গল্পই না থাকে তবে আবার শ্মশানের মান থাকে নাকি? নিমতলা ঘাটে মাঝে মাঝেই নাকি দেখা দেন শ্মাশান কালী। চিতা থেকে আধপোড়া মাংস তুলে খাচ্ছে পিশাচ। এমন দৃশ্যও নাকি দেখা যায় এখানে।

৯। রাইটার্স বিল্ডিং- ব্রিটিশ আমলে তৈরি বাড়িতে ছিল প্রচুর ফাঁকা ঘর। আর সেই সব ঘরেই নাকি বাসা বেঁধে ছিলেন অতৃপ্ত আত্মারা। রাত দুপুরে সারা বাড়িতে দাপিয়ে বেড়াতেন তেনারা। দুঃখের বিষয় বাড়িটা ভেঙে ফেলায় তেনারা এখন বাস্তুহারা। গেলেন কোথায়?

১০। আকাশবাণী ভবন- আকাশবাণী ভবনের বারান্দায় নাকি হেঁটেচলে বেড়ান ভূতেরা। তাঁরা হঠাত্ ক্ষেপে উঠলেই মহাবিপদ। হঠাত্ মাথা ঘুরে পড়ে গেলেন সঞ্চালক, বিকল হয়ে গেল সাউন্ড রেকর্ডার। আর নাইট শিফট থাকলে তো কথাই নেই। তেনাদের দাপটে ছাদে যাওয়া জো নেই। এমন অদ্ভুতুড়ে গল্পের ছড়াছ়ড়ি আকাশবাণী ভবন জুড়ে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE