ফাইল চিত্র
কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়ম, করোনা পরিস্থিতিতে অন্য শহর থেকে উড়ানে যাঁরা কলকাতায় এসে নামছেন, তাঁদের প্রত্যেকের শরীরের তাপমাত্রা মাপতে হবে। তাপমাত্রা বেশি হলে এবং অন্য উপসর্গ থাকলে সেই যাত্রীকে কোয়রান্টিনে পাঠিয়ে করোনা পরীক্ষাও করাতে হবে।
কিন্তু কিছু দিন ধরে অভিযোগ উঠছে, শহরে নামার পরে বিমানবন্দরে এই পরীক্ষা ঠিক মতো হচ্ছে না। উপসর্গ থাকা বা জ্বরে আক্রান্ত যাত্রী নজর এড়িয়ে বেরিয়ে পড়ছেন বিমানবন্দর থেকে। রবিবার জ্বর নিয়ে আসা এক দম্পতিও অনায়াসে বেরিয়ে আসেন। সোমবার পরীক্ষা করে দু’জনের শরীরেই করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ে। ফলে বিমানবন্দরের পরীক্ষার যৌক্তিকতা নিয়েই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
ছেলেকে কলেজে ভর্তি করানোর জন্য গত বৃহস্পতিবার চেন্নাই গিয়েছিলেন ওই বাঙালি দম্পতি। তখন দু’জনেরই জ্বর ভাব ছিল। চেন্নাইয়ে পৌঁছনোর পরে মহিলার বেশি জ্বর আসে। ভর্তি শেষে ছেলেকে নিয়েই রবিবার ফিরেছেন তাঁরা। স্বামীর দাবি, ওই দিন উড়ান ধরতে তাঁরা যখন বেরোন, তখন তাঁর স্ত্রীর গায়ে বেশ জ্বর। ওষুধ খেয়েও জ্বর কমেনি।
এখন প্রতিটি বিমানবন্দরে ঢোকার মুখে প্রত্যেক যাত্রীর তাপমাত্রা মাপা হচ্ছে। কোথাও কপালের সামনে যন্ত্র ধরে, কোথাও ক্যামেরা বসিয়ে মনিটরের মাধ্যমে। দম্পতির দাবি, চেন্নাই বিমানবন্দরে ঢোকার মুখে তাঁদের কপালে যন্ত্র ঠেকিয়ে পরীক্ষা হয়নি। যদি মনিটরেও পরীক্ষা হয়ে থাকে, তা হলেও মহিলার দেহে জ্বর ধরা পড়েনি। তাঁরা বিকেলের উড়ানে কলকাতায় আসেন।
কলকাতায় নামার পরে প্রত্যেক যাত্রীর তাপমাত্রা আবার মাপার কথা। কলকাতা বিমানবন্দরের অ্যারাইভালে ক্যামেরা রয়েছে। বেরোনোর মুখে প্রত্যেকের শরীরের তাপমাত্রা তাতে মাপা হচ্ছে। এই কাজ করছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। আগে কপালে যন্ত্র ঠেকিয়ে করা হচ্ছিল। যাত্রীদের তা চোখেও পড়ছিল। কিন্তু এখন যাত্রীরা বিমান থেকে নেমে হেঁটে বেরিয়ে যাচ্ছেন। অধিকাংশ সময়েই জানতে পারছেন না, তাঁর দেহের তাপমাত্রা ক্যামেরায় ইতিমধ্যেই মাপা হয়ে গিয়েছে।
রবিবারও কলকাতায় নেমে ছেলেকে নিয়ে হেঁটে বেরিয়ে যান ওই দম্পতি। মহিলার দেহে জ্বর থাকা সত্ত্বেও কোনও কর্মী তাঁদের আটকাননি। স্বভাবতই প্রশ্ন উঠছে, এই ব্যবস্থা কতটা যুক্তিযুক্ত? দম্পতির দাবি, চেন্নাইয়ের হোটেল ছাড়ার পর থেকে কলকাতায় বাড়ি পৌঁছনো পর্যন্ত পুরো সময়েই মহিলার দেহে জ্বর ছিল। সে ক্ষেত্রে এই প্রশ্নও উঠছে, মনিটরে তা কেন ধরা পড়ল না?
বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের এক কর্তার কথায়, ‘‘পুরো দায় আমাদের উপরে বা স্বাস্থ্য দফতরের উপরে চাপানো ঠিক নয়। যাত্রীদেরও সচেতন হওয়া উচিত। কেন্দ্রের নিয়ম সকলেই জানেন। গায়ে জ্বর নিয়েও ওই দম্পতি বিমানে উঠলেন কেন? সোমবার পরীক্ষা করে যদি তাঁদের দেহে সংক্রমণ পাওয়া যায়, তা হলে যে উড়ানে তাঁরা এসেছেন, সেখানে তাঁদের আশপাশে বসে থাকা যাত্রীরাও সংক্রমিত হয়ে থাকতে পারেন।’’
রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের এক শীর্ষ কর্তা জানান, নির্দিষ্ট ভাবে এমন অভিযোগ পেলে সংশ্লিষ্ট কর্মীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে তাঁরও মত, ওই দম্পতির চেন্নাই থেকে বিমানে ওঠা উচিত হয়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy