Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

 সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে দাপটে ব্যাটিং চলছে বর্ষার

শহরের একাধিক জায়গায় গত ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টি হয়েছে ১০০ মিলিমিটারেরও বেশি

জল-ছবি: রাতভর বৃষ্টিতে ভাসছে আমহার্স্ট স্ট্রিট। বৃহস্পতিবার। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী

জল-ছবি: রাতভর বৃষ্টিতে ভাসছে আমহার্স্ট স্ট্রিট। বৃহস্পতিবার। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৭ জুলাই ২০১৮ ০০:০০
Share: Save:

মরসুমের প্রথম সেঞ্চুরিটা করে ফেলল বর্ষা!

শহরের একাধিক জায়গায় গত ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টি হয়েছে ১০০ মিলিমিটারেরও বেশি। গত ১২ জুন বালিগঞ্জে বৃষ্টি হয়েছিল ৯৪ মিলিমিটার। এ বছরে এত দিন
সেটাই ছিল সর্বাধিক। কিন্তু সেই রেকর্ড ভেঙে যায় বৃহস্পতিবার! এ দিন উল্টোডাঙায় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ছিল ১৩৩ মিলিমিটার। সারা দিন ধরে দফায় দফায় বৃষ্টিতে সারা শহর, বিশেষ করে উত্তর ও মধ্য
কলকাতা বেশ কিছু ক্ষণের জন্য জলমগ্ন হয়ে পড়ে। আলিপুরের আবহাওয়া দফতর জানাচ্ছে, আগামী ৪৮ ঘণ্টায় আরও বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।

আরও বৃষ্টির পূর্বাভাস থাকায় উদ্বিগ্ন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ দিন কলকাতার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়কে ডেকে জল জমার বিষয়টি বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে দেখতে বলেন তিনি।

হাওয়া অফিসের তথ্য এ-ও বলছে, চলতি মরসুমে, অর্থাৎ জুন ও জুলাই মিলিয়ে কলকাতায় এখনও পর্যন্ত স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের থেকে ১৮ শতাংশ বেশি বৃষ্টি হয়েছে। যদিও গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে এখনও পর্যন্ত বৃষ্টির ঘাটতি রয়েছে। আগামী দিনগুলির বৃষ্টিতে সেই ঘাটতি কতটা পূরণ হয়, সে দিকেই এখন তাকিয়ে রয়েছে আবহাওয়া দফতর।

দফতর সূত্রের খবর, পয়লা জুন থেকে ২৫ জুলাইয়ের সময়সীমার মধ্যে কলকাতায় বৃষ্টি হয়েছে ৬৭৭.৬ মিলিমিটার। যা স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের থেকে ১৮ শতাংশ বেশি। কলকাতায় বেশি বৃষ্টি হলেও গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে কিন্তু বৃষ্টিতে এখনও ২৩ শতাংশ ঘাটতি রয়েছে। আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গণেশকুমার দাস বলেন, ‘‘দফায় দফায় আরও বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে আগামী দিনে। বৃষ্টির হার কত হল, তার পরে বোঝা যাবে।’’

কলকাতা পুরসভা সূত্রের খবর, বুধবার রাত ১০টা থেকে পরের দিন দুপুর ২টো পর্যন্ত শহরে সর্বাধিক বৃষ্টি হয়েছে উল্টোডাঙা-সহ সংলগ্ন বিভিন্ন এলাকায়। যার ফলে উত্তর
কলকাতার বিস্তীর্ণ অংশে এ দিন জল জমে যায়। উল্টোডাঙার দাসপাড়া, গৌরীবাড়ি, শোভাবাজারের মসজিদ বাড়ি স্ট্রিট-সহ একাধিক এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়ে। জল জমার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন মেয়র পারিষদ (নিকাশি) তারক সিংহও।
তারকবাবু বলেন, ‘‘উত্তর ও মধ্য কলকাতায় এ দিন প্রবল বৃষ্টি হয়েছে। এটা অস্বীকার করার উপায় নেই যে, জল জমেছিল অনেক জায়গায়। তবে সে জল নেমেও গিয়েছে।’’ এ দিন তুলনামূলক ভাবে দক্ষিণ কলকাতায় কম বৃষ্টি হয়েছে। সব থেকে কম বৃষ্টি হয়েছে গড়িয়ার কামডহরিতে। মাত্র ১৬ মিলিমিটার।

জল জমল কেন? কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তারকবাবু অবশ্য লকগেট বন্ধ রাখা এবং জোয়ারের কারণে গঙ্গায় জল ফেলতে না পারার সেই পুরনো তত্ত্বই তুলে এনেছেন। জল জমার সমস্যা মেটাতে পুরসভা নতুন একটি প্রকল্প চালু করতে চলেছে বলে জানিয়েছেন তারকবাবু। লকগেট বন্ধ থাকলেও যাতে জমা জল গঙ্গায় ফেলা যায়, তার জন্য পুরসভা চারটি লিফটিং স্টেশন তৈরি করবে। তারকবাবুর কথায়, ‘‘পাঁচ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে ওই প্রকল্পের জন্য। এই ব্যবস্থায় লকগেট বন্ধ থাকলেও জমা জল তুলে গঙ্গায় ফেলা যাবে। এতে ভাল ফল পাওয়া যাবে বলেই আমাদের বিশ্বাস।’’

তবে চলতি বছরে জমা জলের ভোগান্তি কাটার নয়। কারণ, ওই প্রকল্পের বাস্তবায়নের জন্য আগামী বছরের বর্ষা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে শহরবাসীকে। চলতি বর্ষার পরে ওই প্রকল্পের কাজ শুরু হবে বলে পুরসভা সূত্রের খবর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Rain Monsoon Kolkata Municipal Corporation
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE