নিহত প্রোমোটার চঞ্চল মণ্ডল।—নিজস্ব চিত্র।
জমি জটেই খুন হয়েছেন নিউটাউনের চঞ্চল মণ্ডল। সোমবার রাত থেকে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত তল্লাশিতে খুনের মাস্টারমাইন্ড অজিতেশ হালদার-সহ আট জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
জেরায় অজিতেশ তদন্তকারীদের জানিয়েছে, জমি বেচার নাম করে বহু লাখ টাকা প্রতারণা করেছে চঞ্চল। আগে অজিতেশ জমির দালালি বা জমি কেনাবেচার ব্যবসা করতেনচঞ্চলের সঙ্গেই। পাথরঘাটা সংলগ্ন একটি জমি বিক্রি করার সময়চঞ্চল অনেক কম দামে বিক্রেতাকে জমি পাইয়ে দেন। পরে অজিতেশ জানতে পারে, তার বিনিময়ে চঞ্চল বেশ কয়েক লাখ টাকা মুনাফা করেছিলেন। প্রতারিত হয়েছিল অজিতেশ!
তদন্তকারীদের কাছে অজিতেশ অভিযোগ করেছে, চঞ্চলকে প্রতারণার কথা বলায় তিনি উল্টে হুমকি দেন। সেই ঘটনা নিয়ে তাঁর সঙ্গে বিস্তর ঝামেলাও হয়েছিল অজিতেশের। সেই পুরনো ক্ষোভ থেকেই চঞ্চলকে খুনের ছক করে সে। ওই জমির ‘ডিল’-এ অজিতেশ ছাড়াও যাঁরা প্রতারিত হয়েছিলেন সেই সুভাষ এবং বিকাশ মণ্ডলও জানতেন চঞ্চলকে খুনের ছকের কথা।
আরও পড়ুন: শহর জুড়ে একের পর এক অগ্নিকাণ্ড, আগুন চিত্তরঞ্জন হাসপাতালেও
আজকের তারিখে গুরুত্বপূর্ণ কী কী ঘটেছিল অতীতে, তারই কয়েক ঝলক দেখতে ক্লিক করুন— ফিরে দেখা এই দিন।
পুলিশ সূত্রে খবর, জেরায় অজিতেশ জানিয়েছে, আটমাস আগে থেকে শুরু হয় খুনের ছক। প্রথমে তিনি যোগাযোগ করেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার ঘটকপুকুরের এক জমি জরিপকারী নীলমাধব সাহার সঙ্গে। তিনিই ওই এলাকার দুষ্কৃতী মহম্মদ রফিক মোল্লা ওরফে মহম্মদ ভাইয়ের সঙ্গে অজিতেশের আলাপ করিয়ে দেন। মহম্মদ ভাইয়ের ঘটকপুকুরে জুতোর ব্যবসা। তবে তার সঙ্গে দুষ্ক়ৃতীদের ভাল যোগাযোগ আছে বলেই পুলিশ জানিয়েছে। সেই সূত্রেই মহম্মদ খুনের বরাত নেয়। ভাড়া করা হয় জীবনতলার কুখ্যাত সুপারি কিলার মোহর লস্করকে। মোহর আবার পূর্ব মেদিনীপুরের ভগবানপুরের দুই দুষ্ক়ৃতী শেখ রফিক এবং শেখ আনোয়ারকে গোটা অপারেশনে নেয়। এই আটজনকেই পুলিশ গ্রেফতার করেছে। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, পূর্ব মেদিনীপুরের এই দুই দুষ্কৃতী কুখ্যাত অপরাধী কর্ণ বেরার সাগরেদ। কিছু দিন আগেই এই কর্ণ বেরা কাঁথি আদালত থেকে পালানোর চেষ্টা করেছিল। সে সময় এই দু’জনই তাকে সাহায্য করেছিল বলে জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা। মঙ্গলবার রাতেই কাঁথি থানার পুলিশ পৌছঁছে নিউটাউন থানায়, তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে।
দু’লাখ টাকার সুপারি দেওয়া হয় খুনের জন্য। ওই পেশাদার খুনিদের পাথরঘাটা এলাকাতে ঘর ভাড়া করে রাখার ব্যবস্থা করে অজিতেশ। খুনের প্রায় এক সপ্তাহ আগে থেকে সেই ভাড়া বাড়িতেই থাকছিল ওই তিন সুপারি কিলার— মোহর লস্কর, শেখ আনোয়ার এবং শেখ রফিক। সেখানে থেকে তারা চঞ্চলের গতিবিধির উপর নজর রাখে।এলাকার রাস্তাঘাট চেনে। তারপর রবিবার খুব পরিকল্পনা মাফিক অপারেশন চালায়।
আরও পড়ুন: শেল নিষ্ক্রিয় করতে গিয়ে সেনা অস্ত্রভাণ্ডারে বিস্ফোরণ, মহারাষ্ট্রে মৃত ৬
তদন্তকারী এক আধিকারিক বলেন,“অজিতেশ যা বলছে, তা আমরা খতিয়ে দেখছি। তবে সে-ইযে খুনের ছক করেছিল, তা আমাদের কাছে স্বীকার করেছে। আমরা খতিয়ে দেখছি, আরও কেউ এই গোটা পরিকল্পনায় যুক্ত আছে কি না।” পুলিশ ধৃতদের কাছ থেকে তিনটি আগ্নেয়াস্ত্র এবং পাঁচ রাউন্ড বুলেটও উদ্ধার করেছে।
(কলকাতা শহরের রোজকার ঘটনার বাছাই করা বাংলা খবর পড়তে চোখ রাখুন আমাদের কলকাতা বিভাগে।)
Tags
Crime, Murder, Newtown
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy