স্বামী ডেকেছেন। তিক্ততা ভুলে ফের ঘরে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে চান। সেই ডাক উপেক্ষা করতে পারেননি স্ত্রী। রাতে সুনসান রাস্তায় স্বামীর সঙ্গে একাই দেখা করতে বেরিয়েছিলেন বছর তিরিশের তরুণী।
তার পর থেকে গত সাত দিন ধরে হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন ব্যারাকপুর বড় কাঠালিয়ার সাহানারা খাতুন। অভিযোগ, স্বামী মুজফ্ফর
গাজি বিষের বোতল ঠেসে দিয়েছিলেন তাঁর মুখে। থানায় অভিযোগ করতে গেলে পুলিশ তাদের ইচ্ছেমতো অভিযোগ লিখিয়ে নিয়েছে বলেও অভিযোগ সাহানারার পরিবারের। মুজফ্ফর পলাতক বলে জানিয়েছে পুলিশ।
তবে ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসি (জোন ১) কে কান্নন জানান, তিনি বিষয়টির খোঁজ নেবেন। ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত হবে। দুই হাসপাতাল ঘুরে বর্তমানে সাহানারা ব্যারাকপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। সাহানারার দাদা শেখ মধু জানান, বছর দুই আগে খড়দহের ইস্তরিপুরের মুজফ্ফরের সঙ্গে বিয়ে হয় তাঁর বোনের। মুজফ্ফর পেশায় মার্বেল মিস্ত্রি। অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই সাহানারার উপরে অত্যাচার শুরু হয় শ্বশুরবাড়িতে। স্বামীর পাশাপাশি শাশুড়িও তাঁর উপরে অত্যাচার চালাতেন বলে অভিযোগ। সঙ্গে ছিল নিয়মিত টাকার দাবি। না মানলেই শ্বশুরবাড়ি থেকে বার করে দেওয়া হত তাঁকে।
শেখ মধুর অভিযোগ, বছরখানেক আগে সাহানারাকে তাড়িয়ে দেন মুজফ্ফর। পরে শ্বশুবাড়িতে ফেরানোর জন্য সাহানারার বাবার কাছ থেকে দু’কাঠা জমি তিনি লিখিয়ে নিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। মাস ছয়েক আগে ফের অত্যাচারের কারণে বাড়ি ফিরে আসেন সাহানারা। মাসখানেক আগে মুজফ্ফর জানান, বাড়ি মেরামতির জন্য দু’লক্ষ টাকা দরকার। এক লক্ষ টাকা জোগাড় করে দেওয়াও হয় বলে জানান
সাহানারার পরিজনেরা।
সাহানারার পরিবার জানাচ্ছে, প্রায়ই ফোন করে স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতেন মুজফ্ফর। জানিয়েছিলেন, তিনি সাহানারাকে ফিরিয়ে নিয়ে যাবেন। গত ২৩ নভেম্বর রাতে সাহানারাকে কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়েতে দেখা করতে বলেন মুজফ্ফর। অভিযোগ, তখনই তাঁর মুখে বিষের বোতল ঠেসে ধরেন তিনি। বাঁচার জন্য চিৎকার করতেই বিষ সাহানারার পেটে চলে গেলে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। সেই থেকে এক হাসপাতালে ভর্তি ওই তরুণী।
শেখ মধুর অভিযোগ, টিটাগড় থানায় তাঁরা অভিযোগ করেছিলেন। কিন্তু অভিযোগপত্র থেকে সাহানার শাশুড়ির নাম বাদ দিয়ে দেন তদন্তকারী অফিসার। হাসপাতালে গিয়ে সাহানারার জবানবন্দি নিয়ে এসেছে পুলিশ। কিন্তু ঘটনার পরে এক সপ্তাহ কেটে গেলেও মজফ্ফর অধরাই। এ দিকে, মুজফ্ফরের বাড়ি গিয়ে দেখা গেল বাইরে থেকে তালা ঝুলছে। কেউ নেই সেখানে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy